ঢাকা ১৬ই অক্টোবর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৩১শে আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১২ই রবিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি


‘গণতন্ত্র, সুশাসন ও সামাজিক ন্যায়বিচার’ শীর্ষক মানবাধিকার সংলাপ হয়েছে

redtimes.com,bd
প্রকাশিত সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২৪, ০৮:৫৪ অপরাহ্ণ
‘গণতন্ত্র, সুশাসন ও সামাজিক ন্যায়বিচার’ শীর্ষক মানবাধিকার সংলাপ হয়েছে

টাইমস নিউজ

বাংলাদেশ বার কাউন্সিল এর সদস্য ও সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, স্বৈরাচার হাসিনা সরকার গুম, খুন, হত্যা নির্যাতনের নগরীতে পরিনত হয়েছে গোটা দেশ।
তিনি বলেন র্দূনীতি আর লুটেরারা ছিলেন ওনার ছত্রছায়ায় আর হাসিনা জোর গলায়
বলতেন আমার পিওনও ৪০০ কোটি টাকার মালিক। তিনি এটাও বলেন দেশ একক কতৃত্ব
বাদী চলে গিয়েছিল শেখ হাসিনার ও তার পরিবারের হাতে। গণতন্ত্র মানে কথা
বলাই নয়, দেশের প্রতিটি সেক্টরে অর্ন্তভূক্ত মুলক গণতন্ত্র, সুশাসন ও
ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করাই হবে মানবাধিকার সুরক্ষার মুল মন্ত্র।

তিনি আজ মানবাধিকার সংলাপে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন ।

আজ শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি, নসরুল হামিদ মিলনায়তনে ‘গণতন্ত্র, সুশাসন ও সামাজিক ন্যায়বিচার’ শীর্ষক একটি জাতীয় মানবাধিকার সংলাপ অনুষ্টিত হয়েছে।

জাতীয় মানবাধিকার সংলাপ সভাপতিত্ব করেন মানবাধিকার কর্মী মাহবুল
হক, মহাসচিব, মানবাধিকার উন্নয়ন কেন্দ্র এবং সঞ্চালনা করেন রোবায়েত
ফেরদৌস, অধ্যাপক, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় এবং
প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ বার কাউন্সিল এর সদস্য ও
সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন,
কাউন্টার পার্ট ইন্টারন্যাশানাল এর চিফ অফ পার্টি কেটি ক্রোক, আমার
বাংলাদেশ পার্টির সদস্য সচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু এবং লিডো’র নির্বাহী
পরিচালক ও মানবাধিকার কর্মী ফরহাদ হোসেন, গবেষক ও উন্নয়ন কর্মী আমিনুর
রসুল ও জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য আরিফুল ইসলাম আদীব। সংলাপটিতে আরো
উপস্থিত ছিলেন রাজনীতিবিদ, আইনজীবী, নির্যাতিত ও ভুক্তভোগী জনগোষ্ঠী সহ
মানবাধিকার কর্মী ও সাংবাদিকবৃন্দ।
এ সংলাপের মূল লক্ষ্য হলো গত ১৭ বছরে সংঘঠিত মানবাধিকার লংঘনজনিত সকল
ঘটনার সুষ্ঠু তথ্যানুুসন্ধানের রূপরেখা নির্ধারণ এবং নির্যাতিত ব্যক্তির
ক্ষতিপূরণ, পুনর্বাসন ও ন্যায়বিচার নিশ্চিতে রোডম্যাপ প্রণয়ন করা।
প্রস্তাবিত রোডম্যাপের সুপারিশসমূহ:
১। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত ব্যক্তিবর্গের পরিবারকে অতি দ্রুত
ক্ষতিপূরন ও পূর্নবাসন এবং আহত ব্যক্তিবর্গকে অতি দ্রুত উন্নতমানের
চিকিৎসা সেবা, ক্ষতিপূরন ও পূর্নবাসন করা।
২। জাতীয় মানবাধিকার কামিশনকে সংস্কার করে জাতীয় ও আর্šÍজাতিক মানবাধিকার
প্রতিষ্ঠান গুলোর স্মমনয়ে গত ১৫ বছরের মানবাধিকার লঙ্ঘনজনিত বিষয়গুলো
সুষ্ঠু তথ্যানুুসন্ধানের রূপরেখা নির্ধারণ করা এবং ন্যায় ও সত্য
প্রতিষ্ঠার জন্য সঠিক তথ্য উপস্থাপন করা।
৩। সঠিক তথ্যের ভিক্তিতে নির্যাতিত বাক্তি ও তার পরিবারকে ক্ষতিপূরন এবং
আর্šÍজাতিক মানের চিকিৎসাসেবা ও পূর্নবাসন করা।
৪। ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার জন্য জাতীয় আইন সহায়তা বাজেট থেকে সম্পূর্ন
বিনা খরচে আইগত সহযোগিতা করা।
৫। ‘গণতন্ত্র, সুশাসন ও সামাজিক ন্যায়বিচারের স্বার্থে গণতান্ত্রিক
প্রতিষ্ঠান ও আইনশৃঙ্খলায় নিয়োজিত বাহিনীর জন্য মানবাধিকার শিক্ষা
বাধ্যতামূলক করা।

অনুষ্ঠানের সভাপতি জনাব মাহবুল হক বলেন, কোটা বিরোধী আন্দোলনে আহত এবং
নিহতদের দ্রুত সময়ের মধ্যে চিকিৎসা সেবা, পূর্ণবাসন ও আর্থিক সহায়তা
প্রদান করা। রাষ্টীয় স্বাস্থ্য ব্যবস্থা খুবই দূর্বল ব্যবস্থাপনায় চলছে।
এই খাত উন্নত করা। আন্দোলনে আহতদের মধ্যে কারো হাত, কারো পা কেটে ফেলতে
হয়েছে, কারো আবার দুই পা কেটে ফেলতে হয়েছে। পুলিশ এর দ্বারা নির্যাতিত্ব
হয়েছে, নিসন্দেহে মানবাধিকার লঙ্ঘন। তাদের এই ঘৃন অপরাধ দিন কে দিন বেড়েই
চলেছে। পুলিশের এই ঘৃণ অপরাধের তাদের দৃষ্টান্ত মুলক শাস্তি হওয়া উচিত
বলে তিনি দাবি জানান এবং আরো বলেন, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনার পূর্ণগঠন
করে একটি সুুনিদ্দিষ্ট রোড় ম্যাপ তৈরি করতে হবে।

সঞ্চালক জনাব রোবায়েত ফেরদৌস বলেন, পৃথিবীর ইতিহাসে এটি বিরল যে, একটি
দেশের প্রধান মন্ত্রীর সিদ্ধান্তে হত্যা কান্ড করা হয়েছে ১০০০ জনকে, ৪০০
মানুষ অন্ধ হয়েছেন কারো এক চোখ, কারো দু চোখ হারাতে হয়েছে স্থায়ী ভাবে,
মানুষ স্থায়ী ভাবে পঙ্গু হয়েছেন। ইউনিসেফ সুত্র বলে ৭৪ জন শিশুকে হত্যা
করা হয়েছে এবং সব মিলিয়ে প্রায় ২১ হাজার জন্য আহত ও নির্যাতিত হয়েছে। যে
সকল হত্যা কান্ডের ঘটেছে তাদের অডিও ভিডিও ক্লিপ দেখে আর্ন্তজাতিক ভাবে
বিচার এর ব্যবস্থা করতে হবে। আমরা চাই না এই স্বৈরাচার শাষক আবার ফিরে
আসুক বা নতুন কোন স্বৈর‌্যশাষক দেশ পরিচালনার দ্বায়ীত্ব নেক। দেশের ছাত্র
সমাজ আবার প্রমান করল তারা জাগত হলে কোন আন্দোলন বিফল হবে না বা হয়নি।

গবেষক ও উন্নয়ন কর্মী আমিনুর রসুল বলেন, যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন হলো, নেতা
জানতে চাইলেন না কিভাবে দেশ স্বাধীন হলো। তারাই সরকার গঠন করলো, তারাই
দেশের নেতৃত্ব দিল, বংশ পরম পরায় তারাই ফিরে আসল একনায়কতন্ত্র বিরাজ
করতে। ছাত্র আন্দোলন আমাদের শিখিয়ে দিল দেশ এখন পূর্ণগঠনের সময়, তাই আমি
বলতে চাই- আার কোন সৈ¦রশাষক নয়, এদেশ থেকে উৎখাত না করে আমরা পিছ পা হবার
না এবং কোন সুযোগ নেই।

আমার বাংলাদেশ পার্টির সদস্য সচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, বাংলাদেশ
স্বাধীন হলো ৫৩ বছর কিন্তু সাম্য সামাজিক ন্যায়বিচার ও মানবাধিকার এখনো
সেই অন্ধকার যুগেই রয়েগেছে। আমরা এর থেকে দ্রুত পরিত্রান চাই।

লিডো’র নির্বাহী পরিচালক ও মানবাধিকার কর্মী ফরহাদ হোসেন বলেন,
স্বাধীনতার ৫৩ বছর পর আমরা শিশু অধিকার নিয়ে চাইছি কেন? কার কাছে চাচ্ছি,
কেন চাইতে হবে। আমি বাংলাদেশের একজন নাগরিক আমার দেশের সকল অধিকার আমি
পাব, আমার সন্তান পাবে, শিশুরা পাবে। আন্দোলনে শিশু হত্যা কান্ড ও
নির্যাতন করেছে, মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে তাদের দ্রুত বিচার আওতায় এনে
শাস্তি মুলক ব্যবস্থা করতে হবে।
কাউন্টার পার্ট ইন্টারন্যাশানাল এর চিফ অফ পার্টি কেটি ক্রোক বলেন
নানাবিধ নাগরিক সমস্যা সমাধানের জন্য সকলকে এক সাথে কাজ করতে হবে। বৈষম
বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যারা আহত ও নিহত হয়েছেন তাদের পরিবারের প্রতি
সমবেদনা জানিয়েছেন। বাংলাদেশের গণতন্ত্র, সুশাষন ও ন্যায়বিচার উন্নয়নের
জন্য পরিবর্তিত বাংলাদেশে সকলে এক সাথে কাজ করব।

মোহাম্মদপুর নুরজাহান রোড এর নিহত মাহবুব রহমান সৈকত এর বাবা বলেন,
এসএসসি পাশ করে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় ও সাত কলেজে সুযোগ পায় ভর্তি হবার জন্য
কিন্তু বিশ^বিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ হলনা তার। ২৫ জুলাই ২৪ ৩.৩৭ মিনিটের
দিকে নুরজাহান রোড এর আন্দোলনের উপর হামলা শুরু হয়। সৈকত এর একজন বন্ধু
আহত হয় শুনে ঘটনা স্থলে পৌচ্ছে বন্ধুকে উদ্ধার করার জন্য। এসআই শাহারিয়ার
সৈকত এর কপালে গুলি করে। ঘটনা স্থলে সৈকত মারা যায়। এস আই শাহারিয়ার এখন
পলাতক, অর্ন্তবর্তী সরকারের কাছে আবেদন দ্রুত তাকে গ্রেফতার করে বিচার
কার্য শুরু করা।

এছাড়াও আরো ঘটনা বণর্না করে, সাভার এর ইয়ামিন, হাজারীবাগ এর ইমন,
যাত্রাবাড়ির রেজাউল, হাজারীবাগ এর সাব্বির বেলুন বিক্রেতা, অবদা রোড এর
নুর-নবী মাছ বিক্রেতা নিহতদের পরিবার সদস্যবৃন্দ ও আহত ব্যক্তিবর্গ।

সংবাদটি শেয়ার করুন

October 2024
S M T W T F S
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031