ঢাকা ৯ই অক্টোবর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৪শে আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৬ই রবিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি


আমেরিকায় না গেলে কিছু এসে যায় না: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

redtimes.com,bd
প্রকাশিত জুন ৩, ২০২৩, ০৯:৫৫ অপরাহ্ণ
আমেরিকায় না গেলে কিছু এসে যায় না: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

অনলাইন নিউজ ডেস্ক:

দেশে উৎপাদন বাড়ানোর ওপর আবারও জোর দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা নিজের পায়ে চলব। নিজের দেশকে গড়ে তুলব। কারও মুখাপেক্ষি হয়ে থাকব না। কে স্যাংশন দিল, কে ভিসা দিল না, তা নিয়ে মাথাব্যথা করে লাভ নেই।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘২০ ঘণ্টা বিমান ভ্রমণ করে আমেরিকা না গেলে কিচ্ছু আসে যায় না। পৃথিবীতে আরও অনেক মহাসাগর আছে, মহাদেশ আছে। সেসব জায়গায় যাবো, তাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করবো।

শনিবার ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের নবনির্মিত কার্যালয় উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

দেশে উৎপাদন বাড়ানোর ওপর আবারও জোর দিয়ে সরকার প্রধান বলেন, ‘আমরা নিজের পায়ে চলব। নিজের দেশকে গড়ে তুলব। কারও মুখাপেক্ষি হয়ে থাকব না। কে স্যাংশন দিল, কে ভিসা দিল না, তা নিয়ে মাথাব্যথা করে লাভ নেই।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘যারা ভোট চুরি করে, ভোট নিয়ে খেলে, জনগণের ভাগ্য নিয়ে খেলছে, তাদের দিকে, ওই সন্ত্রাসী দলের দিকে নজর দিন। কানাডার আদালত বিএনপিকে সন্ত্রাসী দল হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে। আর দুর্নীতির দায়ে আমেরিকাই তারেক জিয়াকে ভিসা দেয়নি। যদিও তারাই (বিএনপি) এখন আমেরিকার কাছে ধর্না দেয়।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের উৎপাদন বাড়াতে হবে। এক ইঞ্চি মাটিও যেন অনাবাদি না থাকে। শুধু ফসল নয়; মাছ চাষ, ডেইরি ফার্ম, হাঁস-মুরগি পালন, যার যে সুযোগ আছে তিনি তা-ই করবেন। বৃক্ষরোপণ করতে হবে।

‘মোদ্দা কথা, উৎপাদন বাড়াতে হবে। বিশ্বব্যাপী যে খাদ্য মন্দা চলছে, তা যেন আমাদের স্পর্শ করতে না পারে। তার জন্য আমাদের উর্বর মাটি ব্যবহার করতে হবে।’

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘দেশের জনগণ জানে নৌকায় ভোট দিলে ভাগ্যের উন্নয়ন হয়। দেশের স্কুল-কলেজ, মসজিদ-মাদ্রাসার উন্নয়ন হয়। নৌকায় ভোট দিয়ে তারা স্বাধীনতা পেয়েছে, উন্নত জীবন পেয়েছে, ডিজিটাল দেশ পেয়েছে।

‘জনগণের প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস আছে, তারা নৌকায় ভোট দেবে। কারণ আওয়ামী লীগ থাকলে সবার জন্য কাজ করে, সবার সেবা করে।

‘জনগণের জন্য কাজ করলে তারা এর মর্যাদা দেয়। সেভাবে জনগণের কাছে যেতে হবে।’

নেতাকর্মীদের জনগণের জন্য ত্যাগ স্বীকার করার আহ্বান জানান বঙ্গবন্ধু-কন্যা। তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ত্যাগ করতে এসেছে- এটা মাথায় রেখে কাজ করে যাচ্ছি। কোনো অশুভ শক্তি যাতে দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে না পারে সেভাবে দেশের মানুষকে রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের ওপর বার বার আঘাত, হামলা হয়েছে। আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করার চেষ্টা হয়েছে। ইয়াহিয়া খান চেষ্টা করেছে, জিয়াউর রহমান চেষ্টা করেছে, এরশাদ-খালেদা জিয়াও চেষ্টা করেছে- আওয়ামী লীগকে কীভাবে ধ্বংস করা যায়।

‘আওয়ামী লীগ এদেশের মানুষের সংগঠন হিসেবে গড়ে উঠেছে। তাই এই সংগঠনকে কেউ ধ্বংস করতে পারেনি, পারবেও না। আওয়ামী লীগ শুধু একটি দল নয়, আওয়ামী লীগ ইনস্টিটিউটের মতো। আওয়ামী লীগ এদেশের মানুষের জন্য আন্দোলন-সংগ্রামে সবসময় ভূমিকা পালন করেছে।’

সরকারপ্রধান বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে মানুষের কল্যাণে কাজ করে সেটা আমরা প্রমাণ করেছি। আমরা যেসব কাজ করি, আওয়ামী লীগ যেসব পরিকল্পনা নেয়, প্রকল্প নেয়, তা সুপরিকল্পিতভাবেই করা হয়।

‘আমাদের মাটি, মানুষ, পরিবেশ, ভৌগোলিক অবস্থান, প্রাকৃতিক অবস্থা- সবকিছু বিবেচনা করেই আমরা প্রকল্প গ্রহণ করি। তার ফলে আমাদের প্রতিটি প্রকল্পই সাফল্য অর্জন করে। মানুষ তার সুফল পায়।’

তিনি বলেন, ‘২০০৮-এর বাংলাদেশ কী ছিল, এখন বাংলাদেশ কী অবস্থায় আছে- কেউ তুলনাটা বিবেচনা করলেই পরিবর্তনটা দেখতে পারবেন। একই দিনে ১০০ সড়ক উদ্বোধন করা- এটা কি কোনো সরকার আগে করেছে? পারেনি। কে পেরেছে? আওয়ামী লীগ।

‘আজকে আমরা বাংলাদেশে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছি, এখন আমাদের বেকারত্ব মাত্র ৩ শতাংশ। সেটাও থাকবে না। যদি কেউ উদ্যোগ নেয় সেও কাজ করতে পারবে। আমরা সেই ব্যবস্থাটাও করে দিয়েছি। আমাদের গ্রামের অর্থনীতি অনেক মজবুত। গ্রামের দারিদ্র্যের হার হ্রাস পেয়েছে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘কৃষকদের আমরা সব ধরনের প্রণোদনা দিচ্ছি। দুই কোটি ১০ লাখ কৃষককে কার্ড দিয়েছি। ভর্তুকির টাকাটা তার ব্যাংকে চলে যায়। ১০ টাকা দিয়ে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলার সুযোগ আমরা করে দিয়েছি। এক কোটি ২ লাখ ৭০ হাজার ১৪৩ জন কৃষক পুরো বাংলাদেশে অ্যাকাউন্ট খুলেছে। এখন তারা সেখানে বসে টাকা পেয়ে যায়।

‘ধান কাটার মৌসুমে মানুষ পাওয়া যায় না, মজুরের দাম বেড়ে গেছে। আমি আহ্বান করেছি আমার ছাত্রলীগ, যুবলীগ, কৃষক লীগ, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা মাঠে চলে গেছে। তারা কৃষকের ধান কেটে ঘরে পৌঁছে দিয়েছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বিদ্যুৎ শতভাগ দিতে পেরেছি। এখন তেলের দাম বেড়ে গেছে, গ্যাসের দাম বেড়ে গেছে, কয়লার দাম বেড়ে গেছে, কয়লাও পাওয়া যাচ্ছে না। আগে এক সময় যারা কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিরুদ্ধে প্রপাগান্ডা করেছিল, তারাই এখন কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র করছে। তার কারণে কয়লা কিনে আনতে সমস্যা হচ্ছে।

‘আমি জানি মানুষের অনেক কষ্ট হচ্ছে। আমরা লোডশেডিং একেবারে দূর করে দিয়েছিলাম। ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ যদি না হতো আর করোনা ভাইরাস যদি না দেখা দিতো, আজকে যদি বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা না দেখা দিতো, মুদ্রাস্ফীতি না দেখা দিতো, তাহলে মানুষের কষ্ট হতো না। আজকে আমরা ভেতরে যতই চেষ্টা করি, যে জিনিসটা বাইরে থেকে আনতে হচ্ছে। সেটা কষ্ট করে আমাদেরকে জোগাড় করতে হচ্ছে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘কাতার ও ওমানের সঙ্গে আমাদের চুক্তি হয়ে গেছে। আরও কয়েকটি দেশের সঙ্গে করছি, যাতে গ্যাস কিনতে পারি। এই কষ্ট দূর করতে পারি।

‘একবার অভ্যাস হয়ে গেলে মানুষের কষ্ট বাড়ে। বিএনপি-জামায়াতের আমলে তো বিদ্যুৎ ছিলই না। তখন মানুষ হাহাকার করত। বিদ্যুৎ চাওয়ার কারণে কানসাটে খালেদা জিয়া গুলি করে মানুষ হত্যা করেছিলেন। সারের দাবি করেছিল বলে ১৮ জন কৃষককে হত্যা করছিলেন। শ্রমের মজুরি দাবি করেছিল বলে ২৭ জন শ্রমিককে রোজার সময় হত্যা করা হয়েছিল।’

ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বেনজীর আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ নেতারা বক্তব্য দেন।

 

তথ্য সুএঃ নিউজ বাংলা ২৪

সংবাদটি শেয়ার করুন

October 2024
S M T W T F S
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031