সদরুল আইনঃ
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠন ছাত্রলীগের ৩০তম জাতীয় সম্মেলন আগামীকাল মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) অনুষ্ঠিত হবে।
সম্মেলন উপলক্ষে চলছে নেতা-কর্মীদের শেষ মূহুর্তের দৌড়ঝাঁপ। বিশেষ করে ছাত্রলীগের পদপ্রত্যাশী নেতারা নিজেদের উপস্থাপন করতে চাচ্ছেন বিভিন্নভাবে। কেউ যাচ্ছেন ছাত্রলীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের কাছে, আবার যাদের এমন সুযোগ নেই তারাও সর্বোচ্চ চেষ্টা করছেন প্রধানমন্ত্রীর কাছে নিজের নাম পৌঁছানোর জন্য।
আওয়ামী লীগ ও গণভবন সূত্র বলছে, অন্যান্যবার ছাত্রলীগের নেতৃত্ব তথাকথিত সিন্ডিকেটের দখলে থাকলেও এবার প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনাই নেতৃত্ব নির্ধারণ করবেন। সেজন্য গণভবনে নাম পাঠানোর জন্য বিভিন্ন উপায় অবলম্বন করেছে ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ।
ইতোমধ্যে গণভবনে প্রস্তুত হয়েছে ছাত্রলীগের সংক্ষিপ্ত তালিকা। ১৮ জনের এ তালিকা থেকেই পদায়ন করা হবে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগে।
চট্টগ্রাম অঞ্চল থেকে রয়েছে দেশরত্ন মেডিসিন সার্ভিস সেবাদানকারী ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহসভাপতি ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী সজীব, করোনায় অক্সিজেন সরবরাহ করে আলোচনায় আসা সাংগঠনিক সম্পাদক সাদ বিন কাদের চৌধুরী, বিনা মূল্যে খাবার সরবরাহ করে আলোচনায় আসা ডাকসুর সাবেক সদস্য ও কেন্দ্রীয় কমিটির উপ-সমাজসেবা সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত।
উত্তরবঙ্গ থেকে এবার তালিকায় আছে উপ-পরিবেশ সম্পাদক মোস্তাক আহমেদ সোহাগ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম সবুজ।
ময়মনসিংহ অঞ্চল থেকে ছাত্রলীগের মুক্তিযুদ্ধ ও গবেষণা সম্পাদক মেহেদি হাসান তাপস।
বরিশাল থেকে ছাত্রলীগের উপ-বিজ্ঞান বিষয়ক সম্পাদক সবুর খান কলিন্স, উপ-কর্মসংস্থানবিষয়ক সম্পাদক খাদিমুল বাশার জয়, ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান।
ফরিদপুর থেকে উপ-ক্রীড়া সম্পাদক শরীফ বায়েজীদ ইবনে মাহমুদ কোতোয়াল, উপ-আইন সম্পাদক শাহেদ খান, হাজী মুহম্মদ মহসীন হলের সভাপতি শহীদুল হক শিশির।
খুলনা অঞ্চল থেকে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বরিকুল ইসলাম বাঁধন, উপ-বিজ্ঞান সম্পাদক খন্দকার আহসান হাবীব।
সিলেট অঞ্চল থেকে প্রার্থী হিসেবে আছেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সম্পাদক আল আমিন রহমান।
আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড বলছে, প্রতিবার সম্মেলনের পর দীর্ঘ সময় কালক্ষেপণ করলেও এবার ছাত্রলীগের নেতৃত্ব সম্মেলনের পরপরই ঘোষণা করার পরিকল্পনা রয়েছে।
আগামী ১০ ডিসেম্বর বিএনপির মহাসমাবেশকে সামনে রেখে দ্রুত কমিটি দেওয়ার কথা রয়েছে। ছাত্রলীগের নতুন কমিটিকে ১০ ডিসেম্বর ঢাকার সমাবেশের মোকাবিলা করতে হবে।
সূত্রটি জানায়, এবারের নির্বাচন বিগত দুই নির্বাচনের তুলনায় সহজ হবে না বিধায় ছাত্রলীগের নেতৃত্ব বাছাইয়ের ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী দক্ষতা, যোগ্যতা এবং পারিবারিক অভিজ্ঞতাকে গুরুত্ব দিবেন।
তাই এবারের নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকবে ছাত্রলীগের। যার কারণে এবারের ছাত্রলীগে জনপ্রিয়, বিতর্কের ঊর্ধ্বে থাকা নেতৃত্বের দায়িত্ব প্রদানের পরিকল্পনা রয়েছে।
এছাড়া দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা নিজে যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে এবারের কমিটি দেবেন বলে জানায় দলীয় সূত্রটি।
সম্মেলনের বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক বলেন, ‘ছাত্রলীগের একমাত্র অভিভাবক দেশরত্ম শেখ হাসিনা। তিনি সবারই খোঁজ-খবর নিচ্ছেন।’
কেমন নেতৃত্ব এবার নির্বাচন করা হবে সে বিষয়ে তিনি বলেন, ‘গত কয়েকটি সম্মেলনে বয়স ২৯ বছর করা হয়েছে। এবারও সেই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এছাড়া মেধাবী, সৎ, নিষ্ঠাবান, ছাত্রদের মধ্যে জনপ্রিয়তা আছে, এমন নেতৃত্ব আমরা বাছাইয়ে গুরুত্ব দিচ্ছি আমরা। প্রার্থীর একাডেমিক কোয়ালিফিকেশন, পারিবারিক ব্যাকগ্রাউন্ড, বিতর্কমুক্ত কি না সেসব ব্যাপারেও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।’
সংবাদটি শেয়ার করুন