২৯শে মার্চ ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১০:২২ পূর্বাহ্ণ, জুন ১৩, ২০১৯
মীরা মেহেরুন
অধরার যখন বিয়ে হয় সে সময়টা ওর বাদাম- আইসক্রীম খাওয়ার বয়স। তখন ওরা খুলনাতে, সরকারি কোয়ার্টারে থাকে। নিজের নামে বাসা(ডি-টাইপ)বরাদ্দ নিলে হাউজরেন্ট বেশি কাটে বলে একজন চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীর নামে (জি-টাইপ) বাসা নিয়ে সেখানে অবস্থান করে নজীর সাহেবের তিনভাইবোন সঙ্গে নিয়ে। বাসার সামনের রাস্তা দিয়ে প্রতি বিকেলে বাদামঅলা হাঁক দেয়। ক্লান্ত বিকেলে বাদামঅলার “অই বাদাম! বাদাম !শুনলে মন কেমন চনমনিয়ে উঠতো। নজীর সাহেব অফিস শেষে ঘরে ফিরেছে,সেদিন বিকেলে বাদমঅলা হাঁক দিতে অধরা অনুরোধ করে বাদাম কেনার জন্যে। দু’টাকার নজীর সাহেব যথারীতি পকেট থেকে দু’টাকা বের করে দেখিয়ে বলে, “পকেটে মাত্র দু’টাকা আছে।” ঠিক আছে ওই দু’টাকারই বাদাম কিনে দাও বলেই অধরা বাদামঅলাকে ডাক দেয়। বাদামঅলা দোতলায় এসে দরজায় নক করে। নজীর সাহেব ভেতরের ঘরে ঝড় তুলে ফেলেছে,এই না না , বলতে বলতে দরজায় ছুটে এসে বাদামঅলাকে বিদায় করে দেয়। অধরার হাসিও পেয়েছে, ভেতরে ভেতরে কষ্টে কুকড়ে গেছে আর সেটা বাদাম না কেনার জন্যে নয়, নজীর সাহেবের মনস্তাত্বিক সংকট দেখে। হয়তো লোকটি ভেবেছিলো একদিন কিনলে মাঝে- মধ্যে কিনতে হতে পারে। বাদামের খরচের ভার বইতে গিয়ে হয়তো তার বড় ধরণের আর্থিক বিপর্যয় ঘটে যেতে পারে! অধরার কাছে এসব আচরণ অমীমাংসিত রয়ে গেছে।
শারিরীক নানাবিধ জটিলতার কারণে ওর খাদ্যতালিকা থেকে বাদামসহ অনেক খাবার বাদ পড়ে গেছে। পাহাড়সমান বঞ্চনার সঙ্গে সঙ্গে একটা দানা চিনাবাদাম মুখে দেয়ার সুখ- সেটাও তার বঞ্চনার তালিকা দীর্ঘ করেছে ! অধরার পাশ কেটে এখন কোনো বাদামঅলা হাঁক দিলে দূর থেকে ভেসে আসা এক পরিচিত শব্দ ” অই বাদাম!বাদাম!” অনুরণিত হতে থাকে মস্তিস্কের ভাজে ভাজে! আকাশের দিকে তাকিয়ে ভাবে সেই পুরোনো আকাশ ,সেই বাতাস অথচ সময়গুলো প্রকাশিত হতে থাকে তার চুলের রঙ্গে, অথবা শরীরের চামড়ায়। ভাবে, কী হয়, এতো হিসাবে! শেষ পর্যন্ত তো কিছুই থাকে না নিজের বলে!
RED TIMES LIMITED
116-117, Concord Emporium,
Kataban, Dhaka-1205.
Mobile: 017111-66826
Email: redtimesnews@gmail.com