২৯শে মার্চ ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৬:৩৭ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২১, ২০১৮
অন্য সব পেশার পাশাপাশি গণমাধ্যমেও যেন নারী ও পুরুষের সমতা আসে, সেই আশাবাদ ব্যক্ত হয়েছে
বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটে (পিআইবি) রোববার বাংলাদেশ নারী সাংবাদিক কেন্দ্রের তৃতীয় জাতীয় সম্মেলনে । উদ্বোধনী অধিবেশনে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, পুরো গণমাধ্যম এবং নারীদের এখন জঙ্গিবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার সমস্যার মোকাবিলা করতে হচ্ছে। বিকশিত গণমাধ্যম আর সংকুচিত হবেনা, সাংবাদিকেরা নির্ভয়ে কাজ করুন।’
একইসাথে ডিজিটাল জগতে উৎপাত ও সাম্প্রদায়িকতার বিস্তার ঠেকাতে সংবাদমাধ্যমকে সরকারের সঙ্গে এক হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।
“৩০ শতাংশ যে আমরা করব বলছি, সেটাও করা সম্ভব হবে না, যদি আমরা কুসংস্কার, কূপমণ্ডুকতা, সাম্প্রদায়িকতা ও লিঙ্গ বৈষম্য থেকে বের হয়ে না আসতে পারি। নারী সাংবাদিকদের প্রধান শত্রু হচ্ছে, সাম্প্রদায়িকতা, কূপমণ্ডুকতা, কুসংস্কার ও জঙ্গিবাদ।”
নারী সাংবাদিকদের প্রতিনিধিত্বশীল সংগঠন নারী সাংবাদিক কেন্দ্রের এই জাতীয় সম্মেলন হচ্ছে দীর্ঘ ১১ বছর পর। সারাদেশ থেকে প্রায় ৪০০ নারী সংবাদকর্মী এ সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন।
জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে শুরু হওয়া উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে নিহত সাংবাদিক, লেখক ও অধিকারকর্মীদের জন্য শোক প্রস্তাব পাঠ করেন কেন্দ্রের সহসভাপতি দিল মনোয়ারা মনু।
বাংলাদেশে নারী সাংবাদিকতা পথিকৃৎদের একজন সেতারা মূসা এ অনুষ্ঠানে এসেছিলেন হুইল চেয়ারে বসে।
নারী সাংবাদিক কেন্দ্রের এই উপদেষ্টা বলেন, “আমরা যখন প্রথম সাংবাদিকতা শুরু করি, মুষ্টিমেয় কয়জন ছিল। এটা ১৯৬৭ সালের কথা। আজকে আমি দেখছি, হলটা ভরে গেছে। এটাতে কতো আনন্দ হচ্ছে আমার!”
আশি পেরিয়ে আসা সেতারা মূসা বলেন, “মেয়েরা আজকে ঘরের মধ্যে আবদ্ধ থাকছে না, তারা বেরিয়ে আসছে এবং তারা কাজ করছে; দেশের জন্য, দশের জন্য।”
আগামী সম্মেলনে নারী সাংবাদিকদের সংখ্যা দ্বিগুণ হবে- সেই আশাবাদ ব্যক্ত করেন সেতারা মূসা।
অনুষ্ঠানের সভাপতির বক্তব্যে নারী সাংবাদিকদের বর্তমান কাজের পরিবেশ ও তাদের সার্বিক অবস্থানের বিষয়ে তথ্য তুলে ধরেন নারী সাংবাদিক কেন্দ্রের সভাপতি নাসিমুন আরা হক মিনু।
তিনি বলেন, “আমরা দাবি করি যোগ্যতার ভিত্তিতে নারী সাংবাদিকদের নিয়োগ ও পদোন্নতি। তাদের উপযুক্ত কাজের পরিবেশ ও প্রশিক্ষণের সুযোগ। নারী হওয়ার কারণে যেন কেউ বৈষম্যের শিকার না হন।
“শুধু বৈষম্য বঞ্চনাই নয়, নারী সাংবাদিকরা অনেক সময় যৌন হয়রানিসহ নানা ধরনের লাঞ্ছনার শিকার হয়ে থাকেন। তার উপর রয়েছে নানা ধরনের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ চাপ।”
২০০১ সালের ১৩ মার্চ এ সংগঠনের যাত্রা শুরুর সময় বাংলাদেশে নারী সাংবাদিকের সংখ্যা একশো জনের মত থাকলেও এখন তা এক হাজারের বেশি হয়েছে বলে জানান সভাপতি মিনু।
তিনি বলেন, “সাংবাদিকতায় নারীর অংশগ্রহণ জোরদার হওয়ার পথে বড় বাধা নারীর প্রতি সমাজের পশ্চাৎপদ দৃষ্টিভঙ্গি। আমাদের কাজ নারীর প্রতি সমাজের দৃষ্টিভঙ্গিতে পরিবর্তন আনা। নারীদের মনে আস্থা ও আত্মবিশ্বাস ও আস্থা আনা। নারীদের দক্ষ ও যোগ্য করে গড়ে তোলা।”
নারী সাংবাদিক কেন্দ্রের দ্বিতীয় সম্মেলন হয়েছিল ২০০৭ সালের মার্চে। তৃতীয় সম্মেলনের মাধ্যমে এবার নতুন কমিটি গঠন করা হবে।
উদ্বোধনী অধিবেশনের পর নারী সাংবাদিকদের কাজের ক্ষেত্র ও পরিবেশ নিয়ে একটি কর্মশালা হয়। সবশেষে কর্ম অধিবেশনে বর্তমান কমিটির প্রতিবেদন পেশ, আয়-ব্যয়ের হিসাব অনুমোদন এবং নতুন কমিটি গঠন করার কথা রয়েছে।
নারী সাংবাদিক কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক পারভীন সুলতানা ঝুমার পরিচালনায় উদ্বোধনী অধিবেশনে অন্যদের মধ্যে কেন্দ্রের কোষাধ্যক্ষ আখতার জাহান মালিক উপস্থিত ছিলেন।
RED TIMES LIMITED
116-117, Concord Emporium,
Kataban, Dhaka-1205.
Mobile: 017111-66826
Email: redtimesnews@gmail.com