২৯শে মার্চ ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১০:২১ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ৩, ২০১৯
ওয়ার্কার্স পার্টির মতে, দেশে ধনবৈষম্য মাত্রা ছাড়িয়েছে । বিগত ১০ বছরে কাঠামোগতভাবে বাংলাদেশের অর্থনীতির দৃশ্যমান উন্নতি হয়েছে। মাথাপিছু গড় আয় বেড়ে ১৭৫২ ডলার হয়েছে, দেশ অর্থনীতিতে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হয়েছে। এ যাবৎকাল জি ডি পি প্রবৃদ্ধির হার ৭% এর উপরে থেকেছে। এবার তা ৮.২৫% পৌঁছাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আন্তর্জাতিক অর্থনীতির মন্দা বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনীতিতে খুব প্রভাব ফেলতে পারেনি। মুদ্রাস্ফীতিও ৫.৫% এর কাছাকাছি। দারিদ্র কমে দাঁড়িয়েছে ২২ শতাংশে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এখন ৩৩ বিলিয়ন ডলার। এ সময়কালে এম ডি জি অর্জিত হয়েছে, এস ডি জি রও দৃশ্যমান অগ্রগতি হয়েছে। দৃশ্যত:ই এসবই উন্নয়নের চালচিত্র।
কিন্তু, কংগ্রেস মনে করে, সামষ্টিক অর্থনীতির এই ইতিবাচক চিত্রের পাশাপাশি ব্যষ্টিক অর্থনীতির নেতিবাচক দিকগুলি স্পষ্টভাবে দৃশ্যমান হচ্ছে। অর্থনীতির এই উন্নয়ন শ্রমিক-কৃষক সহ শ্রমজীবি ও নিম্ন আয়ের মানুষের কাছে যেতে পারেনি। ঘুষ-দুর্নীতি-দলীয় সংকীর্ণতা, আমলাতান্ত্রিক দুর্নীতির সর্বব্যাপী আগ্রাসী প্রসার জনজীবনে গভীরভাবে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। ধনীগরীবের বৈষম্য বেড়েছে লাগামহীনভাবে। বাংলাদেশে ধনকুবেরের সংখ্যা গত ৫ বছরে বেড়েছে ১৭ শতাংশ। বৈষম্য পরিমাপে ব্যবহৃত গিনি সূচক ২০১০ সালে ছিল ০.৩২, এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ০.৪৮ যা বিপদজনক পর্যায়ে উপনীত হয়েছে। গ্রামীন অর্থনীতির সঙ্গে শহর কেন্দ্রিক অর্থনীতির বৈষম্য বেড়েছে। গ্রামীন কর্মসংস্থান কমছে, ফলে মানুষ শহরমুখী হতে বাধ্য হচ্ছে। সামাজিক নিরাপত্তার জন্য গৃহীত প্রকল্পগুলি দুর্নীতি, দলীয় সংকীর্ণতায় সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছাচ্ছে না। বেকারত্ব, কাজের অনিশ্চয়তা, মাদকাসক্তি গোটা যুব-সমাজকে হতাশার গভীরে ঠেলে দিচ্ছে। দেশের কর্মক্ষম জনসংখ্যা যাদের বয়স ১৮ থেকে ৪০ এর মধ্যে এখন ৫ কোটি ৩০ লক্ষ ছাড়িয়ে গেছে, তাদেরকে কার্যকরভাবে সমাজের উন্নয়নের ধারায় নিয়ে আসার কার্যকর পরিকল্পনা ও পদক্ষেপ অনুপস্থিত। নিয়মিত কর্মসংস্থানের পরিমান মাত্র ১২.৩%, অনিয়মিত কর্মসংস্থান ৮৭.৭%। বেকারের সংখ্যা ১ কোটি ২০ লক্ষ প্রায়। এই পরিস্থিতি মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণা ও সাংবিধানে সামাজিক ন্যায় বিচার, মানবিক মর্যাদা ও সমতা বিধানের যে প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছিল তা এখন দুরের বস্তুতে পরিনত হয়েছে।
১০ম কংগ্রেস এই ধনবৈষম্য কমিয়ে আনার জন্য অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জোর দাবী জানাচ্ছে। কংগ্রেস বাংলাদেশ যেভাবে পরিচালিত হচ্ছে তা পরিহার করে সমতা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে জনকল্যাণমূলক নীতি গ্রহণ, বেকার যুবকেদের কর্মসংস্থান, গ্রাম-শহরের অর্থনৈতিক কমিয়ে আনার জন্য গ্রামীন কর্মসংস্থান বৃদ্ধি, বাজেটে জেলাভিত্তিক বরাদ্দ নিশ্চিত করে, কৃষকের ফসলের ন্যায্য মূল্য, ৬০ বছরের উর্ধে গ্রামীন ভূমিহীনদের পেনশন ও শ্রমজীবি মানুষের কর্মনিশ্চয়তা প্রদানের ও সামাজিক নিরাপত্তার জন্য গৃহীত প্রকল্পগুলি দুর্নীতি, দলীয় সংকীর্ণতার বাইরে নিয়ে তাকে সাধারণ মানুষের কাছে নিয়ে আসার জোর দাবী জানাচ্ছে।
ওয়ার্কার্স পার্টির কংগ্রেস অধিবেশনের দ্বিতীয় দিনে প্রথমেই সেশন পরিচালনার জন্য প্রেসিডিয়াম নির্বাচিত হয়। প্রেসিডিয়াম সদস্যবৃন্দ হলেন রাশেদ খান মেনন , কমরেড ফজলে হোসেন বাদশা , আনিসুর রহমান মল্লিক , হাজেরা সুলতানা , আমিনুল ইসলাম গোলাপ এবং হাজি বশিরুল আলম। অনুষ্ঠানসূচী অনুযায়ী রাজনৈতিক প্রস্তাব পেশ করেন কমরেড ফজলে হোসেন বাদশা। রাজনৈতিক প্রস্তাব প্রথম অংশে বিশ্ব পরিস্থিতি ও দেশীয় রাজনীতির পর্যালোচনা করা হয়। ১ম পর্বের এই দলিলের উপর জেলাগুলি আলোচনা করছেন। কংগ্রেসে ইতোমধ্যে জেলা প্রতিনিধিত্ব করছে ৫৮টি, প্রতিনিধির সংখ্যা ৫৭২, পর্যবেক্ষক সংখ্যা ৭৯ জন, মোট ৬৫১ জন প্রতিনিধি পর্যবেক্ষক উপস্থিত আছেন। সদস্যদের আর্থ-সামাজিক অবস্থান, সদস্য প্রাপ্তির বছর ইত্যাদি জানার জন্য ক্রেডেনশিয়াল কমিটি ঘোষণা করা হয়, কমিটির আহ্বায়ক কমরেড নজরুল ইসলাম হাক্কানী, সদস্য কমরেড নজরুল হক নীলু, কমরেড কিশোর রায়।
দুপুরের খাবারের বিরতি পর্যন্ত রাজনৈতিক প্রস্তাবের উপর আলোচনা করেছে ১৫ টি জেলা।
৪টি রাজনৈতিক প্রস্তাব গৃহীত হয়।
RED TIMES LIMITED
116-117, Concord Emporium,
Kataban, Dhaka-1205.
Mobile: 017111-66826
Email: redtimesnews@gmail.com