সদরুল আইনঃ
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দেশের প্রধান সংকট হলো-গণতন্ত্র নেই।
অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে দেশের প্রত্যেকটি গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। তারা কয়েকটি নির্বাচন করেছে, যেসব নির্বাচনে মানুষ ভোট দিতে পারেনি।
আবারও একইভাবে আরেকটি নির্বাচন করার চেষ্টা করছে। কিন্তু আমরা এবার জনগণের নির্বাচন চাই। এজন্যই আমরা নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দাবি করেছি।
মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর গুলশানে একটি হোটেলে বিএনপির মিডিয়া সেলের প্রথম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল।
অনুষ্ঠানে বিভিন্ন সময়ের সাংবাদিক নির্যাতনসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের চাঞ্চল্যকর ঘটনার প্রামাণ্যচিত্র তুলে ধরা হয়।
বিএনপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক ও সাবেক এমপি জহির উদ্দিন স্বপনের সভাপতিত্বে এবং দলের প্রচার সম্পাদক ও মিডিয়া সেলের সদস্য সচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানীর পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান, বেগম সেলিমা রহমান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন চৌধুরী, ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর, বিএনপি নেতা ড. আসাদুজ্জামান রিপন, হাবিব-উন নবী খান সোহেল, ওলামা দলের আহ্বায়ক অধ্যক্ষ মাওলানা শাহ মো. নেছারুল হকসহ বিভিন্ন মিডিয়ার সাংবাদিক, মিডিয়া সেলের সদস্যবৃন্দ, দল ও অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এবং বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকবৃন্দ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় বিএনপির মহাসচিব বলেন, দেশের প্রধান সংকট হলো গণতন্ত্র না থাকা। এই সরকার সব প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দিয়েছে।
গত ১০ বছরে এক দলীয় শাসন কায়েম করেছে। আবারও তারা ভোট চুরির নির্বাচন করার পাঁয়তারা করছে।
তিনি বলেন, জনগণ তাদের ভোট দিয়ে প্রতিনিধি নির্বাচন করতে চায়।
কিন্তু আমরা দেখেছি বর্তমান শাসকগোষ্ঠী আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে এটা সম্ভব নয়। সে কারণে আমরা পরিষ্কার করে বলেছি- একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন চাই।
যেন সেই নির্বাচনে জনগণ তাদের ভোট দিতে পারে এবং প্রতিনিধি নির্বাচন করতে পারে। এ কথাগুলো আমাদের দলের পক্ষ থেকে খুব পরিষ্কার করে বলা হয়েছে।
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, আমাদের সহস্রাধিক নেতাকর্মীকে বিচারবহির্ভুতভাবে হত্যা করা হয়েছে। ৬ শতাধিক নেতাকর্মীকে গুম করা হয়েছে। ৪০ লাখ নেতা কর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যে মামলা দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ একটি ভয়াবহ অবস্থা, ভিন্নমত পোষণ করার কোন সুযোগ নেই।
এই অবস্থার প্রেক্ষিতে আমরা খুব পরিষ্কার করে বলেছি একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন চাই। সে কারণে আমাদের দলের পক্ষ থেকে ১০ দফা দাবি জানিয়েছি।
তিনি বলেন, যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে বিশ্বাস করে, বাংলাদেশকে সত্যিকার অর্থে যারা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে দেখতে চায়। সেই সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলো আজকে একসাথে হয়ে যুগপৎ আন্দোলন করছি।
আমাদের লক্ষ্য একটি গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে চাই। এখানে বিএনপিকে ক্ষমতায় নিতে চাই-এ কথাটি মুখ্য নয়, মুখ্য হচ্ছে মানুষের অধিকারকে আমরা প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। যে স্বপ্ন নিয়ে ১৯৭১ সালে আমরা যুদ্ধ করেছিলাম। যে প্রতিশ্রুতি আমরা দিয়েছিলাম জনগণের সামনে।
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, দেশে ভয়াবহ এক পরিস্থিতি চলছে। পুলিশ কাস্টডিতে মানুষ মারা যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করে দেশের মানুষের অধিকার ফিরিয়ে দেয়াই বিএনপির লক্ষ্য।
সংবাদটি শেয়ার করুন