২রা অক্টোবর ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ | ১৭ই আশ্বিন ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১২:৫৩ পূর্বাহ্ণ, এপ্রিল ১২, ২০১৮
মাননীয় উপাচার্য এবং বন্ধু আখতার,
একই সাথে পড়েছি আমরা, যদিও আমার বিভাগ ছিলো আন্তর্জাতিক সম্পর্ক; কিন্তু তোমার পদবীকে শ্রদ্ধা জানিয়ে সম্ভাষণ করছি ‘আপনি’ করে।
আপনি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোটা সংস্কারে আন্দোলনরত ছাত্র, ছাত্রীদের পাশে দাঁড়ান। রাস্তায় ওদের মিছিলে গিয়ে ওদের খোঁজ করুন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আপনি ওদের অভিভাবক। যদিও কোটা সংস্কার আন্দোলন সরকারের সাথে আন্দোলনকারীদের। কিন্তু ঝড়টা চলছে আপনার বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে।
আপনার প্রতি আমার এ আহ্বান একজন পিতা হিসেবে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্র হিসেবে, একজন নাগরীক এবং এ দেশের একজন কবি ও কথাসাহিত্যিক হিসেবে।
মাননীয় উপাচার্য, ভয় নেই আপনার, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেও কোটা সংস্কার ও আন্দোলনের গুরুত্ব অনুধাবন করেছেন বলেই সংশ্লিষ্টদের এ বিষয়ে কাজ করতে নির্দেশ দিয়েছেন।
সরকারের মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকও তাদের সাথে আলোচনা করেছেন।
ওরা এখনো আন্দোলন করছে। ওরা উত্তপ্ত। স্থবিরতা ঝেড়ে ওদের পাশে গিয়ে দাঁড়ান সকলকে নিয়ে।
আপনি শুধু ওদের পাশে গিয়ে হাজির হবেন, এতটুক নয়। প্রতিটি হলে শিক্ষকসহ গিয়ে সকলের খোঁজ নিন। ছাত্রলীগ সম্পর্কে কিছু অভিযোগ আসছে। তা থাকলে, তাদেরকে সেসব নেতিবাচক কাজ হতে বিরত রাখতে কঠোর হন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করুণ।
বিশ্বাস করি আমাদের জননেত্রী আপনাকে ধন্যবাদই দেবেন। আপনি বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিভাবক হিসেবে শিক্ষার্থীদের ভালোবাসা আর শ্রদ্ধা অর্জন করবেন।
একইসাথে অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় এর উপাচার্যবৃন্দের সাথে পরিস্থিতি সমন্বিত করুন।
আন্দোলনকারীরা নেতৃত্ব পথহারা। ওদেরকে সাথে নিয়ে সরকারের সাথে প্রয়োজনে বসুন। ওদের মধ্যে কে শিবির করে, কে বাম, আর কে ছাত্রলীগ বা সাধারণ, – তা বিবেচ্য যেনো না হয়। ওরা আমাদের সন্তান।
ওদের মাঝে কেউ যদি থেকেও থাকে আপনার বাসভবনে আগুন দেয়া, থাকুক। ভয় নেই। আপনার উদারতা ওদেরকে প্রকৃত মানুষ হতে সহায়তা করবে। আপনার বাসভবনে আগুনকালীন ট্রমায় আক্রান্ত আপনার সন্তানদেরকে শির উঁচু করতে সাহায্য করবে আপনার ভালোবাসা।
আর আমাদের মঙ্গল শোভাযাত্রা হবেই। শিল্পীরা জানে মাথা তুলে আপন গৌরব রক্ষা করতে। কিন্তু অভিমানে বা ক্রোধে ওদের থেকে দূরে সরে থাকা যাবে না।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা আগ্নেয় লাভা। যেদিকে ঢালু সেদিকে গড়িয়ে যাবে। আমি ঘুমন্ত আগ্নেয়গিরি বিসুভিয়াসের জ্বালামুখে গিয়েছি। ওখান থেকে চারপাশ দেখেছি, দেখেছি পম্পেই নগরী কিভাবে গড়িয়ে পড়া লাভায় জ্বলে খাঁক হয়ে গেছে। আপনি ওদেরকে ভুল পথে পরিচালিত হতে ফেরান। ওরা যেনো নিজেরা জ্বলে, পুড়ে না শেষ হয়।
পিতার বিশ্বাস আর ভালোবাসা নিয়ে ওদের সাথে হাঁটুন। ক্যাম্পাস হতে পুলিশ বাহিনীকে দূরে, নিরাপদ অবস্থানে থাকতে বলুন।
আমাদের এ তরুণ, তরুণীরা চায় একটি সাংবিধানিক অধিকার, বাস করবার জন্য চায় একটি ইতিবাচক ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ।
শুভেচ্ছা জানবেন।
ইতি
মুজতবা আহমেদ মুরশেদ
ঢাকা।
১১ এপ্রিল ২০১৮।
RED TIMES LIMITED
116-117, Concord Emporium,
Kataban, Dhaka-1205.
Mobile: 017111-66826
Email: redtimesnews@gmail.com