২৯শে মে ২০২২ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই জ্যৈষ্ঠ ১৪২৯ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৭:৫৮ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০১৬
এসবিএন: পরিবারের কারো সঙ্গে ঝগড়া বিবাদ করে রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে যে কেউ দুর্ঘটনা ঘটাতে পারে৷
আবার কেউ মানসিকভাবে আঘাত পেয়ে রাগের বশবর্তী হয়ে জীবন ধ্বংসকারী কোন ঔষধ পান করে৷ এছাড়াও বড়দের অসতর্কতার কারণে বাচ্চারা ভুলবশত বিষ পান করে।
প্রায়ই বিষপানের রোগী পাওয়া যায় সেগুলোর মধ্যে উলেখযোগ্য: কীটনাশক পান করা, অনেক পরিমাণে ঘুমের ঔষধ খাওয়া, কেরোসিন পান করা, ধুতরার বীজ খাদ্যের সঙ্গে মিশিয়ে খাওয়া, কোনো ঔষধ ভুলক্রমে বেশি পরিমাণে খেয়ে ফেলা, বিষাক্ত মদ্যপান বা অতিরিক্ত মদপান ইত্যাদি৷ বিষপানের রোগী দেখা মাত্র বিষপানের ধরন সম্পর্কে আন্দাজ করা সম্ভব৷ সাধারণভাবে বিষপানের পর দেরী না করে নিম্নরূপ ব্যবস্থা নিতে হবে এবং হাসপাতলে পাঠাতে হবে।
রোগী শ্বাস নিতে না পারলে তাকে কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাস দিতে হবে। সজ্ঞান রোগীকে সর্বপ্রথম একগ্লাস পানি বা দুধ পান করানো ভালো কারণ এতে বিষ পাতলা হয়ে যায় ও বিষের ক্ষতির প্রভাব কমে আসে৷
শিশুদের ক্ষেত্রে আধা গ্লাসের মতো পানি বা দুধ রোগীকে পান করানো ভালো৷ অজ্ঞান রোগীকে তরল দেয়া যাবে না৷ তাকে সুবিধাজনক স্থানে শুইয়ে দিতে হবে।
রোগীকে বমি করানো উচিত কিনা তার সিদ্ধান্ত নিতে হবে৷ কারণ সকল বিষপানের পর বমি করানো যাবে না৷ রোগীর শরীরে খিঁচুনি থাকলে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় রোগীকে বমি করানো যাবে না৷
কিছু বিষ যা প্রবেশের সময় মুখ, মুখগহ্বর ও অন্ননালীতে প্রদাহের বা দগ্ধতার সৃষ্টি করে অথবা ফুসফুসে প্রবেশ করে সংক্রমণের সৃষ্টি করে এরূপ বিষপানের রোগীকে কোনক্রমেই বমি করানো উচিত নয়৷
কারণ বমি করার সময় উল্লেখিত পদার্থগুলো পুনরায় ক্ষতিসাধন করে ক্ষতের পরিমাণ বৃদ্ধি করে।
পোড়া ও ক্ষত সৃষ্টিকারী বিষ:
অম্ল বা এসিড
ক্ষার বা এলকালি
গৃহে ব্যবহৃত বিশোধক
গোসলখানা পায়খানা নর্দমা পরিষ্কারকারক বিশোধক
প্রদাহ সৃষ্টিকারী বিষ:
কেরোসিন
তারপিন তেল
রঙ এবং রঙ পাতলাকারক দ্রব্য
পেট্রোলিয়াম ও পেট্রোলিয়াম জাতীয় দ্রব্য
রোগী কোন ধরনের বিষ পান করেছে তা রোগীর মুখ, মুখগহ্বর ও শ্বাস-প্রশ্বাস পরীক্ষা করলে অতি সহজেই অনুমান করা যায় পোড়া ও ক্ষত সৃষ্টিকারী বিষপানে রোগীর মুখ ও মুখগহ্বরে পোড়া ক্ষত বা ফোসকা দেখা যাবে
কেরোসিন জাতীয় বিষপানে রোগীদের শ্বাসে উক্ত দ্রব্যের গন্ধ পাওয়া যাবে
৪ ঘণ্টার ভেতর বিষ খেয়ে থাকলে এবং জ্ঞান থাকলে রোগীকে নিম্নলিখিতভাবে বমি করানো যেতে পারে:
মুখের মধ্যে আঙুল প্রবেশ করিয়ে বমি করানো যায় খারাপ স্বাদযুক্ত ডিমের সাদা অংশ ও কুসুম স্বল্প গরম দুধসহ বা স্বল্প গরম লোনা পানি পান করালে অনেকেরই সহজে বমি হয়ে যায়৷
তিতা কোন দ্রব্য মুখের মধ্যে দিয়েও বমি করানো যেতে পারে বমি করানোর সময় বিশেষভাবে নজর দিতে হবে যেন বমিকৃত কোনো জিনিস বা পানীয় ফুসফুসে প্রবেশ না করে৷
এজন্য বমি করানোর সময় রোগীর মাথা নিচের দিকে ও মুখ পাশে কাত করিয়ে রাখতে হবে৷ হাসপাতালে রোগীকে বিষ অপসারণের ক্ষেত্রে রাইলস টিউবের (একটি বিশেষ নল) সাহায্যে করা যেতে পারে৷
বিষের বিরুদ্ধে কার্যকর ঔষধ প্রয়োগ: কিছু বিষকে নিষ্ক্রিয় করার ঔষধ রয়েছে৷ রোগী কোন বিষ দ্বারা আক্রান্ত তা জানতে পারলে সেই বিষকে নিষ্ক্রিয় করা ঔষধ প্রয়োগ করে রোগীর অবস্থার উন্নতি করা সম্ভব৷ এক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে৷
কেরোসিনের বিষক্রিয়ার ক্ষেত্রে: সাধারণত বাচ্চারা না বুঝে কেরোসিন তেল খেয়ে ফেলে৷ এ ধরনের রোগীর বমি, মুখ, শ্বাস-প্রশ্বাস, প্রস্রাব ও কাপড় চোপড় থেকে কেরোসিনের গন্ধ পাওয়া যাবে৷ গলায় জ্বালাপোড়া ও ব্যথা থাকবে৷ পাতলা পায়খানা ও পেটে ব্যথা থাকবে৷ শ্বাস-প্রশ্বাস ঘন ঘন হবে৷ বুকের মধ্যে ঘড়ঘড় শব্দ হতে পারে, জ্বর থাকতে পারে৷ নাড়ি দুর্বল ও অনিয়মিত হতে পারে৷
এ ধরনের রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে পাঠাতে হবে৷ এই রোগীর স্টোম্যাক ওয়াশ দেয়া বা বমি করানো যাবে না। এ্যান্টিবায়োটিক দিতে হবে যাতে নিউমোনিয়া বা ফুসফুসে অন্য কোনো সংক্রমণ না হতে পারে ।
এসিড কিংবা ক্ষারের বিষক্রিয়ার ক্ষেত্রে:
রোগীকে বমি করানোর চেষ্টা করা যাবে না
ক্ষতের ওপর প্রলেপ সৃষ্টি করে এমন খাদ্যবস্তু যেমনঃ দুধ, ডিমের সাদা অংশ খাওয়ানো যেতে পারে।
মুখ বা শরীরের কোনো অংশে এসিড অথবা ক্ষার পড়লে সেখানে প্রচুর পানি ঢেলে ধুয়ে ফেলতে হবে।
এসিড খেলে এন্টাসিড সাসপেনশন দেয়া যেতে পারে
যত দ্রুত সম্ভব রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে
ঘুমের ঔষধ বিষক্রিয়ার ক্ষেত্রে বমি করানোর চেষ্টা করতে হবে
ঠিকমতো বমি করানো না গেলে স্টোমাক ওয়াশ করানোর জন্য নিকটস্থ হাসপাতালে পাঠাতে হবে
প্রতিরোধের উপায়: আমাদের দেশের ক্ষেত-খামারে পোকা মারার জন্য অনেক ধরনের বিষ ব্যবহার করা হয়ে থাকে৷ এ ছাড়া কেরোসিন, ঘুমের ওষুধ ইত্যাদি দিয়ে বিষক্রিয়া ঘটতে পারে৷ দুর্ঘটনাক্রমে ঘটে যাওয়া বেশিরভাগ বিষক্রিয়া প্রতিরোধ করা সম্ভব৷
বিষক্রিয়া চিকিৎসার চেয়ে এর প্রতিরোধ নিরাপদ এবং সহজ৷ নিজের ঘরবাড়ি, কর্মস্থলকে নিরাপদ রাখার জন্য কৃষক, কলকারখানায় ও মাঠে-খামারে নিয়োজিত কর্মী, শিক্ষক, স্বাস্থ্যকর্মী, বাবা-মাসহ ছাত্র-ছাত্রী কিংবা ছেলেমেয়ে সবার ভূমিকা রয়েছে।
যে কোনো ধরনের কেমিক্যাল বা রাসায়নিক সামগ্রী নিরাপদভাবে ব্যবহার ও নাড়াচাড়া করুন রাসায়নিক সামগ্রী নিরাপদে রাখুন৷ ব্যবহার করে তা সরিয়ে নিরাপদে রেখে দিন৷ শিশুর নাগালের বাইরে কীটনাশক, ঔষধ ও পরিষ্কারকরণ সামগ্রী (ডেটল, স্যভলন ইত্যাদি) রাখুন।
Editor in Chief
Contact: 017111-66826
National Desk In-charge
Sumon Suddha
Contact: 01710010218
RED TIMES LIMITED
116-117, Concord Emporium,
Kataban, Dhaka-1205.
Mobile: 017111-66826
Email: redtimesnews@gmail.com