সদরুল আইনঃ
আজকের রাত পোহালেই গাজীপুর সিটি করপোরেশনের বহুল আলোচিত (জিসিসি) তৃতীয় নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হচ্ছে।
সারাদেশের মানুষ, রাজনৈতিক দলসমুহ এবং বিদেশী দূতাবাসগুলোও তাকিয়ে আছে এখানকার ভোটের দিকে।
বৃহস্পতিবার ভোটগ্রহণের জন্য ইতোমধ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশন। বুধবার সকাল থেকে ভোট কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের কাছে ইভিএম মেশিনসহ ৪৬ আইটেমের সামগ্রী বিতরণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
১১ লাখ ৭৯ হাজারেরও বেশি ভোটারের জন্য ৪৮০টি কেন্দ্রের তিন হাজার ৪৯৭টি কক্ষ স্থাপন করা হয়েছে। এসব কেন্দ্রে ব্যবহার করার জন্য পাঁচ হাজার ২৪৬টি ইভিএম মেশিন প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা এএইচএম কামরুল ইসলাম জানান, গাজীপুর জেলা প্রশাসন কার্যলয় চত্বর, শহরের কাজী আজিম উদ্দিন কলেজ এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রতি কেন্দ্রের জন্য একযোগে ইভিএম মেশিন, হ্যান্ড সেনিটাইজার, ভেসেলিন, মখমলের কাপড়, টিস্যু, বুথ কক্ষ নির্মাণের জন্য কাপড়, অমোছনীয় কালি, ভোটার তালিকা, স্ক্রু-ড্রাইভার, মাল্টিপ্লাগসহ ৪৬ আইটেমের সামগ্রী বিতরণ শুরু করা হয় আজ বুধবার দুপুর ১টা থেকে।
কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রিজাইডিং, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসারগণ এসব সামগ্রী বুঝে নিচ্ছেন।
গাজীপুর সিটি নির্বাচণের সহকারি রিটার্নিং কর্মকর্তা এইচএম কামরুল ইসলাম জানান, ১১ লাখ ৭৯ হাজারেরও বেশি ভোটারের জন্য ৪৮০টি কেন্দ্রের ৩ হাজার ৪৯৭টি কক্ষ স্থাপন করা হয়েছে। এসব কেন্দ্রে ব্যবহার করার জন্য ৫ হাজার ২৪৬টি ইভিএম মেশিন প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
প্রতিকেন্দ্রে একজন করে ৪৮০জন ট্রাবল শু্যটার, প্রতি দুই কেন্দ্রে একজন করে মোট ২৪০ জন (ভ্রাম্যমাণ) টেকনিক্যাল এক্সপার্ট, ১৪ জন সহকারী প্রোগামার এবং ৪ জন থাকবেন প্রোগ্রামার।
যাতে কোন ইভিএম মেশিনে সমস্যা দেখা দিলে তা দ্রুত সমাধান করা যায়। প্রতিকেন্দ্রে একটি এবং কক্ষে একটি করে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলবে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ভোট গ্রহণ। এবার এ নির্বাচনে ৮ মেয়র প্রার্থীসহ ৩৩৩ জন কাউন্সিলর প্রার্থী সরাসরি ভোটযুদ্ধে অবতীর্ণ হচ্ছেন।
মেয়র পদে লড়ছেন যারাঃ
নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগের মো. আজমত উল্লা খান, লাঙ্গল প্রতীকে জাতীয় পার্টির এমএম নিয়াজ উদ্দিন, হাতপাখা প্রতীকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের গাজী আতাউর রহমান, গোলাপ ফুল প্রতীকে জাকের পার্টির মো. রাজু আহাম্মেদ, মাছ প্রতীকে গণফ্রন্টের আতিকুল ইসলাম লড়ছেন।
স্বতন্ত্র মেয়র পদে টেবিল ঘড়ি প্রতীকে জায়েদা খাতুন (সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের মা), ঘোড়া প্রতীকে মো. হারুন-অর-রশীদ ও হাতি প্রতীকে সরকার শাহনূর ইসলাম লড়ছেন।
নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর সাংবাদিকদের বলেন, গাজীপুর সিটি নির্বাচনে সবগুলো কেন্দ্রই আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। শিল্প এলাকায় কোথাও কোথাও অপরাধ প্রবণতা বেশি থাকে। এর মধ্যে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো- ৩৫১টি কেন্দ্র (দুই-তৃতীয়াংশের বেশি), আর ১২৯টিকে সাধারণ কেন্দ্র হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
তিনি জানান, ৫৭টি ওয়ার্ডে নির্বাহী হাকিম থাকবেন ৭৬ জন, সঙ্গে বিচারিক হাকিমও থাকবেন। র্যাবের ৩০টি টিম থাকবে। বিজিবির থাকবে ১৩টা প্লাটুন, ২০জন বেশি থাকবে। এছাড়া স্ট্রাইকিং ফোর্স পুলিশের ১৯টি ও মোবাইল টিম হিসেবে ৫৭টি টিম থাকবে। গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্য ১৭ ও সাধারণ কেন্দ্রে ১৬ জন সদস্য থাকবেন।
‘অর্থাৎ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অসংখ্য সদস্য মোতায়েন থাকবে। যাতে কোনো রকম বিশৃঙ্খলা না হয়। যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার চেষ্টা করবে, সে যে দলের বা যেই হোক না কেন তাকে সাথে সাথে আইনের আওতায় আনার জন্য বলা হয়েছে।’
মেয়র প্রার্থীরা কে, কোথায় ভোট দেবেনঃ
মেয়র প্রার্থীদের মধ্যে নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মো. আজমত উল্লা খান টঙ্গীর আরিচপুর এলাকার টঙ্গী দারুস সালাম মাদ্রাসা, লাঙ্গল প্রতীকে জাতীয় পার্টির এম এম নিয়াজ উদ্দিন টঙ্গী কলেজ রোড এলাকার নিউ ব্লুন হাইস্কুল কেন্দ্রে ভোট দিবেন।
হাতপাখা প্রতীকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী গাজী আতাউর রহমান টঙ্গীর এরশাদ নগরের চাংকির টেক এলাকার হাজী আলমাছ আলী উচ্চ বিদ্যালয়, গোলাপ ফুল প্রতীকে জাকের পার্টির মো. রাজু আহাম্মেদ এরশাদ নগরের চাংকির টেক এলাকার হাজী আলমাছ আলী উচ্চ বিদ্যালয়, মাছ প্রতীকে গণফ্রন্টের আতিকুল ইসলাম নলজানির বাড়িআলী উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দেবেন বলে তারা জানিয়েছেন।
এ ছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে টেবিল ঘড়ি প্রতীকের জায়েদা খাতুন নগরীর কানাইয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, হাতি প্রতীকে সরকার শাহনূর ইসলাম রনি টঙ্গী শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার হাসপাতাল, ঘোড়া প্রতীকে মো. হারুন-অর-রশীদ উত্তর খাইলকুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিজেদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।
সংবাদটি শেয়ার করুন