অদিতি ফাল্গুনী
দু/তিন দিন হয় মনটা খারাপ লাগছে। ফেসবুকে নারী বিষয়ক দুই অন লাইন পত্রিকার সম্পাদক সুপ্রীতি ধর ও চৈতি আহমেদের ভেতর কিছু বাদানুবাদ দেখছি। একটা কথা আবার বলতে চাই: সুপ্রীতি দি’র সাথে ফেবুতে অতীতে হয়ত ব্যক্তিগত ভাবে মনোমালিন্য হয়েছে আর চৈতি আহমেদের সাথে সামনা সামনি পরিচয় হয়নি তবে ফেসবুক বন্ধু- একটা বিষয় হল সুপ্রীতি দি’র সাথে মনোমালিন্য হলেও বা এখন উনি ফেসবুকে আমার বন্ধু আর না থাকলেও ওনাকে নানা মানুষ মিলে যেভাবে আক্রমণ করছে এটা আমার খারাপ লাগছে। চৈতি আহমেদ ও সুপ্রীতি ধর দু’জনকেই আমি খুবই সম্মান করি। এই সমাজে ‘সংসার’ টিঁকিয়ে রাখতে অসংখ্য মেয়ে প্রতিদিন যে আপোষ করে সেটা না করে দু’জনেই একক মা হিসেবে কঠোর সংগ্রাম করছেন বহু বছর। দু’জনেই দেশের মৌলবাদ বিরোধী নানা লড়াইয়ে সোচ্চার। কাজেই এই দু’জনের ভেতর বিরোধ আসলে কিন্ত প্রতিক্রিয়াশীলদের শক্তিশালী করবে। দ্যাখো- নারীবাদী মানেই নিজেদের ভেতর বাদানুবাদ এসব বলার কোন সুযোগ তাদের না দেয়াই কি উচিত নয়?
চৈতি আহমেদের ‘নারী’ খুব সম্প্রতি যাত্রা শুরু করলেও এর ভেতর ইতোমধ্যে একাধিক নানা স্বাদের লেখা প্রকাশিত হয়েছে। আবার সুপ্রীতি দি’র ‘উইমেন চ্যাপ্টার’ প্রথম এধাঁচের কাজ শুরু করে। সেই কৃতিত্বও অবশ্যই তাঁর থাকবে। সাধারণ মেয়েদের সাধারণ হাসি-কান্নার গল্প শুনিয়েও ‘উইমেন চ্যাপ্টার’ অনেক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। এখন সুপ্রীতি দি’র ‘গৃহকর্মী যখন গৃহকর্ত্রী হতে চায়’ প্রবন্ধটি নিয়ে স্বাভাবিক ভাবেই কিছু ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া এসেছে। শুধুমাত্র একটা লেখার প্রসঙ্গ টেনে বারবার তাঁকে আক্রমণ করাও ঠিক নয়। মানে গতকাল সর্বাণী দত্ত নামে একজন ফেসবুকারের লেখায় তেমনটি পড়লাম। সর্বাণীরও নিশ্চিত তাঁর মত প্রকাশের অধিকার আছে। ফেসবুকার রাহাত মুস্তাফিজ তখন সর্বাণীকে যেটা বলেছেন যে একটি ভুল দিয়েই একজন মানুষের সব কাজকে উড়িয়ে দেয়া ঠিক না। এই প্রবণতাটা আমাদের গোটা জাতির জীবনে মারাত্মক হয়ে উঠেছে। ব্যক্তিগত ভাবে আমি ‘উইমেন চ্যাপ্টারে’ লিখি না- কোনদিন লিখিওনি- ইন ফ্যাক্ট সেখানে লেখা আমার জন্য যে খুব দরকার তেমনও না। ফেসবুকে এ্যাক্টিভিজমের লেখা লিখলেও আমি দেশের বাংলা-ইংরেজি নানা জাতীয় দৈনিকে কলাম, কবিতা, গল্প, ফিচার, ইন্টারভিউ, অনুবাদ প্রকাশ করে থাকি। তবে অনেক তরুণ বিশেষত: নারী লেখকদের ‘উইমেন চ্যাপ্টার’ বা ‘নারী’ বিকশিত হবার সুযোগ দেবে। নিজেদের ভেতর মতানৈক্য যেন সে বিকাশের পথ অবরুদ্ধ না করে।
‘নারী’/‘উইমেন চ্যাপ্টার’ বা সিলেট থেকে অদিতি দাসের সম্পাদনায় প্রকাশিত নারী কেন্দ্রিক আর একটি অন লাইন পত্রিকা সহ সবার উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করি।
সংবাদটি শেয়ার করুন