আহত অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স করে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয় । উন্নত চিকিৎসার জন্য এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) নেওয়া হয় তাকে ।
৩ মার্চ শনিবার রাত ১০টা ২৩ মিনিটে সিলেটের ওসমানী বিমানবন্দর থেকে ঢাকার উদ্দেশে উড়াল দেয় এয়ার অ্যাম্বুলেন্স।
এর আগে ৯টা ৫০ মিনিটে তাকে হাসপাতাল থেকে বিমানবন্দরে যেতে রওনা দেওয়া হয় বলে জানান ওসমানী মেডিকেল হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল ডা. একে মাহবুবুল হক।
তিনি জানান, ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল শঙ্কামুক্ত। তার মাথায় দুটি, পিঠে একটি ও বাম হাতে একটি আঘাত রয়েছে। ফলে কিছুটা রক্ষকরণ হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) নেওয়া হচ্ছে।
এর আগে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ ও হাসপাতালের পরিচালকের বরাত দিয়ে সিলেট মহানগরের সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন আহমেদ জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফোনে খোঁজ নিয়েছেন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন জাফর ইকবালের অবস্থা শঙ্কামুক্ত। তিনি স্বাভাবিক কথাবার্তা বলছেন।
বিকেল সাড়ে পাঁচটার পরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চে জাফর ইকবালের ওপর হামলা হয়। সেখানে ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের দুদিনব্যাপী ‘ইইই ফেস্টিভ্যাল-২০১৮’-এর সমাপনী অনুষ্ঠান চলছিল। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জাফর ইকবাল।
অনুষ্ঠান চলাকালে ছুরি হাতে একজন ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালের ওপর হামলা করেন। এ সময় ইব্রাহিম নামে পুলিশের এক সদস্যও আহত হয়েছেন। হামলাকারীকে আটক করেন শিক্ষার্থীরা, তার সঙ্গে থাকা আরেকজন পালিয়ে যায়।
ঘটনার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করেছেন। আটক হামলাকারীকে বেদম প্রহার করেছেন শিক্ষার্থীরা।
চলতি বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি ছয় শিক্ষার্থীকে র্যাগিংয়ের নামে সারা রাত মানসিক নির্যাতন করার অভিযোগে ২১ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট। এর মধ্যে সিভিল অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের (সিইই) শিক্ষার্থী আশিক আহমেদ হিমেল ও হামিদুর রহমান রঙ্গনকে আজীবন বহিষ্কার করা হয়েছে।
ওই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ২ মার্চ ‘ইইই ফেস্টিভ্যাল-২০১৮’ উদ্বোধনকালে মুহম্মদ জাফর ইকবাল জানান, সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ে র্যাগিংয়ের যে ঘটনা ঘটেছে, তা নিয়ে তিনি শঙ্কিত।
র্যাগিংয়ের দায়ে দুই শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আজীবন বহিষ্কারের শাস্তিকে সমর্থন করে জাফর ইকবাল বলেন, ‘যারা এ ধরনের কাজ করেছে, তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার কোনো অধিকার নেই। যখন তাদের অপরাধ প্রমাণ করে শাস্তি দেওয়া হয়েছে, সেই শাস্তিটা গ্রহণ করে ওদের ক্ষমা চাওয়া উচিত ছিল। কিন্তু সেটা না করে তারা আন্দোলন করা শুরু করেছে। আন্দোলনে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাকি ছাত্রদের কষ্ট দিচ্ছে এবং শিক্ষক-কর্মকর্তাদের সঙ্গে বেয়াদবিও করেছে।
সংবাদটি শেয়ার করুন