এসবিএন: বিপুল সংখ্যক বইপ্রেমী মানুষের উপস্থিতিতে গতকাল শুক্রবার কেমুসাস বইমেলার ষষ্ঠ দিনে মেলা প্রাঙ্গনে ছিলো উৎসবের আমেজ।
এ দিন নানা আয়োজনের মধ্যে ছিলো হাতের লেখা প্রতিযোগিতা, প্রকাশনা উৎসব ও লেখক আড্ডা।
বিকেল ৪টায় বইমেলা মঞ্চে শিশু-কিশোরদের হাতের লেখা প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন বিশিষ্ট রাজনীতিক ও মহানগর বিএনপির সভাপতি এম নাসিম হোসাইন। এতে তিনটি গ্রুপে নগরীর বিভিন্ন স্কুলের শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেয়।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে নাসিম হোসাইন বলেন, কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদের বইমেলার ব্যবস্থাপনা দিন দিন উন্নত হচ্ছে। মেলা উপলক্ষে আয়োজিত বিভিন্ন প্রতিযোগিতা শিশু-কিশোরদের সৃজনশীল করে তুলতে অন্যন্য ভূমিকা রাখবে।
কেমুসাসের সহসাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক দেওয়ান মাহমুদ রাজা চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও কোষাধ্যক্ষ মো. ছয়ফুল করিম চৌধুরী হায়াতের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে দেন দৈনিক জালালাবাদ পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক বিশিষ্ট লেখক আব্দুল কাদের তাপাদার ও গল্পকার সাহেদ হোসাইন।
তিনটি গ্রুপে অনুষ্ঠিত প্রতিযোগিতায় বিচারক প্যানেলে ছিলেন কবি রুহুল আজম মাসুদ, এডভোকেট মো. আব্দুল মুহিত, ছড়াকার রিপন আহমদ ফরিদী, কবি রেজাউল হক।
এসময় উপস্থিত ছিলেন কেমুসাসের সাধারণ সম্পাদক আজিজুল হক মানিক, কবি ও গবেষক সৈয়দ মবনু, মুহিত চৌধুরী, সাংবাদিক নোমান বিন আরমান, প্রাবন্ধিক ফায়যুর রাহমান, মোহাম্মদ অলিউর রহমান, মামুন হোসেন বিলাল প্রমুখ।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে দৈনিক জালালাবাদ পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক আব্দুল কাদের তাপাদার বলেন, সিলেটের মানুষ বরাবরই বাংলাদেশের রাজনীতি, অর্থনীতি ও শিল্প-সাহিত্যে অনন্য অবদান রেখে আসছেন।
এ ক্ষেত্রে পুরুষেরা যেমন এগিয়ে ছিলেন, নারীরাও তেমনি এগিয়ে ছিলেন। আজ থেকে আড়াইশ বছরের বেশিকাল আগে ছামিনা খাতুন ও সহিফা বানু বাংলায় লেখালেখি করে গেছেন।
এ সময় তিনি দেওয়ান মোহাম্মদ আজরফ, অধ্যাপক শাহেদ আলীসহ কয়েকজন প্রয়াত গুণী সাহিত্যিকের নাম স্মরণ করেন। রাজনীতির ক্ষেত্রে সিলেটের অবদান উল্লেখ করে তিনি কর্ণেল আতাউল গণি ওসমানী, আব্দুস সামাদ আজাদ, দেওয়ান ফরিদ গাজী, এম সাইফুর রহমান, হুমায়ন রশীদ চৌধুরীসহ প্রয়াত কয়েকজন রাজনীতিকের নাম স্মরণ করেন।
তিনি বলেন, কেমুসাস বইমেলা সিলেটের সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক জগতে নবজাগরণ সৃষ্টি করেছে। এই জাগরণ অব্যাহত থাকলে একদিন কেমুসাস বইমেলা বাংলা একাডেমীর মেলার রূপ ধারণ করবে।
আগামীতে স্বাধীনতার পুরো মাস জুড়ে আরো বড় পরিসরে কেমুসাস বইমেলা আয়োজনের পাশাপাশি ক্যাবল নেটওয়ার্ক এসসিএসের মাধ্যমে সরাসরি সম্প্রসারের আহবান জানান।
সভাপতির বক্তব্যে কেমুসাসের সহসাধারণ সম্পাদক ও বইমেলা উপকমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক দেওয়ান মাহমুদ রাজা চৌধুরী বলেন, কেমুসাসের মুখপত্র ‘আল-ইসলাহ’ ব্যতীত বাংলাদেশে কোনো সাহিত্য পত্রিকা ৮৩ বছরে পর্দাপনের কোনো ইতিহাস নেই।
তিনি বলেন, বিগত ৮৩ বছর ধরে কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদ দেশের শিল্প-সাহিত্য ও ইতিহাস-ঐতিহ্য লালন করে আসছে।
ভাষা আন্দোলনে এই প্রতিষ্ঠানের অন্যন্য অবদানের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে যে তিনটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হয়েছিল সেই তিনটিই ছিল সিলেটে।
গল্পকার সাহেদ হোসাইন বলেন, বইমেলার প্রথম দিন থেকেই শিশু-কিশোরদের নিয়ে কেমুসাস বিভিন্ন প্রতিযোগিতার আয়োজন করে আসছে।
আজকের সুন্দর হাতের লেখা প্রতিযোগিতা তারই ধারাবাহিকতার একটি অংশ। তিনি বলেন, সুন্দর হাতের লেখা সুন্দর মনের বহির্প্রকাশ।
তাই এই প্রতিযোগিতা শিশু-কিশোরদের মানসিক বিকাশে সহায়তা করবে। সন্ধ্যা ৭টায় বইমেলা মঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় একাধিক বইয়ের প্রকাশনা উৎসব।
এতে কবি কালাম আজাদ, কবি মুকুল চৌধুরীসহ সিলেটের বিপুল সংখ্যক লেখক সাহিত্যিক উপস্থিত ছিলেন। এর আগে পাঠক সংঘ শৈলীর আয়োজনে মেলা প্রাঙ্গনে অনুষ্ঠিত হয় এক সাহিত্য আড্ডা।
RED TIMES LIMITED
116-117, Concord Emporium, Kataban, Dhaka-1205.
Mobile: 017111-66826
Email: [email protected]
Web Design by: SuperSoftIT.com