২৯শে মার্চ ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ২:৫০ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১, ২০১৯
বিকল্প কর্মসংস্থান ছাড়া ব্যাটারিচালিত রিক্সা উচ্ছেদ বন্ধ, প্রয়োজনীয় নীতিমালার ভিত্তিতে নগরিতে ব্যাটারিচালিত রিক্সা চলাচল এবং প্রশাসন কর্তৃক জব্দকৃত প্রায় ২ কোটি টাকা অর্থমূল্যের ব্যাটারি ও মটর রিক্সা শ্রমিকদের ফিরিয়ে দেয়ার দাবিতে আগামিকাল ২ অক্টোবর বুধবার সকাল ১০ টা থেকে আমরণ অনশনে যাচ্ছেন গরীনের ডাক্তারখ্যাত বাসদের সদস্যসচিব রিক্সাশ্রমিক ইউনিয়নের উপদেষ্টা ডা. মনীষা চক্রবর্ত্তীসহ শ্রমিক এবং পরিবারের সদস্যরা।
এক যুক্ত বিবৃতিতে বাসদের জেলা আহ্বায়ক ইমরান হাবিব রুমন, সদস্য সচিব ডা. মনীষা চক্রবর্ত্তী, বরিশাল মহানগর রিক্সা ভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি দুলাল মল্লিক, সাধারণ সম্পাদক বদরুদ্দোজা সৈকত, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের রুস্তম হাওলাদার, সাংগঠনিক সম্পাদক শহীদুল ইসলাম, ব্যাটারি চালিত রিক্সা মালিক-শ্রমিক সংগ্রাম কমিটির সভাপতি শাহজাহান মিস্ত্রি এক যুক্ত বিবৃতিতে আমরণ অনশন কর্মসূচি সফল করার জন্য বরিশালের সর্বস্তরের মানুষের সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন।
নেতৃবৃন্দ বলেন, গত ১৯ শে আগস্ট থেকে কোন ধরনের পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই বরিশাল শহরে দফায় দফায় ব্যাটারীচালিত রিক্সা উচ্ছেদের নামে নির্মম প্রশাসনিক অভিযান চলছে। প্রায় দুই মাসব্যাপী এই অভিযানে এ পর্যন্ত প্রায় পাঁচ শতাধিক ব্যাটারীচালিত রিক্সা আটক করা হয়েছে এবং প্রায় প্রতিটি গাড়ির ব্যাটারী-মটর খুলে রাখা হয়েছে, যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ২ কোটি টাকা। এই বিপুল অর্থনৈতিক ক্ষতির পাশাপাশি দরিদ্র রিক্সাচালকরা শিকার হয়েছে নানাবিধ আর্থিক হয়রানি ও নির্যাতনের। গত ৮ বছর ধরে বরিশালে প্রয়োজনীয় নীতিমালা প্রণয়ন করে ব্যাটারীচালিত রিক্সা চলাচলের অনুমতি আদায়ের জন্য আমরা ধারাবাহিকভাবে আন্দোলন-সংগ্রাম করে আসছি। আন্দোলনের একপর্যায়ে সিটি কর্পোরেশন ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কিছু নিয়ম মেনে এই ব্যাটারী চালিত রিক্সা চলাচলের মৌখিক প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়। এই প্রতিশ্রুতির প্রেক্ষিতে গত ১ বছর ধরে যানজটপূর্ণ রাস্তা ছাড়া বাকি রাস্তাগুলিতে ব্যাটারিচালিত রিক্সা চালিয়ে আমরা জীবিকা নির্বাহ করে আসছিলাম। কিন্তু গত ১৯ আগস্ট থেকে পরিচালিত মাসব্যাপী এই অভিযান আমাদেরকে পথে বসিয়ে দিয়েছে, আমাদের সর্বস্বান্ত করেছে। তিনবেলা খাবার তো জুটছেই না, এনজিওর ঋণ শোধের বিষয়টা তো বলাই বাহুল্য।
নেতৃবৃন্দ বলেন, সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ক্ষমতায় আসীন হওয়ার পরপরই আমরা তার সাথে দেখা করেছি, আবেদন করেছি আমাদের জীবিকা রক্ষার। তিনি শতাধিক রিক্সা শ্রমিকদের সামনে বলেছেন, তার শহরে গরীব মরবে না, রিক্সা চলবে। অথচ আমরা শুনতে পেয়েছি বর্তমানে প্রশাসন ও সিটি কর্পোরেশনের যৌথ সিদ্ধান্তে এই নির্মম অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। আমরা বারবার মেয়র মহোদয়ের সাক্ষাৎপ্রার্থী হলেও, এই দুইমাস যাবৎ দুভার্গ্যবশত তার সাক্ষাৎ পাইনি। পুলিশ কমিশনার, ডিসি ট্রাফিকের সাথে সাক্ষাৎ করেও আমাদের যুক্তিগুলো তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। আমরা সংহতি সমাবেশ থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত প্রশাসনকে সময় দিয়েছিলাম রিক্সা শ্রমিকদের এই সংকট সমাধানের জন্য কার্যকর ব্যবস্থা নিতে। কিন্তু সমাধান তো দুরে থাক বিষয়টি নিয়ে বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আমাদের সাথে দেখা পর্যন্ত করেননি। বারবার তার কার্যালয়ে গেলেও ব্যর্থ হয়েই আমাদের ফিরে আসতে হয়েছে। গত দুমাস যাবৎ রিক্সাশ্রমিকদের জীবিকা বন্ধ, নির্যাতন-নিপীড়ন এর পরও আমরা সবসময়ই নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন করে আসছি। আমরা মানববন্ধন-সমাবেশ, স্মারকলিপি পেশ, শ্রমিকদের সন্তানদের মানববন্ধন, বরিশালবাসীর গণস্বাক্ষর সংগ্রহ, নাগরিক সমাবেশ, প্রচারপত্র বিলি করে আসছি। বারবার প্রশাসনের সাথে দেখা করে আমাদের যুক্তিগুলো তুলে ধরার চেষ্টা করেছি যে, যেহেতু সারাদেশে এই ব্যাটারীচালিত রিক্সা চলছে তাই শহরের ব্যস্ততম রাস্তা বাদ দিয়ে এই রিক্সা চললে কোন সমস্যা হবে না এবং বিকল্প কর্মসংস্থান ছাড়া এধরনের উচ্ছেদ অভিযান বরিশালের স্থিতিশীলতার জন্যও ভাল ফল বয়ে আনবে না। আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই দুই মাস যাবৎ শান্তিপূর্ণ আন্দোলন পরিচালনার পরও আমাদের দাবি আদায়ে কোন উদ্যোগ না নেয়া এমনকি দেখা পর্যন্ত না কায় আমরা জীবনের ঝুঁকিপূর্ণ এধরনের কর্মসূচি নিতে বাধ্য হয়েছি এবং যে কোন ধরনের ঘটনার জন্য সিটি কর্পোরেশন এবং প্রশাসন দায়ি থাকবে।
নেতৃবৃন্দ ডা. মনীষা চক্রবর্ত্তী নেতৃত্বে শ্রমিকদের আমরণ অনশনে বরিশাবাসী এবং দেশবাসীর সমর্থন সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন এবং প্রশাসনকে অবিলম্বে গরীব রিক্সা শ্রমিকদের দাবি মেনে নিয়ে এই পরিবারগুলোকে পথে বসার হাত থেকে রক্ষা করার আহ্বান জানান।
RED TIMES LIMITED
116-117, Concord Emporium,
Kataban, Dhaka-1205.
Mobile: 017111-66826
Email: redtimesnews@gmail.com