২৯শে মার্চ ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ২:৪৭ অপরাহ্ণ, মে ১৬, ২০২০
ঘূর্ণিঝড় ‘আমপান’আসছে । দক্ষিণ পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণ আন্দামান সাগরে অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি সামান্য পশ্চিম-উত্তর পশ্চিমে সরে গিয়ে আরও ঘণীভূত হচ্ছে।
শনিবার রাতে সেটি ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নিতে পারে জানিয়ে সমুদ্রবন্দরগুলোকে ১ নম্বর দূরবর্তী সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হলে তখন এর নাম হবে ‘আমপান’। বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার সাইক্লোন সংক্রান্ত আঞ্চলিক সংস্থা এসকাপে থাইল্যান্ড এ নামের প্রস্তাব করেছিল।
জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ আবদুর রহমান জানান, শনিবার বেলা ১২টায় গভীর নিম্নচাপটি চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১৩৪৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে; কক্সবাজার থেকে ১২৭০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে, মোংলা থেকে ১৩০৫ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং পায়রা থেকে ১২৭০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল।
তখন এর কেন্দ্রের ৪৮ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়ছিল।
নিম্নচাপ কেন্দ্রের কাছে সাগর উত্তাল থাকায় দেশের সমুদ্রবন্দরগুলোকে ১ নম্বর দূরবর্তী সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া অফিস।
উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে গভীর সাগরে বিচরণ না করতে বলা হয়েছে।
নিম্নচাপটি আরও ঘনীভূত হয়ে উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হচ্ছে জানিয়ে আবদুর রহমান বলেন, “আজ রাতে এটি ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নিতে পারে। এখন এটা ঘণ্টায় ১০ থেকে ২০ কিলোমিটার করে এগোচ্ছে। বাংলাদেশ উপকূল এখনও অনেক দূরে। ১৯ বা ২০ মে ঘূর্ণিঝড়টি বাংলাদেশ উপকূলের কাছাকাছি আসতে পারে।”
ভারতের আবহাওয়া অফিস বলছে, বাংলাদেশ সময় শনিবার সন্ধ্যার দিকে গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে এবং রোববার সকাল নাগাদ সেটি প্রবল ঘূর্ণিঝড় (সিভিয়ার সাইক্লোনিক স্টর্ম) এবং ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে (ভেরি সিভিয়ার সাইক্লোনিক স্টর্ম) পরিণত হতে পারে। তখন বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ হতে পারে ঘণ্টায় ১৪৫ কিলোমিটার।
পরে শক্তি আরও বাড়িয়ে তা প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড়ের রূপ পেতে পারে মঙ্গলবার সন্ধ্যা নাগাদ। তখন বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ হতে পারে ঘণ্টায় ২০০ কিলোমিটার বা তার বেশি।
ভারতের আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস বলছে, ঘূর্ণিঝড়টি প্রাথমিকভাবে উত্তর-উত্তর পশ্চিম দিকে এগোনোর পর সোমবার সামান্য উত্তর-উত্তর পূর্ব দিকে মোড় নিতে পারে। ১৮ থেকে ২০ মের মধ্যে সেটি পশ্চিমবঙ্গ উপকূলে পৌঁছাতে পারে।
বাংলাদেশের আবহাওয়া অফিস এখন প্রতি ছয় ঘণ্টা অন্তর বিশেষ বুলেটিনে সর্বশেষ অবস্থা জানাচ্ছে। পরিস্থিতি পযবেক্ষণ করে সময় সময় সতর্কতার মাত্রা বাড়ানো হবে বলে জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ আবদুর রহমান জানান।
এদিকে খুলনা বিভাগসহ মাইজদী কোট অঞ্চলের ওপর দিয়ে এখনও মৃদু তাপ প্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। তবে দেশের অনেক জায়গায় বৃষ্টি হচ্ছে এবং আগামী এক দিনের মধ্যে কিছু এলাকায় তাপপ্রবাহ প্রশমিত হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
শুক্রবার রংপুরে দেশের সর্বোচ্চ ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। রাজধানীতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৪ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
শনিবারের আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কিছু জায়গায় এবং যশোর, কুষ্টিয়া ও কুমিল্লা অঞ্চলসহ ঢাকা ও রাজশাহী বিভাগের দুয়েক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া এবং বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র আকাশ আংশিক মেঘলা এবং আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় প্রস্তুতি
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর মহাপরিচালক মো. মোহসীন বলেন, “করোনাভাইরাসের দুর্যোগের মধ্যেই আমরা ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলার প্রস্তুতি নিচ্ছি। আবহাওয়া অধিদপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে আমাদের।”
তিনি বলেন, “আজও মন্ত্রণালয়ে বৈঠক হবে; কালকে ঝড়ের অবস্থা বোঝা যাবে। কিন্তু আমাদের প্রস্তুতি থাকবে। লোকজনকে সরাতে হলে তখন করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধের বিষয়েও সজাগ রয়েছি আমরা। উপকূল সম্পৃক্ত ১৯ জেলায় যথাসময়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে; আশ্রয়কেন্দ্রের সংখ্যাও বাড়াতে হবে।”
RED TIMES LIMITED
116-117, Concord Emporium,
Kataban, Dhaka-1205.
Mobile: 017111-66826
Email: redtimesnews@gmail.com