এস এম আব্দুল্লাহ সউদ,কালাই প্রতিনিধিঃ
জয়পুরহাটের কালাই উপজেলায় চলতি রোপা আমন মৌসুমে আষাঢ়-শ্রাবণের স্বস্তির বৃষ্টিতে কৃষকরা পুরোদমে আমন ধান চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন। কখনও রোদ, কখনও বৃষ্টি উপেক্ষা করে তারা চারা রোপণ, জমি চাষ, আগাছা পরিষ্কার, পানি দেওয়া এবং সার দেওয়ার কাজে ব্যস্ত রয়েছেন।
সরেজমিনে মাঠে গিয়ে দেখা যায়, এ উপজেলার কৃষকরা সারাদিন তাদের জমিতে আমন ধানের চারা লাগানোর কাজ করছেন। কেউ ট্রাক্টর ও পাওয়ার টিলার দিয়ে হাল চাষ করছেন, কেউ জমির আইলে কোদাল দিয়ে কাজ করছেন। কোথাও পাওয়ার টিলার দিয়ে জমি সমান করার কাজ চলছে। কিছু স্থানে কৃষকরা নিজেরাই মই টেনে জমি সমান করছেন। বীজতলা থেকে ধানের চারা তোলা ও জমিতে জৈব সার দেওয়ার কাজেও ব্যস্ত রয়েছেন অনেকে। সব মিলিয়ে কৃষকদের মাঝে আনন্দের বন্যা বইছে।
স্থানীয় কয়েকজন কৃষক জানান, বর্ষায় সেচবিহীন কম খরচে আমন ধান চাষ করে লাভের আশা করছেন তারা। সময়মতো বৃষ্টি হওয়ায় তাদের মধ্যে স্বস্তি দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে অনেকেই জমিতে রোপা আমন রোপণ শুরু করেছেন।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সূত্রে জানা যায়, চলতি রোপা আমন মৌসুমে পাঁচটি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার এলাকাসহ এ উপজেলায় ১১,৯৫০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধান রোপণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
আহম্মেদাবাদ ইউনিয়নের হাতিয়র গ্রামের কৃষক আব্দুল মান্নান মন্ডল জানান, চলতি মৌসুমে তিনি ১ একর জমিতে বিভিন্ন জাতের ধান চাষাবাদ করবেন। সময়মতো বৃষ্টি হওয়ায় তিনি দারুণ খুশি।
মাত্রাই ইউনিয়নের ছিলিমপুর গ্রামের কৃষক তোতা মিয়া বলেন, “বৃষ্টির পানির ওপর নির্ভর করে আমরা আমন চাষ করে থাকি। অনেক দিন পর এই বৃষ্টির নাগাল পেয়েছি। আমার চার বিঘা জমিতে বৃষ্টির পানি জমেছে। আশা করছি, এ বছর লাভের মুখ দেখতে পারব।”
আরেক কৃষক এনামুল হক বলেন, “চলতি মৌসুমে চার বিঘা জমিতে আমন ধান চাষ করেছি। পর্যাপ্ত বৃষ্টির পানি পাওয়ায় চাষাবাদে কোনো অসুবিধা হয়নি। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে ফলনও বেশ ভালো হবে বলে আশা করি।”
কালাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা অরুণ চন্দ্র রায় বলেন, “এ বছর ১১,৯৫০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধান রোপণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রণোদনা হিসেবে ১১০০ জন কৃষককে রাসায়নিক সার ও বীজ দেওয়া হয়েছে। জনপ্রতি ৫ কেজি করে আমন ধানের উফশী বীজ ও ২০ কেজি করে সার দেওয়া হয়েছে। সময়মতো বৃষ্টি হওয়ায় রোপা আমন লাগাতে পেরে কৃষকরা খুবই খুশি। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে ফলনও বেশ ভালো হবে বলে আশা প্রকাশ করেন।”