সদরুল আইনঃ
পিঁয়াজের দাম নিয়ে টালবাহানা চলছিল গত বেশ কিছুদিন ধরেই। সরকারের হুঁশিয়ারিতেও দামের লাগাম টানার কোনো উদ্যোগই চোখে পড়েনি।
উল্টো ক্রেতাদের মাথায় উচ্চমূল্যের বোঝা চাপিয়ে চলেছিল একটি বিশেষ মহল। অবশেষে সংকট কাটাতে পিঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেয় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর।
সেই অনুমতির পরই দেশের বাজারে অবিশ্বাস্যভাবে কমতে শুরু করেছে পিঁয়াজের দাম।
জানা গেছে, দিনাজপুরের হিলিতে একদিনের ব্যবধানেই দেশি পিঁয়াজের দাম কেজিতে কমেছে ১০ টাকা। বিক্রি হচ্ছে ৬৫ টাকায়। যা সোমবারও বিক্রি হয়েছিল ৭৫ থেকে ৮০ টাকায়।
অন্যদিকে, ভারত থেকে আমদানিকৃত পিঁয়াজ কেজিপ্রতি ৪০ থেকে ৪৫ টাকা দরে মোকামগুলোতে বিক্রি হচ্ছে।
হিলি স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, গতকাল সোমবার প্রথম দিনে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে তিনটি ট্রাকে ৬৩ মেট্রিকটন পিঁয়াজ আমদানি হয়েছে।
এদিকে, দিনাজপুরের বিরামপুর বাজারে আমদানি করা পিঁয়াজ আসায় একদিনের ব্যবধানে দাম কমেছে কেজিতে ৪০ টাকা। গত রবিবার বিরামপুরের প্রতি কেজি পিঁয়াজ ১০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হলেও একদিন পর আজ মঙ্গলবার স্থানীয় হাটগুলোতে সেই পিঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা দরে।
পিঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেওয়ার খবরে চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে পিঁয়াজের দাম কেজিপ্রতি ৩০ টাকা কমে গেছে বলে জানা যায়।
গতকাল সোমবার এই বাজারে প্রতি কেজি পিঁয়াজ ৬০-৬২ টাকায় দাম হাঁকিয়েও বিক্রি করতে পারেননি অনেক ব্যাপারী।
পিঁয়াজের দাম নিম্নমুখী হওয়ায় ক্রেতারা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন।
পাইকারি বিক্রেতারা জানিয়েছেন, দু’দিন আগেও তাদের প্রতি কেজি পিঁয়াজ পাইকারি ৮২ টাকা দরে কিনতে হয়েছে। ফলে বাজারে দাম কমে যাওয়ায় লোকসান গুনতে হচ্ছে।
অন্যদিকে, বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ২ মাস ২২ দিন বন্ধ থাকার পর পুনঃরায় ভারত থেকে পিঁয়াজ আমদানি শুরু হয়েছে। বেনাপোল কাস্টমস হাউসের ডেপুটি কমিশনার তানভির আহমেদ জানায়,সোমবার বিকালে ভারত থেকে ৭৫ মেট্রিক টন পিঁয়াজ আমদানি হয়েছে।
প্রতি মেট্রিক টন পিঁয়াজ ১৫০ ইউএস ডলার মূল্যে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। কাস্টমস কতৃপক্ষ প্রতি মেট্রিক টন পিঁয়াজ ৩২০ ডলারের ওপর ডিউটি ও ১০ শতাংশ শুল্ককর পরিশোধ করে প্রতি কেজি পিঁয়াজের আমদানি খরচ পড়ছে ৩৮.৩৬ টাকা।
গত মাসে দেশি জাতের পিঁয়াজের দাম ৮১ শতাংশ বেড়ে যাওয়ায় বাজার অস্থিতিশীল হয়ে ওঠে। স্থিতিশীলতা ফেরাতে পিঁয়াজ আমদানির সিদ্ধান্ত নেয় কৃষি মন্ত্রণালয়।
বিভিন্ন এলাকার পাইকারি ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, রবিবারের ঘোষণার পর প্রতি মণ পিঁয়াজের দাম কমেছে ২৫০-৩০০ টাকা।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের দাবি, এ বছর দেশীয় উৎপাদন ছিল প্রায় ৩৪ লাখ মেট্রিক টন। কিন্তু, মজুত সুবিধার অভাবে দেশে উৎপাদিত পিঁয়াজের প্রায় ২৫ শতাংশ নষ্ট হয়ে গেছে।
ফলে, দেশে এখনো প্রায় ৬.৫০ লাখ টন পিঁয়াজ আমদানি করতে হবে।
সংবাদটি শেয়ার করুন