সকল গণমাধ্যমকর্মীকে আইনী সুরক্ষায় আনবে সরকার ঃ তথ্যমন্ত্রী

প্রকাশিত: ১:০১ পূর্বাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২০

সকল গণমাধ্যমকর্মীকে আইনী সুরক্ষায় আনবে সরকার ঃ তথ্যমন্ত্রী

তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, গণমাধ্যমকর্মী আইন মন্ত্রিপরিষদে উঠবে। এ আইনের মাধ্যমে টেলিভিশনসহ সকল গণমাধ্যমকর্মীকে আইনী সুরক্ষার আওতায় আনবে সরকার ।’

বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীতে জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন-ডিইউজে’র বার্ষিক সাধারণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি একথা জানান। ডিইউজে সভাপতি আবু জাফর সূর্যের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন-বিএফইউজে’র সভাপতি মোল্লা জালাল ও মহাসচিব শাবান মাহমুদ।

তথ্যমন্ত্রী এসময় ইলেক্ট্রনিক মিডিয়াকে ওয়েজবোর্ড অন্তর্ভূক্তির দাবি প্রসঙ্গে বলেন, ‘ওয়েজবোর্ড গঠিত হয়েছিল প্রিন্ট মিডিয়ার জন্য। ওয়েজবোর্ড পার্লামেন্টে পাস করা আইনের ভিত্তিতে গঠিত হয়। ইলেক্ট্রনিক মিডিয়াকে অন্তর্ভূক্ত করতে হলে আবার আইন প্রয়োজন। কিন্তু আমরা যে গণমাধ্যমকর্মী আইন করছি, তার মাধ্যমে টেলিভিশনসহ সকল গণমাধ্যমকর্মীকে আইনী সুরক্ষার আওতায় আনা যাবে।’

ড. হাছান বলেন, ‘আপনাদের সুখবর দিতে চাই, বিএনপি-জামাতের আমলে গণমাধ্যমকর্মীদেরকে যে শ্রমিক বানিয়ে দেয়া হয়েছিল, গণমাধ্যমকর্মী আইনে সেটি নিরসন করা হয়েছে। গণমাধ্যমকর্মীরা কোনভাবেই শ্রমিক নয়। ইতোমধ্যেই সচিব কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আরেকটি সভার পর আমরা সেটি মন্ত্রিসভায় নিতে পারবো। আমরা খুব সহসা সেটি করা চেষ্টা করবো। একইসাথে আশা করবো সম্প্রচার আইনটিও খুব সহসা আইন মন্ত্রণালয় থেকে ছাড় হয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ে আসবে। তখন আমরা সেটিও মন্ত্রিসভা নিয়ে যেতে পারবো।’

গণমাধ্যমকর্মীদের চাকুরির সুরক্ষা প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ‘কাউকে যদি ছাঁটাইও করতে হয়, সেটিও আইন মেনেই করতে হবে। হঠাৎ একদিন সন্ধ্যাবেলা একটা ছাঁটাইয়ের কাগজ ধরিয়ে দেয়া যায় না। রাষ্ট্র সেটি অনুমোদন দেয় না। একজন মানুষ যেখানে কাজ করছে বছরের পর বছর, তাকে হঠাৎ করে ছাঁটাইয়ের কাগজ ধরিয়ে দেয়া, এটি কোনভাবেই সমীচীন নয়, আইনসম্মতও নয়। আমি অনুরোধ জানাবো, মালিকপক্ষ যে কাউকে যে কোনো সময় দয়া করে এভাবে ছাঁটাই করবেন না। তাদেরকে একটা বিপর্যস্ত অবস্থায় ফেলা কোনভাবেই সমীচীন নয়।’

দেশি গণমাধ্যম রক্ষায় মন্ত্রী তার বিশেষ উদ্যোগ প্রসঙ্গে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিদেশি চ্যানেলে বাংলাদেশি বিজ্ঞাপন প্রচার বন্ধ করা হয়েছে এবং টেলিভিশনের সিরিয়াল নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। যাদের বিজ্ঞাপন চলে যাচ্ছিল সেগুলো যাতে আমাদের টেলিভিশন চ্যানেলগুলো পায়, সংবাদপত্রের বিজ্ঞাপনও যাতে না চলে যায়, এগুলোর সুফল প্রিন্ট এবং ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া কিছুটা হলেও পাচ্ছে। যেকোন সময় যে কাউকে ছাঁটাই অবিলম্বে বন্ধ হওয়া উচিত।’

সাংবাদিকদের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে সবসময় আপনাদের (সাংবাদিকদের) পক্ষে। আমি আপনাদের দৃষ্টিতে পুরো ক্যানভাসকে দেখার চেষ্টা করি। সব কাজ যে আমি করতে পারি তা নয়, এককভাবে সব কাজ করাও সম্ভবপর নয়, দায়িত্বে থাকলে আবার সবদিক চিন্তা করেই সিদ্ধান্ত নিতে হয়। তবে আপনাদের দৃষ্টিতে বিষয়টাকে দেখার চেষ্টা করি। আপনাদের পক্ষ হয়েই কাজ করার চেষ্টা করি।’

আদালতে খালেদা জিয়ার আবেদন প্রসঙ্গে এসময় মন্ত্রী বলেন, ‘খালেদা জিয়ার রায় তো আদালতের ব্যাপার। সরকারের কোনো কিছু করণীয় নয়। এটি একান্তই আদালতের ব্যাপার।’

সাংবাদিকদের জাতির ও সমাজের বিবেক বলে অভিহিত করে মন্ত্রী বলেন, ‘তাদের লেখনীর মাধ্যমে সমাজের চিত্র পরিস্ফুটিত হয়। তাদের লেখনীর মাধ্যমে সমাজ, রাষ্ট্র, সরকার দিকনির্দেশনা পায়। একজন সাংবাদিক তার লেখার মাধ্যমে ভাষাহীনকে ভাষা দিতে পারে। যে কথা বলতে পারেনা, তার পক্ষ থেকে একজন সাংবাদিক কথা বলতে পারে। যার কাছে ক্ষমতা নাই, একজন সাংবাদিক তার লেখার মাধ্যমে ক্ষমতাহীনকে ক্ষমতাবান করতে পারে। দেশ, রাষ্ট্র ও সমাজের জন্য এটি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কাজ, যা আপনারা করে আসছেন।’

ডিইউজে’র নির্বাচন নিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘আগামী পরশুদিন একটি সুন্দর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক, সেই নির্বাচনে ভালো কমিটি গঠিত হবে, যে কমিটি ভবিষ্যতে সাংবাদিকদের দাবি দাওয়া বাস্তবায়ন এবং পেশাগত উৎকর্ষ সাধিত হবে। এতদিন যে কমিটি ছিল, আমার সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করেছে, আমার কাছে দাবি দাওয়া বলেছে, যেহেতু আমি সরকারের প্রতিনিধি। সমালোচনাও শুনেছি, দায়িত্বে থাকলে সমালোচনাও শুনতে হয়। এটি মেনে নিয়েই কাজ করতে হয়। ভবিষ্যতে যারা দায়িত্বে আসবেন তাদের সাথেও কাজ করবো একসাথে।’

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

লাইভ রেডিও

Calendar

March 2024
S M T W T F S
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31