১৮ই এপ্রিল ২০২১ ইং | ৫ই বৈশাখ ১৪২৮ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১০:২২ পূর্বাহ্ণ, নভেম্বর ১৯, ২০১৭
পারিবারিক, আর্থ-সামাজিক চাপ কিভাবে মানুষের জীবনের গতিপথ পাল্টে দেয়, তার-ই এক জ্বলন্ত নমুনা মোঃ ইব্রাহীম খলিল ও তার সহধর্মিনী সাদিয়া আফরিন। এই দম্পত্তি বর্তমানে যুক্তরাজ্য প্রবাসী, কিন্তু তাদের জীবন সেখানে অনিশ্চয়তায় পরিপূর্ণ। দুজনের প্রেম, পারিপারিক অসম্মিতিতে সে প্রেম-কে বিয়েতে পূর্ণতা দেয়া, ইব্রাহীম-এর রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা সরকার-বিরোধী রাজনৈতিক দলের সাথে, অর্থনৈতিক চাপ – সব মিলিয়ে তাদের যুগল জীবন শুরু থেকেই বিবিধ সমস্যার মুখোমুখি হয়ে আসছে। কিন্তু এইসব সমস্যা বিদেশ জীবনে গিয়েও শেষ হয়নি। দেশে ফেরাও সমস্যাসঙ্কুল। ইব্রাহীম ছাত্রদলের সাথে জড়িত ছিলেন অনেকদিন তার যুক্তরাজ্য প্রবাস জীবন শুরুর আগে থেকেই। যুক্তরাজ্যে উচ্চ শিক্ষার জন্যে যাওয়ার পরে দেশে তার রাজনৈতিক যোগসূত্রিতা কমে গেলেও পূর্ণ সমর্থন ও বিভিন্ন সাহায্য চলমান থাকে। বর্তমান সরকার এবং তার পূর্বে আর্মি-নিয়ন্ত্রিত তত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় আসার পরে ইব্রাহীম এবং তার সমমনা কর্মীরা চিহ্নিত হয়ে যায় এবং এর ফলভোগ করতে হয় তার পরিবারকে ইব্রাহীমের অনুপস্থিতিতে। ছাত্রলীগ এবং আওয়ামী লীগের অন্যান্য সমর্থক দ্বারা তার পরিবার বিভিন্ন হেনস্থা, হয়রানি ও হুমকির শিকার হয়। বর্তমানে তার পরিবার বলতে শুধু তার বৃদ্ধ মা ও বাবা আছেন দেশে। তার একমাত্র ভাই ও বড় বোন দুজনেই যুক্তরাজ্যে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন। ভাই এর বউ ইতালিয়ান। বোন এর জামাই থাকেন আমেরিকায়। বোন এর একমাত্র মেয়ের সমস্ত দেখাশোনা ইব্রাহীম ও সাদিয়া করেন। ভাই-বোনের সমর্থন থাকা সত্বেও ইব্রাহীম এর রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার কারণে তার দেশের পরিবারের হয়রানি মাত্রা ছাড়িয়ে গেলে তার বাবা-মা তার সাথে সম্পর্কচ্ছেদ করার সিদ্ধান্ত নেয়। এই সিদ্ধান্তের পেছনে ইব্রাহীমের সাদিয়ার সাথে সম্পর্কও ভূমিকা পালন করে বেশ। এই সম্পর্ক ও বিয়েতে ইব্রাহীম-এর পারিবারিক মতামত ছিলোনা একদমই। সাদিয়ার পরিবার গ্রাম-ভিত্তিক হওয়ায় এবং সামাজিক ও অর্থনৈতিক ও সামাজিক বৈপরিত্য খুব বেশি হওয়ার কারণে এই সম্পর্ক মেনে নিতে পারেনি ইব্রাহীমের বাবা মা। তাদের অন্য ছেলের বিয়েতেও তাদের কোনো সম্মতি ছিলো না এবং ইব্রাহীমের উপরে আশা-ভরসা ছিলো অনেক বেশি। এছাড়াও ইব্রাহীমের যুক্তরাজজে পড়াশোনার জন্যে নিজেদের জমানো ও বিভিন্ন ঋণ করে টাকা যোগাড় করেছিলেন এই আশায় যে ছেলে এই কষ্টের মূল্য দেবে একদিন এবং এই সমস্ত ঋণ শোধ করবে যখন প্রয়োজন পড়বে। কিন্তু এইসবের কিছুই হয়নই শেষতক। এই সমস্ত কিছুর কারণে ইব্রাহীমকে ত্যাজ্য করেছেন তার বাবা মা – আব্দুল খালেক (জন্মঃ ০৭/০৫/১৯৫১; পিতাঃ মরহুম আমজাদ আলি; মাতাঃ মরহুম সাবুরুন নেসা) এবং তার স্ত্রী খালেদা বেগম (জন্মঃ ০৫/০৫/১৯৬৪; পিতাঃ মরহুম মোঃ আলি, মাতাঃ মরহুম হায়াতুন নেসা), স্থায়ী ঠিকানাঃ ফ্ল্যাট ৪বি, ৫৯/ও, পূর্ব পান্থপথ, পশ্চিম পান্থনিবাস, ঢাকা – ১২০৫, বাংলাদেশ। ইব্রাহীম দেশে গেছেন সর্বশেষ ২০১১ সালে। সেবারে অনেক হুমকি ও হেনস্থার শিকার হয়েছিলেন। বেশ কিছু টাকার বিনিময়ে নিরাপদে যুক্তরাজ্যে ফিরতে পেরেছিলেন। সাদিয়ার পরিবার সরকারপক্ষীয় এবং তাদের মতে ইব্রাহীম তাদের মেয়েকে ব্রেনওয়াশ করে পালিয়ে নিয়ে গেছে। এই কারণে একটা মামলাও জারি করেছেন তারা ইব্রাহীমের বিরুদ্ধে। ইব্রাহীম উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত। কিন্তু বর্তমানে বাংলাদেশের যে প্রেক্ষাপট, সেই প্রেক্ষাপটে ইব্রাহীমের বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তন বিপদসঙ্কুল। ইব্রাহীমের মতোন পরিস্থিতে আছেন এমন অনেকে শুধু যুক্তরাজ্য না, ইউরোপের বিভিন্ন দেশে। দেশে ফেরতেচ্ছু এমন প্রচুর প্রবাসী বাঙ্গালী বিভিন্ন সঙ্কটের কারণে দেশমুখী হতে ভয় পান এবং প্রশাসন তাদের সমস্ত নিরাপত্তা ও সহায়তা দেবে এই আশ্বাসও নেই, বরঞ্চ উল্টোটা আছে। মোঃ ইব্রাহীম খলিল (জন্মঃ ১০/০৩/১৯৮৪) ও সাদিয়া আফরিন (জন্মঃ ১৫/০১।/১৯৯১) বর্তমানে পশ্চিম লন্ডনে অধিবাসী।
Corporate Office:
6/A Eskatan Garden
Dhaka, Bangladesh.
Mobile: 017111-66826
Email: mansoumit@yahoo.com
Helpline - +88 01719305766