২৯শে মার্চ ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১:৪৩ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১৪, ২০১৯
নোয়াখালীর সুবর্ণচরে দলবেঁধে ধর্ষণের ঘটনার সঙ্গে নির্বাচনের কোনো সম্পর্ক থাকার ‘প্রমাণ মেলেনি’ । জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের তথ্যানুসন্ধান কমিটি এই প্রতিবেদন দিয়েছে ।
তবে ধর্ষণের অভিযোগের ‘প্রাথমিক সত্যতা’ পাওয়া গেছে বলেও জানানো হয়েছে সেই প্র তিবেদনে।
গত ২ জানুয়ারি ঘটনাস্থল পরিদর্শনের এক সপ্তাহের মাথায় তথ্যানুসন্ধান কমিটির এই প্রতিবেদন কমিশনের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে।
সেখানে বলা হয়, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সাথে ভিকটিমের মারপিট ও ধর্ষণের শিকার হওয়ার কোনো সম্পর্ক তদন্তকালে তদন্ত কমিটির সামনে উন্মোচিত হয়নি।
বরং, ভিকটিমের স্বামীর দায়েরকৃত এজাহারের ভাষ্যমতে এটি আসামিদের সাথে ভিকটিমের পরিবারের পূর্বশত্রুতার জের।
গত ৩০ ডিসেম্বর ভোটের রাতে সুবর্ণচরের মধ্যবাগ্যা গ্রামে স্বামী-সন্তানকে বেঁধে রেখে চল্লিশোর্ধ ওই নারীকে ধর্ষণ করা হয়।
ওই নারীর অভিযোগ, ভোটের সময় নৌকার সমর্থকদের সঙ্গে তার কথা কাটাকাটি হয়েছিল। এরপর রাতে সুবর্ণচর উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক রুহুল আমিনের ‘সাঙ্গপাঙ্গরা’ বাড়িতে গিয়ে তাকে ধর্ষণ করে।
চরজব্বার থানায় ওই নারীর স্বামীর দায়ের করা মামলার এজাহারে বলা হয়, আসামিরা তার বসতঘরে ভাংচুর করে, ঘরে ঢুকে বাদীকে পিটিয়ে আহত করে এবং সন্তানসহ তাকে বেঁধে রেখে দলবেঁধে ধর্ষণ করে তার স্ত্রীকে।
ধর্ষণের ওই ঘটনায় ক্ষমতাসীন দলের লোকজনের সম্পৃক্ততার অভিযোগ আসার পর তথ্যানুন্ধান কমিটি গঠন করে মানবাধিকার কমিশন।
কমিশনের পরিচালক আল-মাহমুদ ফায়জুল কবীরের নেতৃত্বে তিন সদস্যের এই কমিটি সুবর্ণচরে গিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এবং সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে কথা বলে।
তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়, ভিকটিম তদন্ত কমিটির সামনে দেওয়া জবানবন্দির কোথাও বলেননি যে তিনি ধানের শীষে ভোট দিয়েছেন বা তিনি ধানের শীষ প্রতীকের নেতা, কর্মী, সমর্থক বা আসামিরা ধানের শীষের বিপরীত দলের নেতা, কর্মী, সমর্থক বা পোলিং এজেন্ট।
তবে প্রতিবেদনের আরেক জায়গায় ভিকটিমের জবানবন্দির বরাত দিয়ে বলা হয়, তিনি ১৪ নম্বর ভোট কেন্দ্র যান, তাকে নৌকায় ভোট দিতে বলে, তিনি বলেন তার ভোট তিনি দিবেন, তখন বলে যে যান বিকাল বেলা খবর আছে। সোহেল বলে রাইতে দেখা করবে, সন্ধ্যার পর তিনি ও তার পরিবারের সদস্যরা খাওয়া-দাওয়া সেরে ঘুমিয়ে পড়েন।
এরপর রাত সাড়ে ১২টার পর মারপিট ও ধর্ষণের ঘটনা ওই নারীর জবানিতে তুলে ধরা হয় প্রতিবেদনে।
এজাহার ও ভিকটিমের জবানবন্দির বরাতে প্রতিবেদনে বলা হয়, “ভোট দেওয়ার কারণে তার ধর্ষণ ও গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হওয়া বা আসামিদের আওয়ামী লীগের কর্মী হওয়া বা আওয়ামী লীগের কোনো কর্মী দ্বারা তার মারপিট ও ধর্ষণের শিকার হওয়ার প্রমাণ পাওয়া যায় না।”
কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়, “ভিকটিম ও তার স্বামীর জবানবন্দি, এজাহারের ভাষ্য এবং ইনজুরি সার্টিফিকেট ও প্যাথলজিক্যাল রিপোর্ট একত্রে বিশ্লেষণ করে এবং গাইনি ডাক্তারের সাথে কথা বলে প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হয় যে, ভিকটিমকে ধর্ষণ করা হয়েছে।”
ঘটনার সঙ্গে জড়িত সব আসামিকে দ্রুত আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করার সুপারিশ করা হয়েছে মানবাধিকার কমিশনের প্রতিবেদনে।
আলোচিত এ মামলায় এ পর্যন্ত সুবর্ণচর উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক রুহুল আমিনসহ ১১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
RED TIMES LIMITED
116-117, Concord Emporium,
Kataban, Dhaka-1205.
Mobile: 017111-66826
Email: redtimesnews@gmail.com