বুধবার পোপ তার সাপ্তাহিক সমাবেশে বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের উচিত জেরুজালেম নিয়ে স্থিতাবস্থা মেনে চলা এবং মার্কিন দূতাবাসকে জেরুজালেমে স্থানান্তর না করা।ভ্যাটিকানের পোপ ফ্রান্সিস জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী ঘোষণা না দিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে আহবান জানিয়ে বলেছেন, তার উচিত এ বিষয়ে ‘স্থিতাবস্থা’ মেনে চলা উচিত এবং মুসলিম বিশ্বকে উত্তপ্ত করা উচিত নয়।
ভ্যাটিকান ফিলিস্তিন-ইসরায়েল দ্বন্দ্বে ‘টু-স্টেট’ সলিউশন বা দুই রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার ব্যাপারে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। তবে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিন দুই পক্ষই এতদিন জেরুজালেমকে শান্তি প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে মেনে আসছিল। পোপ এও বলেন ট্রাম্প জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী ঘোষণা করতে যাচ্ছেন যা মুসলিম বিশ্বকে উত্তপ্ত করে তুলবে। এমনকি তা বিশ্বে দ্বন্দ্বকে আরো উস্কে দেবে।
এক মার্কিন শীর্ষ কর্মকর্তা বুধবার জানান, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী ঘোষণা করতে যাচ্ছেন। কিন্তু অন্যান্য মার্কিন শীর্ষ কর্মকর্তারা বলছেন, গত এক দশক ধরে মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন নীতির পরিসমাপ্তি ঘটতে যাচ্ছে এবং এর ফলে মধ্যপ্রাচ্যে সন্ত্রাস আরো বেড়ে যাবে।
ভ্যাটিকানে সাপ্তাহিক সমাবেশে পোপ বলেন, সকল পক্ষের উচিত জাতিসংঘের প্রস্তাবনাকে সন্মান দেখানো, জেরুজালেমকে সকল বিতর্কের উর্ধে রাখা কারণ এ স্থানটি ইহুদি, খ্রিস্টান ও মুসলমানদের জন্যে অতি পবিত্র। আমি আন্তরিকভাবে সকল পক্ষকে জেরুজালেম শহরকে নিয়ে স্থিতাবস্থা মেনে চলার আহবান জানাচ্ছি। কারণ তা জাতিসংঘের প্রস্তাবিত মীমাংসারই অংশ।
পোপ বলেন, ফিলিস্তিনিরা তাদের ভবিষ্যত স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্যে পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী করার প্রস্তাব দিয়েছে যেখানে ইসরায়েল পুরো জেরুজালেমকে দেশটির ‘ একীভূত ও শ্বাশত’ রাজধানী ঘোষণা করেছে। এ অবস্থায় আমি নিশ্চুপ থাকতে পারি না। গত কয়েকদিন বিষয়টি নিয়ে যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে তাতে আমি গভীর উদ্বেগ জানাচ্ছি। পোপ বলেন, জ্ঞান এবং প্রবল বুদ্ধি এধরনের উত্তেজনাকর পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে পারে যা বিশে ইতিমধ্যে অনেক নিষ্ঠুর দ্বন্দ্বের সৃষ্টি করেছে।
২০১২ সালে ভ্যাটিকান জেরুজালেমে স্থিতাবস্থা বজায় রাখার আহবান জানালে তা প্রবল আন্তর্জাতিক সমর্থন পায়। ইহুদি, মুসলিম ও খিস্টানদের মধ্যে ধর্মীয় স্বাধীনতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই ভ্যাটিকান এ আহবান জানায়। জেরুজালেমকে একটি পবিত্র শহর বিবেচনা করে তিনটি ধর্মের মানুষ যাতে এ শহরে নিরাপদে প্রবেশ করতে পারে, তাদের উপসানালয়ে যেতে পারে, ‘স্থিতাবস্থার’ মূল লক্ষ্যই ছিল এটি। সাপ্তাহিক এ ভাষণের আগে পোপ ফিলিস্তিনিদের একটি গ্রুপের সঙ্গে আন্তঃধর্মীয় সংলাপে অংশ নেন। পোপ বলেন জেরুজালেম খ্রিস্টানদের জন্যে পবিত্র ভূমি এবং ¯্রস্টা ও মানবকল্যাণে প্রার্থনা করার জন্যে এ ভূমি একটি অনবদ্য স্থান। জেরুজালেমে শান্তি বজায় রাখার জন্যে তিনি সুশীল সমাজ ও ধর্মীয় নেতাদের মধ্যে সংলাপের আহবান জানান।
পোপ বলেন, সকল ধর্মের মানুষের মধ্যে সংলাপের জন্যে প্রাথমিক শর্তটি হচ্ছে পারস্পরিক শ্রদ্ধা এবং এ সন্মানকে শক্তিশালী করার জন্যে একটি প্রতিশ্রুতি যা সকল মানুষের অধিকারের স্বীকৃতি তা যেখানেই হোক না কেন। হয়ে উঠবে। গত মঙ্গলবার পোপ ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন। আমাদের সময়.কম