২৯শে মার্চ ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১১:৪৯ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ১৮, ২০২০
বাংলাদেশি তরুণ উদ্যোক্তা ফাহিম সালেহকে তার নিউ ইয়র্কের অ্যাপাার্টমেন্টের ভেতরে হত্যা করে লাশ টুকরো টুকরো করার ঘটনায় তার ব্যক্তিগত সহকারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ । নিউ ইয়র্ক টাইমসের খবরে বলেছে ,
গ্রেপ্তার টাইরিস ডেভন হসপিলের বিরুদ্ধে শুক্রবারই আদালতে অনুষ্ঠানিক অভিযোগ আনা হতে পারে।
তদন্তকারীদের বরাত দিয়ে নিউ ইয়র্ক টাইমস বলছে, ২১ বছর বয়সী হসপিল ফাহিমের কাছ থেকে মোটা অংকের ডলার চুরি করেছিলেন। বিষয়টি ফাহিম জেনে যাওয়ায় তাকে হত্যা করেন তার ব্যক্তিগত সহকারী।
যুক্তরাষ্ট্রে স্থানীয় সময় মঙ্গলবার বিকালে ম্যানহাটানের লোয়্যার ইস্ট সাইডে ৩৩ বছর বয়সী ফাহিমের অ্যাপার্টমেন্ট থেকে তার খণ্ড-বিখণ্ড লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
বাংলাদেশের পাঠাওয়ের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ফাহিম ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে নাইজেরিয়ায় লাগোসে যৌথ উদ্যোগে অ্যাপভিত্তিক মোটরবাইক রাইড সার্ভিস ‘গোকাডা’ চালু করেন। গতবছর সাড়ে ২২ লাখ ডলারে ইস্ট হিউস্টন স্ট্রিটের ওই বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্ট কেনেন তরুণ এই ধনকুবের ।
পুরো একদিন ফাহিমের কোনো সাড়া না পেয়ে মঙ্গলবার ওই অ্যাপার্টমেন্টে গিয়েছিলেন তার বোন। ভেতরে ঢুকে তিনি ভয়ঙ্কর এক দৃশ্য দেখতে পান।
ফাহিমের মাথা ও শরীরের বিভিন্ন অংশ ছিল কেটে টুকরো করা। কিছু টুকরো বড় আকারের গার্বেজ ব্যাগেও ভরে রাখা হয়েছিল। পাশেই ছিল একটি বৈদ্যুতিক করাত, তখনও সেটির তার ছিল সকেটের সঙ্গে যুক্ত।
এক পুলিশ কর্মকর্তার বরাতে নিউ ইয়র্ক টাইমস লিখেছে, ব্যক্তিগত সহকারী টাকা চুরি করেছেন বুঝতে পেরেও পুলিশে কোনো অভিযোগ করেননি ফাহিম সালেহ, বরং ওই টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য সময় বেঁধে দিয়েছিলেন।
তদন্তকারীদের ধারণা, যেদিন ফাহিমের লাশ পাওয়া গেল, তার আগের দিন তাকে হত্যা করে হসপিল। পরদিন সে ওই অ্যাপার্টমেন্টে ফিরে গিয়েছিল লাশ টুকরো টুকরো করে ব্যাগে ভরে সরিয়ে ফেলার পাশাপাশি হত্যাকাণ্ডের চিহ্ন মুছে ফেলার জন্য।
কিন্তু কাজ শেষ হওয়ার আগেই ফাহিমের বোন ওই ভবনে উপস্থিত হন এবং লবি থেকে কলিং বেল চাপেন। সে শব্দেই ঘাতক সবকিছু ফেলে ভবনের পেছনের দরজা ও সিঁড়ি ব্যবহার করে পালিয়ে যায় বলে ধারণা করছে পুলিশ।
ওই অ্যাপার্টমেন্ট ভবন এবং আশপাশের সিসি ক্যামেরার ভিডিও দেখে তদন্তকারীদের ধারণা হয়েছে, ফাহিমের পিছু নিয়ে সোমবার ওই ভবনের এলিভেটরে উঠেছিল খুনি। সে সময় তার পরনে ছিল তিন প্রস্থের কালো স্যুট, কালো শার্ট আর কালো টাই। তার মুখও কালো মুখোশে ঢাকা ছিল, হাতে ছিল একটি ডাফল ব্যাগ।
অ্যাপার্টমেন্টে ঢোকার পর বৈদ্যুতিক স্টান গান ব্যবহার করে ফাহিম সালেহকে সে অচল করে ফেলে এবং পরে ছুরি মেরে তাকে হত্যা করে।
এলিভেটরের সিসি ক্যামেরার ভিডিওতে দেখা গেছে ব্যাটারিচালিত একটি ভ্যাকুয়াম ক্লিনার ছিল খুনির সঙ্গে। নিজের উপস্থিতির চিহ্ন মুছে ফেলতে সেটা খুনি ব্যবহার করতে চেয়েছিল বলে পুলিশের ধারণা।
ময়নাতদন্তের প্রাথমিক প্রক্রিয়া শেষে নিউ ইয়র্ক সিটির মেডিকেল এক্সামিনার বৃহস্পতিবার বলেছিলেন, ঘাড় ও শরীরের ঊর্ধ্বাংশে একাধিক ছুরিকাঘাত করে হত্যা করা হয় ফাহিমকে।
আর যেভাবে তার লাশ টুকরো করা হয়েছে, তা দেখে একজন পুলিশ কর্মকর্তা নিউ ইয়র্ক টাইমসকে বলেছিলেন, এ কাজ কোনো পেশাদার খুনির বলে তারা সন্দেহ করছেন।
RED TIMES LIMITED
116-117, Concord Emporium,
Kataban, Dhaka-1205.
Mobile: 017111-66826
Email: redtimesnews@gmail.com