রাজশাহী-ঢাকা-খুলনা রেল সড়কে টাঙ্গাইলের ৩টি স্টেশনের যাত্রীরা চোর, ডাকাত ও ছিনতাইকারীদের হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছে। এই রেল স্টেশনগুলোতে অপরাধ প্রবণতা আরও বেড়ে গেছে। এসব ট্রেন স্টেশনে আইন-শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর নজরদারি না থাকায় প্রতিনিয়ত যাত্রীরা চোর ডাকাত ও ছিনতাইকারীর কবলে পড়ে টাকা-পয়সা মালামাল খোয়াচ্ছে। গত ১১ বছরে এ পথে ডাকাত ও ছিনতাইকারী চক্রের হাতে নিহত হয়েছে কমপক্ষে ২৫০ জন।
এই তিনটি স্টেশনের আশপাশ মাদকসেবী ও মাদক ব্যবসায়ীদের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে। প্রতিদিন মাদকের চালান আসছে এই রোডে। চোর, ডাকাত, ছিনতাইকারী, মাদকসেবী এবং মাদক ব্যবসায়ীরা জোট বেঁধে যাত্রীদের নগদ টাকাসহ মালামাল লুটে নিচ্ছে। ঘটনার পর রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ এবং স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনকে অবহিত করার পরও ক্ষতিগ্রস্ত যাত্রীরা কোনো প্রতিকার পাচ্ছে না। ১১ বছর ধরে টাঙ্গাইলের ৩টি রেল স্টেশনে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাই প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। ডাকাত ও ছিনতাইকারী যাত্রীদের টাকা-পয়সা ও মালামাল লুটে নেয়ার পর তাদের হত্যা করে লাশ ট্রেন থেকে ফেলে দিচ্ছে। এভাবে গত ১০ বছরে অন্তত ২৫০ জনকে হত্যা করা হয়েছে বলে অনুসন্ধানে জানা গেছে।
গত শনিবার ঢাকা থেকে মির্জাপুর রেল স্টেশনে আসার পথে জাহান আরা নামে প্রাইমারি স্কুল শিক্ষিকার কন্যা ছিনতাইকারীর কবলে পড়ে মোবাইল, নগদ টাকা ও মালামাল খুইয়েছেন। তারা মির্জাপুর রেলওয়ে পুলিশ ও থানা পুলিশকে ঘটনাটি অবহিত করলেও মালামাল উদ্ধার বা কাউকে আটকও করতে পারেনি। মির্জাপুর রেল স্টেশনে যাত্রীসংখ্যা বেশি হয়। গত ১১ বছরে এখানে কয়েক সহস্র চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে।
টাঙ্গাইলের গারিন্দা, মির্জাপুর উপজেলার মহেড়া, কালিয়াকৈরের মৌচাক, জয়দেবপুর এবং মির্জাপুর রেল স্টেশন চোর, ডাকাত আর ছিনতাইকারী চক্রের নিরাপদ আশ্রয়স্থলে পরিণত হয়েছে। চলে মাদকের জমজমাট ব্যবসা। এসব স্টেশনে যাত্রীদের নিরাপত্তা নেই। স্টেশনগুলো দুর্গম এলাকায় এবং রাস্তা অত্যন্ত নাজুক। রাস্তা ফাঁকা থাকায় চোর, ডাকাত ও ছিনতাইকারীদের সুবিধা হয় বেশি। গুরুত্বপূর্ণ মির্জাপুর সদর রেল স্টেশন। মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, নার্সিং স্কুল ও কলেজ, ভারতেশ্বরী হোমস, ক্যাডেট কলেজ, পুলিশ ট্রেনিং সেন্টার, গোড়াই শিল্পাঞ্চল ও বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠান রয়েছে। প্রতিদিন শত শত যাত্রী যাতায়াত করে।
এদিকে স্টেশনগুলো সমস্যায় জর্জরিত। দুজন স্টেশন মাস্টার জানান, প্লাটফর্মের সমস্যা, আসন সমস্যা, জনবলের সংকট, বুকিং ক্লার্ক, নাইটগার্ড নেই, নিরাপত্তার জন্য স্টেশনে কোনো আনসার এবং পুলিশ নিয়োগ দেয়া হয়নি। জিআরপি থানার ওসি বলেন, স্টেশনেই যাত্রীদের নিরাপত্তার জন্য আনসার ও পুলিশ থাকার কথা। কিন্তু রেলওয়ে বিভাগে জনবল কম থাকায় ঐসব স্টেশনে আনসার বা পুলিশ দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। রেলওয়ের পশ্চিম জোনের ডেপুটি রিজিওনাল ম্যানেজার পংকজ কুমারের সঙ্গে একাধিকবার তার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিভিন্ন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ট্রেনে চুরি ডাকাতি আগের চেয়ে কমে গেছে। এ ব্যাপারে মির্জাপুর থানায় যোগাযোগ করা হলে পুলিশ জানায়, রেল স্টেশনে নিরাপত্তার দায়িত্ব জিআরপি পুলিশের। মির্জাপুর থানা পুলিশ যাত্রীদের সহযোগিতা ও নিরাপত্তা দিয়ে আসছে।
RED TIMES LIMITED
116-117, Concord Emporium, Kataban, Dhaka-1205.
Mobile: 017111-66826
Email: [email protected]
Web Design by: SuperSoftIT.com