২রা মার্চ ২০২১ ইং | ১৭ই ফাল্গুন ১৪২৭ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১২:৫৩ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ১৪, ২০১৯
দৈনিক সংগ্রামের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিচ্ছে সরকার ।
মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়া কসাই কাদের মোল্লাকে ‘শহীদ’ উপাধী দেওয়ায় দৈনিক সংগ্রামের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সরকারের জ্যেষ্ঠ মন্ত্রীরা ।
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে শনিবার রায়েরবাজার বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানাতে এসে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এ বিষয়ে কথা বলেন।
একাত্তরে যুদ্ধাপরাধের দায়ে ২০১৩ সালের ১২ ডিসেম্বর ফাঁসি কার্যকর করা হয় ‘মিরপুরের কসাই’খ্যাত কাদের মোল্লার।
সেই দিনের স্মরণে বৃহস্পতিবার জামায়াতে ইসলামীর মুখপত্র হিসেবে পরিচিত দৈনিক সংগ্রামের প্রথম পাতায় একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়, যার শিরোনাম ছিল ‘শহীদ আবদুল কাদের মোল্লার ৬ষ্ঠ শাহাদাত বার্ষিকী আজ’’।
এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক সাংবাদিকদের বলেন, ওরা একাত্তর সালে যে ধৃষ্টতা দেখিয়েছে, তা এখনো অব্যাহত আছে। এ ঘৃণ্য কাজের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয়ভাবে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আর ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাথে কথা বলব। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া উচিত।
সকালে মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরও এ বিষয়ে কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমরা এ ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানাই। শহীদের একটা সংজ্ঞা আছে। যাকে তাকে শহীদ বলা যায় না।
আর জেএসডি সভাপতি আসম আবদুর রব বলেন, রাজাকার কীভাবে শহীদ হয়। তীব্র ভাষায় ধিক্কার ও নিন্দা জানাই।
কাদের মোল্লাকে ‘শহীদ’ লেখার প্রতিবাদে শুক্রবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রতিবাদ সমাবেশ করে সংগ্রাম পত্রিকার কয়েকটি কপি পোড়ান ছাত্রলীগের একদল নেতাকর্মী। বিকালে দৈনিক সংগ্রামের কার্যালয় ঘেরাও ও ভাংচুর করে বিক্ষুব্ধরা।
মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক মো. আল মামুন সেখানে বলেন, আমরা স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে আপস করতে পারি না। যে কেউ স্বাধীনতা বা মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে কথা বললে আমরা তা প্রতিহত করবই।
দৈনিক সংগ্রামের কার্যালয়টি জামায়াত-শিবিরের অস্থায়ী কার্যালয় হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে অভিযোগ করে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পত্রিকাটির ‘ডিক্লারেশন’ বাতিলের দাবি জানান তিনি।
সংগ্রামের সম্পাদক আবুল আসাদকে হাতিরঝিল থানায় নেওয়া হয়েছে জানিয়ে পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপ- কমিশনার বিপ্লব বিজয় তালুকদার শুক্রবার রাতে বলেন, তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার ক্ষমতায় এসে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া শুরু করলে জামায়াতের সাবেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল কাদের মোল্লাকে নিয়ে আসা হয় বিচারের কাঠগড়ায়।
তার বিরুদ্ধে আনা ছয়টি অভিযোগের মধ্যে তিনটিতে সংশ্লিষ্টতা এবং দুটিতে প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে প্রমাণিত হলেও তাকে দেওয়া হয় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড।
ওই রায় প্রত্যাখ্যান করে রাজধানীর শাহবাগে তাৎক্ষণিকভাবে ছাত্র-জনতার যে বিক্ষোভের সূচনা হয়, যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ সাজার দাবিতে আন্দোলনের রূপ নিয়ে তা ছড়িয়ে পড়ে সারা দেশে।
এই দাবির মুখে সরকার আন্তর্জাতিক অপরাধ আইনে সংশোধন আনতে বাধ্য হয়। সংশোধিত আইনে কাদের মোল্লার মৃত্যুদণ্ড চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। খালাস চেয়ে কাদের মোল্লাও আপিল আবেদন জমা দেন।
বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে কাদের মোল্লার মৃত্যুদণ্ডের চূড়ান্ত রায় আসে এবং ২০১৩ সালের ১২ ডিসেম্বর তার ফাঁসি কার্যকর করা হয়।
Corporate Office:
6/A Eskatan Garden
Dhaka, Bangladesh.
Mobile: 017111-66826
Email: mansoumit@yahoo.com
Helpline - +88 01719305766