আবার চলচ্চিত্রে নিয়মিত হচ্ছেন অপু বিশ্বাস । শরীর ফিট রাখতে গত কয়েক মাস ধরেই নিজেকে আলাদা করে সময় দিচ্ছেন । আর সেটি পরিকল্পনা করেই। নিয়ম করে জিমে যাচ্ছেন, ডায়েটের জন্য আলাদা চার্টও করেছেন। পারিবারিক জীবন-যাপনে আগের থেকে এনেছেন ঢের পরিবর্তন! কারণ শুধু একটাই, নিজের প্রিয় ভুবনে ফের নতুন রূপে, নতুন অপু বিশ্বাস হয়েই সবার সামনে ফেরা। আর সিনেমার কাজে নিজেকে আগের মতোই ব্যস্ত রাখা।
সেটি শুধু কথায় নয়। প্রমাণ স্বরূপ হাজির তার একটি নতুন ফটোগ্রাফ। গতকাল তিনি তার সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে তার ভ্যারিফায়েড পেজ থেকে সেটি শেয়ার করেছেন। আর সেখানেই অপুকে নতুন রূপে দেখা যায়। এ ছবিটি দেখে অনেকেই বলছেন, তার চলচ্চিত্রে ফেরার যে প্রবল ইচ্ছে, সেটিই ফুটে উঠেছে এ ছবিতে। পড়নে গোলাপি রংয়ের শাড়ি, ঠোঁটে গোলাপি লিপিস্টিক, কানে ঝুমকা। অপরূপ সৌন্দর্যের মুগ্ধ করা এক অবাক চাহনিতে ভবিষ্যৎ পরিক্রমার চিত্রই ফুটে উঠেছে ছবিটিতে।
তবে সিনেমার কাজে বেশ কয়েকবার ফেরার কথা থাকলেও চুক্তি করার পরও কিছু জটিলতায় কারণে আর শুটিংয়ে ফেরা হয়ে ওঠেনি। তবে কবে ফিরছেন শুটিংয়ে?
অপু বিশ্বাস বলেন,‘ আমার যে পরিকল্পনা তাতে খুব দ্রুতই আমি সিনেমার কাজ শুরু করব। তার জন্য হয়তো আরও এক থেকে দেড়টা মাস অপেক্ষা করতে হবে। কারণ আমি পুরোপুরি পারফেক্ট না হয়ে সিনেমায় অভিনয় শুরু করছি না। তার জন্য আমার সিনেমার যারা প্রযোজক, পরিচালক রয়েছেন, তাদের অনেক ধন্যবাদ। আমি ভাবছি নিজেকে এই সময়ের মধ্যেই গুছিয়ে নিয়ে সিনেমারি কাজ শুরু করতে পারব।’
নতুন লুকের ছবিটি পোস্ট করে একটি হাসির চিহ্ন দিয়েছেন অপু। আর লিখেছেন ‘ফর ইউ’। তবে সে ছবিটি কার জন্য? প্রশ্ন করলে, একটু সময় নিয়ে বললেন ‘দর্শকের জন্য।’ এরও কারণ জানালেন,‘আমার ভালো কিংবা খারাপ যে সময়গুলোর কথাই বলি না কেন, যে দর্শকেরা আমার পাশে ছিলেন, আমি তাদের সব সময় হাসি মুখ দেখতে চাই। দর্শক যেভাবে আমাকে এবং জয়কে সাপোর্ট করছে, আমি ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। কিছু বলে তাদের ঋণ শোধ করতে পারব না। তারা যদি আমার দু:খ ভুলিয়ে দিতে চায়, তাহলে আমি কেন মুখ ঘোমড়া করে থাকব? তাই আমার এই হাসিটা তাদের জন্য।’
গত বছরের শুরুর দিকে বাংলাদেশি সিনেমার এ সময়ের আলোচিত নায়িকা শবনম বুবলির সঙ্গে ঘরোয়া পরিবেশে একটি স্থির চিত্রে শাকিব খানকে দেখা যায়। ছবিতে ‘ফ্যামিলি টাইম’ ক্যাপশন লিখে নিজের সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে প্রকাশ করেন বুবলি। এরপরই অপু বিশ্বাসের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি ঘটে শাকিব খানের। এরপর ছবিটি প্রকাশের গত বছরের ১০ এপ্রিল (সোমবার) বিকেল চারটায় দীর্ঘদিন গোপনে থাকা বিয়ে ও সন্তানের বিষয়টি প্রকাশ্যে নিয়ে আসেন অপু। দেশের একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে সব গোপন কথা ফাঁস করে দেন। এরপর থেকেই তাদের সম্পর্কের টানাপোড়েন দিনকে দিন বাড়তে থাকে।
বাংলাদেশের জনপ্রিয় নায়ক শাকিব খান ও নায়িকা অপু বিশ্বাসের ব্যক্তি জীবনে দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকা টানাপোড়েন একটা সময় গিয়ে তালাক নোটিশে রূপ নেয়। গত বছরের ২২ নভেম্বর সন্ধ্যায় শাকিব খান তার আইনজীবী শেখ সিরাজুল ইসলামের কার্যালয়ে যান। তিনি অপুকে তালাক দেওয়ার ব্যাপারে এই আইনজীবীর কাছে আইনগত সহায়তা চান।
এরপর শাকিব খানের পক্ষে আইনজীবী শেখ সিরাজুল ইসলামের অফিস থেকে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন মেয়র কার্যালয়, অপু বিশ্বাসের ঢাকার নিকেতনের বাসা এবং বগুড়ার ঠিকানায় তালাক নোটিশ পাঠানো হয়। সিটি করপোরেশনের পারিবারিক আদালত সূত্রে জানা গেছে, কোনো পক্ষ তালাকের আবেদন করলে আদালতের কাজ হচ্ছে ৯০ দিনের মধ্যে উভয়কে তিনবার ডেকে সমঝোতার চেষ্টা করা।
এরই ধারাবাহিকতায় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিনএসিসি) পারিবারিক আদালত বাংলাদেশের জনপ্রিয় নায়ক শাকিব খান ও নায়িকা অপু বিশ্বাসকে শাকিব খানের পাঠানো তালাক নোটিশের পরিপ্রেক্ষিতে ১৫ জানুয়ারি সকাল ১০টায় ডিএনসিসি অঞ্চল-৩ মহাখালী কার্যালয়ে তাদের দুজনকেই থাকতে বলা হয়েছিল।
সে অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ের প্রায় দুই ঘণ্টা পর ডিএনসিসি’র সালিশ পরিষদে একাই এসে হাজির হন অপু বিশ্বাস। তখন অপুর মামা স্বপন বিশ্বাস তার সঙ্গে ছিলেন। তবে এ সালিশে শাকিব খান উপস্থিত হননি। এরপর প্রায় ৩০ মিনিট তাদের (শাকিব খান-অপু বিশ্বাস) বিচ্ছেদের শুনানি হয়। আর শাকিব খান না থাকায় সালিশের নতুন তারিখ ধার্য করা হয়েছে ১২ ফেব্রুয়ারি।
ভারতের কলকাতার একটি ক্লিনিকে ২০১৬ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর জন্ম হয় শাকিব-অপুর ছেলে আব্রাহাম খান জয়ের। সে সময় অপু বিশ্বাসের সিজারও করা হয়। অপু বিশ্বাস ২০০৪ সালে আমজাদ হোসেনের ‘কাল সকালে’ ছবির মাধ্যমে চলচ্চিত্রে পা রাখেন।
সংবাদটি শেয়ার করুন