মেরিনা সঈদ
শিল্পী দেওয়ান মিজানের ডাক নাম ছিল রতন । তাঁকে আমরা রতন স্যার নামে চিনতাম । তিনি আমার শিক্ষক ছিলেন । শিশুকালে তিনি আমাকে ছবি আঁকা শেখাতেন বাসায় এসে।
আমরা তখন পুরান ঢাকার বাসিন্দা ।
তাঁর বন্ধু ইহসান কবির বকুল স্যার শেখাতেন গান। শিশুকাল থেকে স্যারকে দেখেছি কত লম্বা চওড়া, বড়সড়ো একজন মানুষ। অনেক বছর পরে শান্ত মারিয়াম ইউনিভার্সিটিতে আবার স্যারকে দেখলাম। তখন দেখি স্যার ততো দীর্ঘ নন। তাঁর শরীরে মরণব্যাধি ক্যান্সার বাসা বেঁধেছে। আসলে আমি বড়ো হয়েছি। আর তিনি বয়সের ভারে ছোট হয়েছেন । স্যার আমাকে দেখে ভীষণ খুশি হলেন, আমাকে নিয়ে তিনি গর্ববোধ করতেন, আমি বাবাকে নিয়ে স্মৃতি পরিষদ গঠন করেছি শুনে খুশি হলেন আরও বেশি।
আমার লেখা ‘ছোটোদের বঙ্গবন্ধু : জীবন ও কর্ম’ বইটির উন্মোচন অনুষ্ঠানে স্যার এসে আমার ও আমার পরিবারের ভূয়সী প্রশংসা করেছিলেন। আমার বাবাকে তিনি চিনতেন। আমাকে নিয়ে স্যার ভীষণ গর্ববোধ করতেন। স্যারের প্রথম গ্রন্থ “অভিন্ন ভ্রূণে কবিতা ও চিত্রকলা” নিজ হাতে স্বাক্ষর করে আমাকে উপহার দিয়েছিলেন। আমার কাছে বইটি আজও অক্ষত আছে। অকালে স্যার চলে গেলেন। গত বছর স্যারের সাথে দেখা হয়েছিল, আমি উত্তরা থেকে স্যারকে পান্থপথে আমার গাড়িতে নামিয়ে দিয়েছিলাম। তখনই স্যার আমার বইয়ের প্রচ্ছদ করার জন্য বঙ্গবন্ধুর ছবি দিলেন ও আরো অনেক ছবি দেখালেন।
শিশুকালের কত স্মৃতি স্যারের সঙ্গে জড়িয়ে আছে যা বলার ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। আল্লাহ যেন তাকে জান্নাতুল ফেরদৌসে নসিব করেন- এই প্রার্থনা করছি।
মেরিনা সঈদ ঃ কবি ও সম্পাদক হার্দিক প্রকাশ
সংবাদটি শেয়ার করুন