২৯শে মার্চ ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৪:২৩ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১১, ২০২০
মোঃমোজাফ্ফার হোসেন
পৌষমাস হিমেল হাওয়া।মেরুন ও সবুজ রঙের বাতি জ্বলে।সদ্য টাটকা ফুল দিয়ে সাজানো হয়েছে স্টেজ।কোট টাই পাঞ্জাবী পায়জামা পরা লোক আসছে হাতে বিভিন্ন প্রকার গিফট সামগ্রী ,কেউবা নগদ টাকা দিচ্ছে।বিভিন্ন অডিওর মধ্যে সানাই এর সুর বাজচ্ছে।
গেটে সাহেব বিবিদের সাথে যারা হতদরিদ্র বাসায় থালা বাসন মাজে,বাচ্চা কোলে নিয়ে যাদের আহার জুটে তারা ও আসছে।আনন্দ করতে না আনন্দ দিতে।বাচ্চা ব্যাগ দুধের বোতল তাদের হাতে।
বিভিন্ন বয়সের ছেলে মেয়ে বা পারিবারিক ভাবে উঠতি দম্পতি বা মধ্য বয়সী দম্পতির আনন্দকে সর্বোচ্চ রুপে নেওয়ার জন্য সেলফি আর ফটোসেশন চলছে।গরম কফি আর পিঠার আয়োজনও আছে, যেখান থেকে সবাই নিয়ে খাচ্ছে আর গল্প করছে । জাতীয় আন্তর্জাতিক ,কার গয়না কেমন,শাড়ি কত দামের নানা বিষয় নিয়ে।পিঠা খাচ্ছে ,কফি খাচ্ছে , মূল অনুষ্ঠান তথা দুলহা না আসা পর্যন্ত।গেটে হঠাৎ লোকের ভীড়।বাজি ফুটাচ্ছে।ফুলের পাপড়ী ছিটাচ্ছে।কিছুক্ষ্ণন চিৎকার চেঁচামেচির পর দুলহা গেট দিয়ে ঢুকছে।ঐ সারিতে কন্যাপক্ষের রিসেপশনের লম্বা লাইন।
কন্যাপক্ষের লোকজন বরপক্ষকে ঢোকার সময় প্রত্যেককে মগ,বক্স,চকলেট,চুড়ি দিচ্ছে।এ সময় অগত্যা অস্বাভাবিক একটা ঘটনা।
ঐ কিশোর মেয়েটি যে বাসার সব কাজ শেষে গভীর রাত্রে ঘুমায় এবং ভোর রাত্রে উঠে নাস্তা তৈরি করে। অল্পবয়সী ভাতের জন্য যে বাসায় গৃহকর্মী কাজ করে,যার নুন আনতে পান্তা হলে,তরকারীতে লবন কম হলে,বাটি মাজা ভালো পরিষ্কার না হলে বেগম সাহেব চড়া মূল্য দেয় । সে ও রিসিপশনের ঐ লাইনে দাঁড়াতে চেয়েছিল !
হত দরিদ্র , অন্য গ্রহ থেকে আগত , আজকের সমাজের দাস , তা্য় এই তথাকথিত সমাজপতিরা্ তাকে বের করে দিল।সে কোমল মতি মন নিয়ে অশ্রুসিক্ত চোখে চলে আসলো। ওদের ওই লাইনে দাঁড়ানো বেমানান।
খাবার টেবিলে সবায় খাচ্ছে একটা পর একটা রোস্ট,শামী কাবাব,ভেজিটেবল,বিরিয়ানী শেষে সেভেন আপ,বোরহানী। আর শিশুটি বাচ্চা কোলে নিয়ে ঘুরচ্ছে। ধাঙ্গর নামক এই সমাজের কর্ণধার চক্ষুলজ্জার লেশমাত্র নেই।ঐ মাসুম বাচ্চার প্রতি নির্দয় ব্যবহার করছে।বাচ্চা কোলে দিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা খাচ্ছে,গল্প করছে।
তাদের বিবেক বুদ্ধি ,লজ্জা শরম,মানবিকতা,মুল্যবোধ কোথায় চলে গেল যাদের আজ থাকার কথা ছিল মায়ের আঁচলের তলে , সে আজ দাসী হয়ে ঘুরচ্ছে।চুন আনতে পান খসলে গরম খুন্তি ছেঁকা অথবা গরম পানি গায়ে ফেলানো অথবা বাথ্রুমে আটকায় রাখা , ভদ্র সমাজের রেওয়াজ।
বর্তমান্ বিশ্বে অর্থনীতির নাকাল অবস্থা , জীবন যাত্রার মান নেমে গেছে ক্ষুধা, বেকার্ , দারিদ্র বেড়েই চলেছে সারা বিশ্বে , কবেই হবে এর অবসান ।
মা-বাবা, ভাই-বোন ফেলে আসছে তোমাদের ভুবনে জীবন জীবিকার জন্য।
কেন করো অবিচার,
কবে হবে এর অবসান ,
এরা সমাজের অংশীদার
দিতে হবে বাঁচার অধিকার ।
RED TIMES LIMITED
116-117, Concord Emporium,
Kataban, Dhaka-1205.
Mobile: 017111-66826
Email: redtimesnews@gmail.com