ঢাকা ১৪ই অক্টোবর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৯শে আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ই রবিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি


জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা উৎসব শুরু আজ

redtimes.com,bd
প্রকাশিত জুন ২০, ২০২৩, ১০:৫৫ পূর্বাহ্ণ
জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা উৎসব শুরু আজ

ফাইল ছবি

নিজস্ব প্রতিনিধি:

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় অনুষ্ঠান শ্রী শ্রী জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা উৎসব শুরু হচ্ছে মঙ্গলবার (২০ জুন)। আগামী ২৭ জুন উল্টো রথযাত্রার মধ্য দিয়ে এ উৎসব শেষ হবে।

এদিকে রথযাত্রা উপলক্ষ্যে বিশেষ ট্রাফিক নির্দেশনা দিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগ থেকে এ বিষয়ে নির্দেশনা দিয়ে জানানো হয়, রথযাত্রা উপলক্ষ্যে বিভিন্ন মন্দিরে নানা মাঙ্গলিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। রাজধানী ঢাকায় আন্তর্জাতিক কৃষ্ণ ভাবনামৃত সংঘ (ইসকন) রথযাত্রা উপলক্ষ্যে ৮ দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।

প্রধান রথযাত্রা মঙ্গলবার বিকেল ৩টায় রাজধানীর স্বামীবাগ ইসকন মন্দির থেকে শুরু হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে ঢাকেশ্বরী মন্দিরে গিয়ে শেষ হবে। উল্টো রথযাত্রা আগামী ২৭ জুন বিকেল ৩টায় ঢাকেশ্বরী মন্দির হতে শুরু হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে স্বামীবাগ ইসকন মন্দিরে এসে শেষ হবে।

রথযাত্রাটি যেসব রাস্তা প্রদক্ষিণ করবে

স্বামীবাগ রোডের স্বামীবাগ আশ্রম (ইসকন, ঢাকা) হতে→জয়কালী মন্দির মোড়→ইত্তেফাক মোড়→শাপলা চত্বর→দৈনিক বাংলা মোড়→রাজউক ক্রসিং→গুলিস্তান→গোলাপশাহ মাজার→পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স→সরকারি কর্মচারী হাসপাতাল→হাই কোর্ট মাজার→দোয়েল চত্বর→কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার→জগন্নাথ হল→পলাশী→ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে এসে শেষ হবে।

রথযাত্রা উপলক্ষ্যে এ সময়ে উপরোক্ত রোডে চলাচল করা যানবাহনকে বিকল্প রাস্তা ব্যবহার করার জন্য অনুরোধ করেছে ডিএমপি।

উল্লেখ” ভক্তরা বিশ্বাস করেন মহাপ্রভু জগন্নাথদেব সাত দিন রানি গুন্ডিচা মন্দিরে অবস্থান করেন। প্রতি বছর, হাজার হাজার ভক্ত এবং পর্যটকরা জুলাই মাসে রথযাত্রার আয়োজন করা হয়।

রথযাত্রা কি?
রথযাত্রা সনাতন ধর্মের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব এবং বাঙালি সংস্কৃতি ও সাহিত্যের অবিচ্ছেদ্য অংশ যেখানে আষাঢ় মাসের পূর্ণিমা তিথিতে কাঠের তৈরি রথে করেবিগ্রহকে পরিভ্রমন করানো হয়। কালক্রমে ইহা হয়ে উঠেছে ধর্ম বর্ণ গোত্র নির্বিশেষের মিলনতীর্থ।

রথযাত্রার ইতিহাস-


রথযাত্রার ইতিহাস থেকে বৈদিক শাস্ত্রের কথাও জানা যায়। দ্বাপর যুগে দুষ্টের দমন, শান্তি ও আনন্দময় এবং হিন্দু ধর্মীয় সংস্থা স্থাপনের জন্য ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বিশ্বভুবনে এসেছেন। জগন্নাথ আসলে শ্রীকৃষ্ণ অবতার একটি বিশেষ রূপ।

ভগবান শ্রীকৃষ্ণ জন্ম লগ্ন থেকে বিভিন্ন লীলার মাধ্যমে তাঁর স্বরূপ উদঘাটন করেন। অবশেষে বৃন্দাবন লীলা শেষ করে শ্রীকৃষ্ণ দ্বারকায় চলে যান এবং শ্রীকৃষ্ণ দ্বারকায় রাজা হন। শ্রীকৃষ্ণ রাজাকে বৃন্দাবন বারবার আকৃষ্ট করে তোলে।

একবার সূর্য গ্রহনের সময় দ্বারকায় সমস্ত বসবাসকারীদের নিয়ে শ্রীকৃষ্ণ পুণ্য লাভের জন্য কুরুক্ষেত্রে যান। এইদিকে সমস্ত বৃন্দাবন বাসী সূর্য গ্রহনের পুণ্য লাভের জন্য কুরুক্ষেত্রে আসে। অনেকটা সময় অতিবাহিত হওয়ার পর বৃন্দাবনের বজ্রবাসীদের সাথে সাক্ষাৎ হয় স্বয়ং ভগবান জগন্নাথ শ্রীকৃষ্ণের সাথে। ভগবান জগন্নাথ জগদীশ্বর নামেও পরিচিত।

বজ্রবাসীরা শ্রীকৃষ্ণকে রাজা হিসাবে না দেখে, বৃন্দাবনের কৃষ্ণ লীলা হিসাবে দেখতে চাইলেন সকলেই, সকল বৃন্দাবনের বাসীদের সাথে বাল্য শ্রীকৃষ্ণ লীলা করছেন।

বজ্রবাসীরা সকলেই প্রার্থনা করলেন হাত জোড় করে শ্রীকৃষ্ণের কাছে। হে প্রভু আমরা প্রত্যেকেই এখানে রয়েছি, তুমিও এখানে রয়েছো। একটি বিষয়ে আমাদের খুব অভাব রয়েছে, সেটি হল মধুময় বাল্য লীলা, চলো আমরা সকলেই মধুময় বাল্য লীলা বৃন্দাবনে ফিরে যাই। এইকথা বলেই সকল বৃন্দাবনবাসী, শ্রীকৃষ্ণ, বলরাম ও সুভদ্রা দেব দেবীরা সবাই মিলে রথের ঘোড়া টেনে টেনে বৃন্দাবনে নিয়ে যান।

সেই দিনকেই স্মরণ রেখেই ভক্তরা আপন মনে ও আন্তরিকতার সাথে রথযাত্রা আয়োজন করা হয়ে থাকে। ভক্তরা রথের দড়ি টেনে নিয়ে বৃন্দাবনে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। ভক্তরা রথের রশি ধরে ভগবান জগন্নাথ( শ্রীকৃষ্ণকে) অনুভব করে। আর পরম্পরা ভগবান শ্রীকৃষ্ণ সকল ভক্ত বাসীকে পুণ্য লাভের আশীর্বাদ করেন।

জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রা এই তিন দেবতাকে টেনে জগন্নাথ দেবের মাসির বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। সাত দিন পরে মাসির বাড়ি থেকে রথ যেখানে থাকে। সেই স্থানে আবার রথের রশি টেনে টেনে নিয়ে আসা হয় একে উল্টো রথ বা ফেরত রথ বলা হয়।

উল্টোরথের পরে আসে পূর্ণিমা। পূর্ণিমার দিনে বিশেষ ভাবে রথ টানার প্রচলন রয়েছে। একেই পূর্ণিমার রথ বলা হয়।

সংবাদটি শেয়ার করুন

October 2024
S M T W T F S
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031