বিনা অনুমতিতে একুশে পদকপ্রাপ্ত প্রয়াত কবি শহীদ কাদরী রচিত বইয়ের প্রকাশনা ও বিক্রি বন্ধের দাবিতে সচেতন লেখকদের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করেছেন বাংলাদেশের গুণী কবি ও চিত্রশিল্পী নির্মলেন্দু গুন।
১২ ফেব্রুয়ারি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানস্থ অমর একুশে বই মেলা প্রাঙ্গনে তিনি এই সংবাদ সম্মেলন করেন।
তিনি বলেন, শহীদ কাদরী ও নাজমুননেসা পিয়ারীর একমাত্র সন্তান আদনান কাদরীর অনুমতি না নিয়ে অবৈধভাবে কবির বই প্রকাশনা অনতিবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। এ নিয়ে অনেক ফেসবুক প্রতিবাদ হয়েছে। দেশের বহু পত্রিকা ও অনলাইন পত্রিকায় এ বিষয়ে প্রতিবাদ ছাপানো হয়েছে। এতকিছুর পরও বাংলা একাডেমির কর্তৃপক্ষের অগোচরে প্রকাশকরা বইগুলি অবৈধভাবে বিক্রি করছে। এটা ভেবেই আমি অবাক হচ্ছি। তাই আমি আবারও বাংলাদেশের এত বড় একজন কবির বই অনুমতি ছাড়া প্রকাশ বন্ধের আহ্বান জানাচ্ছি।
এর আগেও ২০১৭ -এর ফেব্রুয়ারিতে নবযুগ প্রকাশনী প্রকাশ করে “শহীদ কাদরীর কবিতা সমগ্র”। সেখানেই শেষ নয়। ২০১৭ সালের সেপ্টম্বর মাসে প্রথমা প্রকাশনী প্রকাশ করে “গোধুলির গান” এবং বেঙ্গল পাবলিশার্স প্রকাশ করে “একটি আঙটির মত তোমাকে পরেছি স্বদেশ”। এই তিন প্রকাশকের কেউই শহীদ কাদরীর একমাত্র সন্তান আদনান কাদরীর সঙ্গে যোগাযোগ করে নাই এবং তার অনুমতিও নেয় নাই। ইতিমধ্যে আদনান কাদরী বেঙ্গলসকে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছে সেখবরও পত্রিকায় এসেছে। বাংলার প্রাণের মেলা একুশে বই মেলায় এই তিনটি প্রকাশনীই বইগুলো বিক্রি করছে। বই মেলার শর্ত আইন ও কপি রাইট আইন ভঙ্গ করে। এই নিয়ে তিনটি প্রতিবাদী সংবাদ সম্মেলন ও মানববন্ধন হয়েছে।
প্রসঙ্গত: শহীদ কাদরী (১৪ আগস্ট ১৯৪২-২৮ আগস্ট ২০১৬) ছিলেন বাংলাদেশী কবি ও লেখক। দীর্ঘদিন বিদেশে বাস করলেও মৃত্যু অবধি তিনি বাংলাদেশী পাসপোর্টধারী ছিলেন। তিনি ১৯৪৭ পরবর্তী কালের বাঙালি কবিদের মধ্যে উল্ল্যেখযোগ্য। যিনি নাগরিক-জীবন-সম্পর্কিত শব্দ চয়নের মাধ্যমে বাংলা কবিতায় নাগরিকতা ও আধুনিকতাবোধের সূচনা করেছিলেন। তিনি আধুনিক নাগরিক জীবনের প্রাত্যহিক অভিব্যক্তির অভিজ্ঞতাকে কবিতায় রূপ দিয়েছেন। দেশপ্রেম, অসাম্প্রদায়িকতা, বিশ্ববোধ এবং প্রকৃতি ও নগর জীবনের অভিব্যক্তি তার কবিতার ভাষা, ভঙ্গি ও বক্তব্যকে বৈশিষ্ট্যায়িত করেছে। তার প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ চারটি। তিনি ২০১১ সালে ভাষা ও সাহিত্য “একুশে পদক” লাভ করেন। তিনি ২০১৬ সালের ২৮ আগস্ট মৃত্যুবরণ করেন। বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তখন তাঁর মৃতদেহ স্বদেশে নিয়ে আসেন এবং তাঁকে সম্মানের সাথে বুদ্ধিজীবী সমাধিস্থলে সমাহিত করেন।
সংবাদটি শেয়ার করুন