২৯শে মার্চ ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১১:০২ পূর্বাহ্ণ, মে ২, ২০১৮
প্রায় ২ লাখ টাকায় নতুন ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) কেনার পরিকল্পনা করেছে নির্বাচন কমিশন । ২০১০ সালে প্রথম ব্যবহৃত যন্ত্রের দামের প্রায় চার গুণ পড়ছে এটা ।পুরনো ইভিএম বাদ দিয়ে গত ডিসেম্বরে রংপুরে পরীক্ষামূলকভাবে নতুন ইভিএম সফল বলে মনে করছেন তারা । ইভিএমের ব্যবহার ধরে রাখতে আরও আড়াই হাজার মেশিন কেনার প্রস্তুতি চলছে সফলতার বিবেচনায় ।
গত সোমবার নির্বাচন কমিশন সচিবের সভাপতিত্বে কারিগরি কমিটির সভায় ইভিএম নিয়ে পর্যালোচনা হয় বলে ইসি কর্মকর্তারা জানান।
নির্বাচন কমিশনের বিশেষজ্ঞ কারিগরি কমিটির সদস্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক মো. হায়দার আলী জানান, বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরির (বিএমটিএফ) মাধ্যমেই বিদেশ থেকে আমদানি করা যন্ত্রাংশ নিয়ে উন্নত প্রযুক্তির ইভিএম তৈরি হচ্ছে।
তিনি মনে করেন, দেশে এটা তৈরি শুরু হয়ে গেলে কমিশন যদি মনে করে সারাবিশ্বে প্রযুক্তিটি রপ্তানিও করা যেতে পারে ।
দামের বিষয়ে তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক বাজার বিবেচনা করলেও প্রতিটি ইভিএমের দাম ৩ হাজার ডলার পড়ত। আমরা পর্যবেক্ষণ করে দেখেছি, তার চেয়ে কম দামে প্রায় ২৪০০ মার্কিন ডলার ব্যয় হচ্ছে।
সে হিসাবে গড়ে প্রতিটি ইভিএমের দাম ১ লাখ ৯২ হাজার টাকা থেকে ২ লাখ টাকার মতো পড়ছে বলে জানান এই অধ্যাপক।
স্বল্প পরিসরে ব্যবহারের পর আরও বড় পরিসরে গেলে যন্ত্রের সংখ্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আগামীতে প্রতিটি ইভিএমের দাম অর্ধেকে নেমে আসতে পারে বলে ধারণা দেন অধ্যাপক হায়দার।
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনে একটি ওয়ার্ডে ব্যবহারের মধ্য দিয়ে দেশে ইভিএমের যাত্রা শুরু হয় ২০১০ সালে। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) এবং মেশিন টুলস ফ্যাক্টরির সহায়তায় এ প্রযুক্তি চালু হয়। এরপর নারায়ণগঞ্জ ও কুমিল্লা সিটি করপোরেশন ও নরসিংদী পৌরসভায় পুরো ভোট হয় ইভিএমে।
তবে বুয়েট ও ইসির দ্বন্দ্বে পাঁচ বছর পর তার ইতি ঘটে।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ বরাবরই ইভিএমে ভোট চাইলেও বিএনপি তাতে আপত্তি জানিয়ে আসছে।
নির্বাচন কমিশনের হাতে এক হাজার ২০০টির বেশি পুরনো ইভিএম রয়েছে। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সহায়তায় প্রথমে ১৩০টি, দ্বিতীয় পর্যায়ে আরও ৪০০টি এবং সর্বশেষ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরির সহযোগিতায় আরও ৭০০ ইভিএম পায় তারা ।
ওই সময় প্রতিটি ইভিএমে ৪৫ হাজার টাকা থেকে ৫০ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছিল বলে জানান কর্মকর্তারা।
গত বছর থেকে বিএমটিএফকে নিয়ে নতুন ইভিএমের যাত্রা শুরু হয়। রংপুর সিটি নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের পর গাজীপুর ও খুলনা সিটিতে কয়েকটি কেন্দ্রে ব্যবহারের কথা হচ্ছে। এখনও কেন্দ্র চূড়ান্ত করেনি ইসি।
১৬ এপ্রিল ইসির জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের সিস্টেম ম্যানেজার মো. রফিকুল হক সর্বশেষ ‘আপগ্রেডেড ইভিএম’ সংগ্রহে দর প্রস্তাব পাঠাতে বিএমটিএফ ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে চিঠি দেন।
তাতে বলা হয়েছে, ২০১১ সালে বিএমটিএফ থেকে ইসি ৭০০ ইভিএম নিয়েছে। ২০১৭ সালের নভেম্বরে ইসির চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে মানোন্নয়ন করে ইভিএমগুলো সরবরাহ করা হয়। গত ২১ ডিসেম্বরে রংপুর সিটি নির্বাচনে এ ইভিএম পরীক্ষামূলকভাবে ব্যবহারের মাধ্যমে অত্যন্ত সফল হয়েছে।
গত ৩০ জানুয়ারি কমিশনের চাহিদা মতো আরও উন্নতমানের ইভিএম সরবরাহ করে বিএমটিএফ, যা পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন নির্বাচনে ব্যবহারের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
নির্বাচন, ভোটার এডুকেশন ও প্রশিক্ষণ কাজে ব্যবহারের জন্য সর্বশেষ আপগ্রেডেড ৫৩৫ সেট ইভিএম প্রাথমিকভাবে সরবরাহের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে চিঠি দেন এনআইডি উইংয়ের সিস্টেম ম্যানেজার।
ইসি সচিবের সভাপতিত্বে এ দরপত্র/প্রস্তাব মল্যায়ন কমিটির সদস্য হলেন ইসি সচিবালয়ের অতিরিক্ত সচিব, এনআইডি উইং মহাপরিচালক, ইসির একজন যুগ্মসচিব, ঢাবির কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রতিনিধি ও বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের প্রতিনিধি। এনআইডি উইংয়ের সিস্টেম ম্যানেজার হলেন কমিটির সদস্য সচিব।
RED TIMES LIMITED
116-117, Concord Emporium,
Kataban, Dhaka-1205.
Mobile: 017111-66826
Email: redtimesnews@gmail.com