১৮ই এপ্রিল ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৫ই বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১০:০২ পূর্বাহ্ণ, নভেম্বর ২৬, ২০১৭
পিলখানায় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদরদপ্তরে বিদ্রোহের ঘটনায় সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জনকে হত্যার মামলায় সহস্রাধিক পৃষ্ঠার পর্যবেক্ষণসহ রায় পড়তে সময় লাগবে অনেক ।
আসামি সংখ্যার দিক দিয়ে দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় এ মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপিল শুনানির জন্য গঠিত এই হাই কোর্ট বেঞ্চের প্রিজাইডিং জাজ বিচারপতি মো. শওকত হোসেন বলেছেন, রায় পড়া কখন শেষ হবে, তা বলা যাচ্ছে না।
আর অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেছেন, আজকের পর কালেকেও বিচারকরা আবার পর্যবেক্ষণ পড়বেন। আজকে অর্ডারিং পোরশন (সাজার অংশ) তারা দেবেন বলে মনে হয় না।
হাই কোর্টের বিশেষ এই বেঞ্চের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. আবু জাফর সিদ্দিকী ও বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার। রোববার সকাল ১০টা ৫৪ মিনিটে আলোচিত এ মামলার রায় পড়া শুরু করেন তারা।
২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকার পিলখানায় বিডিআর (বর্তমানে নাম বিজিবি) সদরদপ্তরে রক্তাক্ত বিদ্রোহের এই ঘটনায় ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন প্রাণ হারান।
ঢাকার জজ আদালত ২০১৩ সালে এ মামলার রায়ে ১৫২ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ১৬১ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন।
এছাড়া ২৫৬ আসামিকে তিন থেকে ১০ বছর পর্যন্ত বিভিন্ন মেয়াদের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেওয়া হয়। কারও কারও সাজার আদেশ হয় একাধিক ধারায়।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের সাজা কার্যকরের অনুমতি (ডেথ রেফারেন্স) ও আপিল শুনানি শেষ হওয়ার সাত মাস পর হাই কোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চ রোববার রায় দিচ্ছে।
সকালে রায়ের উপক্রমনিকা পড়েন এই বেঞ্চের প্রিজাইডিং জাজ বিচারপতি মো. শওকত হোসেন। তারপর বিচারপতি মো. আবু জাফর সিদ্দিকী বাংলায় রায় পড়া শুরু করেন। তিনি এ মামলার বিচারিক কার্যক্রম ও পিলখানা হত্যাকাণ্ডের ভয়াবহতা নিয়ে কথা বলেন।
বেলা ১টায় মধ্যাহ্ন বিরতিতে যাওয়ার সময় তিনি রাষ্ট্র ও আসামি পক্ষের আইনজীবীদের বলেন, “এ রায়ের পর্যবেক্ষণই এক হাজার পৃষ্ঠার ওপরে। যে ভিত্তিতে রায় দেওয়া হচ্ছে, তাও মৌখিকভাবে উপস্থাপন করা হবে।
কত সময় লাগতে পারে- আইনজীবীদের এমন প্রশ্নে বিচারপতি শওকত হোসেন বলেন, “কখন শেষ হবে, তা বলা যাচ্ছে না। একটা কথা বলতে পারি, সর্বসম্মত রায় হচ্ছে।”
মধ্যাহ্ন বিরতিতে রাষ্ট্রপক্ষের অন্যতম আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল সাংবাদিকদের বলেন, বেলা ২টায় বিরতি শেষে বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার তার পর্যবেক্ষণ তুলে ধরবেন।
আর অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, “আগামীকাল মামলার পর্যবেক্ষণসহ রায়ের অন্যান্য অংশ পড়া শুরু করবেন। সমস্ত রায় পড়া হলে বেশ কয়েকদিন সময় লাগতে পারে। তবে উনারা রায়ের সবটা নাও পড়তে পারেন। পর্যবেক্ষণ পড়ে তারা হয়ত তাদের অর্ডারের অংশে চলে যাবেন। আজকে অর্ডারের অংশ পড়বেন বলে মনে হয় না।”
রাষ্ট্রের প্রধান এই আইন কর্মকর্তা বলেন, “রায়ে কয়জন আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকবে, কয়জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বহাল থাকবে, কয়জনের সাজা বহাল থাকবে, এবং কোন কোন আসামির দণ্ড মওকূফ হবে, বা সাজা কমবে এসব ব্যাপারে তিনজন বিচারপতি ঐকমত্যে পৌঁছেছেন বলে জানিয়েছেন। তবে যার যার পর্যবেক্ষণ ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে।”
পিলখানা হত্যা: ১৫২ আসামির ফাঁসির রায়
বিডিআর জওয়ানদের ওই রক্তাক্ত বিদ্রোহের পর ৫৭টি বিদ্রোহের মামলার বিচার হয় বাহিনীর নিজস্ব আদালতে। আর হত্যাকাণ্ডের বিচার চলে বকশীবাজারে আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে স্থাপিত মহানগর দায়রা জজ আদালতের অস্থায়ী এজলাসে।
ঢাকার অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. আখতারুজ্জামান ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর ওই রায়ে বিদ্রোহের নেতৃত্ব দেওয়া বিডিআরের উপ সহকারী পরিচালক তৌহিদুল আলমসহ বাহিনীর ১৫২ জওয়ান ও নন কমিশন্ড কর্মকর্তার মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন। পাশাপাশি তাদের প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়।
RED TIMES LIMITED
116-117, Concord Emporium,
Kataban, Dhaka-1205.
Mobile: 017111-66826
Email: redtimesnews@gmail.com