২৮শে জানুয়ারি ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ই মাঘ ১৪২৯ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১০:১৬ অপরাহ্ণ, জুন ১৮, ২০২২
রেডটাইমস ডেস্ক:
চরম দুর্বিসহ এক জীবন পার করছে বানভাসি এই মানুষগুলোর।
দিনে একবেলাও খাবার জুটছে না। সবারই অভিযোগ, এমন কঠিন সময়ে পাশে পাওয়া যাচ্ছে না জনপ্রতিনিধিদের।প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে জীবন যুদ্ধে সিলেট ও সুনামগঞ্জের প্রায় ত্রিশ লাখ মানুষ। হঠাৎ পাহাড়ি ঢলে দুই জেলার ৯০ ভাগ ঘরবাড়ি এখন পানির নিচে। বন্যায় টিকে থাকাই এখন কঠিন।
বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় বন্যার পরিস্থিতি আরও অবনতির শঙ্কা তৈরি হয়েছে। নতুন নতুন এলাকা তলিয়ে যাওয়াতে আটকে পড়া মানুষদের উদ্ধারে গলদঘর্শ হচ্ছে প্রশাসন।
চলতি মৌসুমে এটা সিলেটে তৃতীয় দফা বন্যা। ভারতের মেঘালয় ও আসামে রেকর্ড বৃষ্টিপাতের কারণে এবার পরিস্থিতির আরও অবনতির শঙ্কা করা হচ্ছে।
সিলেটের বিভাগীয় কমিশনারের হিসাবেই, সিলেট এবং সুনামগঞ্জ জেলার প্রায় ৩৫ লাখের মতো মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। যাপন করছেন এক দুর্বিসহ জীবন।
সিলেট শহরের শহরের উঁচু উঁচু স্থান, পাহাড়ি এলাকাছাড়া অন্যান্য এলাকার ঘরবাড়িগুলোতে ঢুকে পড়েছে পানি। টিনশেডসহ একতলা বাড়িঘর ডুবে যাওয়া বহু মানুষ এখন আশ্রয়কেন্দ্রে।আবার অনেকের সেই সুযোগও মেলেনি। শিশু-সন্তান নিয়ে ঘরবন্দি আছে অনেক পরিবার। তিন চার দিন হলো ঘরে ঢুকেছে পানি। চরম আতংকে কাটছে প্রতিটি দিন।
টানা বর্ষণ ও ঢলে হু হু করে বাড়ছে পানি। প্লাবিত হয়েছে সিলেট সুনামগঞ্জের লাখো বসতবাড়ি। কোমর পানি পাড়ি দিয়ে দৈনন্দিন কাজ সারছে মানুষ। সবার চোখেমুখে আতংকের ছাপ।।
জীবন বাচাতে অনেকেই ঘর ছেড়েছেন। অনেকেই আশ্রয় নিয়েছে নৌকায়। প্রতিটি ঘরেই এখন হাঁটু আর কোমর পানি। একটি নৌকাই এখন তাদের তাদের একমাত্র চাওয়া।
চকির উপরে চকি কিম্বা ইট দিয়ে উচু করে ঘরের আসবাবপত্র বাচানোর চেষ্টা। চুলায়ও আগুন জ্বলছে না গেল কয়েকদিন। সব মিলেয়ে ভোগান্তির শেষ নেই বানভাসি মানুষগুলোর।
সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. মুজিবুর রহমান নিজেই বলছেন, বন্যায় অনাহারে থাকা লোকজন এখন কেবল প্রাণে বাঁচতে চান। কিন্তু একটি নৌকা মেলানো তাদের কাছে এখন সোনার হরিণ।
তিনি জানান, কোন কোন উপজেলার প্রায় শতভাগ মানুষ পানিবন্দি। কেউ ত্রাণ চায় না, প্রাণে বাঁচতে চায়। কিন্তু তাদের উদ্ধারের জন্য নৌকা পাওয়া যাচ্ছে না।
দুর্যোগপূণ আবহওয়ায় নেই মোবাইলের নেটওয়ার্কও। পানিবন্দি জীবনে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ায় দুর্ভোগ বেড়েছে বহু গুণ। পাশাপাশি উদ্ধার অভিযানকেও ফেলেছে চ্যালেঞ্জের মুখে।
সিলেট নগরীসহ ১৩ উপজেলায় মোট ১০ লাখ মানুষ এখন পানিবন্দি। এই অবস্থায় নদীর পানির পানি কমার কোন লক্ষণ নেই। তারা বলছেন, সিলেট অঞ্চলে এমন বন্যা তারা আগে দেখেননি।
এ জেলার অধিকাংশ সড়ক-মহাসড়কও তলিয়ে পানিতে। ডুবে যাওয়ায় বিভিন্ন এলাকার সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। বন্ধ মোবাইল সেবাও।
সিলেট অঞ্চলের বহু এলাকাতে বিদ্যুৎও নেই। অন্ধকারে আছে হাজার হাজার ঘরবাড়ি। সাব স্টেশনের পানি ওঠায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে বাধ্য হয়েছে কর্তৃপক্ষ।
বন্যাদুর্গত এলাকাগুলোয় মানুষের ঘরে খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সঙ্কট চরমে পৌঁছেছে। অন্যদিকে আশ্রয় কেন্দ্রে উঠলেও সামান্য কিছু শুকনো খাবার ছাড়া আর কিছু জোটেনি অনেকের।
তবে দুর্গত মানুষদের সবচেয়ে বড় অভিযোগ, জীবনের এমন কঠিন এক সময়ে তারা পাশে পাচ্ছেন জনপ্রতিনিধিদের। প্রশাসন আর স্বেচ্ছাসেবী ছাড়া কারো দেখা নেই।
RED TIMES LIMITED
116-117, Concord Emporium,
Kataban, Dhaka-1205.
Mobile: 017111-66826
Email: redtimesnews@gmail.com