২৯শে মার্চ ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৯:৫৭ পূর্বাহ্ণ, নভেম্বর ১১, ২০১৯
বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক কমরেড খালেকুজ্জামান রবিবার সংবাদপত্রে দেয়া এক বিবৃতিতে ঐতিহাসিক বাবরী মসজিদ নিয়ে ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টের দেয়া রায়ে গভীর উৎকন্ঠা ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
বিবৃতিতে খালেকুজ্জামান বলেন, বাবরি মসজিদ সংক্রান্ত রায়ে আইনি বিচারের চেয়েও বিশ্বাসের ভিত্তিতে ধর্মীয় সংখ্যাগরিষ্ঠ শক্তির সন্তুষ্টিকে লক্ষ্য রেখে মিমাংসা করার অভিপ্রায় প্রাধাণ্য পেয়েছে। বাবরি মসজিদ ভাঙ্গাকে বেআইনী কাজ বলে রায়ে উল্লেখ করা হলেও আইন ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে কোন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। উপরন্তু একই স্থানে মন্দির নির্মাণের অনুমতি দেয়া হয়েছে এবং সংখ্যালঘু মুসলিম জনগোষ্ঠীর স্বান্তনা ও সমঝোতার উপায় হিসেবে ভিন্ন স্থানে ৫ একর জমিতে মসজিদ নির্মাণের কথাও রায়ে নির্দিষ্ট করা হয়েছে। এ রায়ের ঘটনা শুধুমাত্র যে প্রার্থণালয়ের স্থানান্তরের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে তা ততোটা বিবেচিত হয়নি বরং সাম্প্রদায়িকতার বিষাক্ত রাজনৈতিক ঝড় নতুন করে উঠবে কিনা সে সম্পর্কে উদাসীনতা লক্ষ্য করা গেছে। বাবরি মসজিদের নীচে স্থাপনার চিহ্ন পাওয়া গেছে বলে আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া (এ এস আই) দাবি করেছে। সেখানে ইসলামি কৃষ্টি-সংস্কৃতির চিহ্ন ছিল না বলে তারা জানিয়েছে আবার মন্দির বা হিন্দুয়ানী সংস্কৃতির কোন ছাপচিহ্ন যে পাওয়া গেছে তাও নিশ্চিত করতে পারে নি। তাই রায়ে বিষয়টি যেভাবে আসলো তা নিষ্পত্তির ভবিষ্যতে বহু জটিলতার জন্ম দিতে পারে। ভারতে পুরুলিয়াসহ বহু স্থানের হিন্দু মন্দির বৌদ্ধ বা জৈন মন্দিরের ধ্বংসাবশেষের উপর প্রতিষ্ঠিত এটা প্রমাণিত। তারা দুর্বল ও সংখ্যালঘিষ্ঠ বলে হয়তো এতে সমস্যা হচ্ছে না কিন্তু হিন্দুত্ববাদীরা যে বাবরী মসজিদেই থেমে যাবে তা বলা কঠিন। কারণ এদের অনেকে তাজমহল নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে। বিশ্ব ঐতিহ্যের স্থান বলে তাজমহল রক্ষা পেলেও ছোট খাটো বহু বিষয়ে যে উকি দিতে থাকবেনা তা বলা কঠিন। ভারতের বাম, প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক শক্তি তাদের আহত অনুভূতির প্রকাশ ঘটিয়েছেন এবং হিন্দুত্ববাদের কবল থেকে ভারতবর্ষের রাজনীতি মুক্ত করার এবং অসাম্প্রদায়িক প্রগতিশীল ভারতবর্ষ গড়ার যে প্রত্যয় ও আহ্বান জানিয়েছেন তাকে আমরা সাধুবাদ জানাই। আমাদের দেশেও আমরা মনে করি সাম্প্রদায়িকতাকে সাম্প্রদায়িকতা দিয়ে মোকাবেলা করা নয় বরং ধর্মান্ধতার কুফল থেকে শিক্ষা নিয়ে অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক সেক্যুলার চেতনা ও মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গীকার শোষণমুক্ত গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও সমাজ নির্মাণের সংগ্রামের মাধ্যমেই তা মোকাবেলা করা সম্ভব। আমরা ভারত ও বাংলাদেশ উভয় দেশের সকল বাম-প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক শক্তি ও জনগণকে মৌলবাদ-সাম্প্রদায়িকতা ও উভয় দেশের শাসক শ্রেণির বিরুদ্ধে আন্দোলনের সংহতি গড়ে তোলার আহ্বান জানাই।
RED TIMES LIMITED
116-117, Concord Emporium,
Kataban, Dhaka-1205.
Mobile: 017111-66826
Email: redtimesnews@gmail.com