ঢাকা ৯ই সেপ্টেম্বর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৫শে ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৬ই রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরি


ধানমন্ডির ২ নম্বর সড়কে এক বিঘা আয়তনের ২৯ নম্বর বাড়িটি সরকারের মালিকানায় থাকবে

redtimes.com,bd
প্রকাশিত নভেম্বর ২২, ২০২২, ০৭:৫২ অপরাহ্ণ
ধানমন্ডির ২ নম্বর সড়কে এক বিঘা আয়তনের ২৯ নম্বর বাড়িটি সরকারের মালিকানায় থাকবে

রাজধানীর ধানমন্ডি আবাসিক এলাকায় ২ নম্বর সড়কে এক বিঘা আয়তনের ২৯ নম্বর বাড়িটি সরকারের মালিকানায় থাকবে।

ডেপুটি এটর্নি জেনারেল কাজী মাঈনুল হাসান বাসসকে আদালতের রায়ের বিষয়টি জানান।

পৃথক রিট নিষ্পত্তি করে বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি মো. সোহরাওয়ারদী সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ রুল ডিসচার্জ করে সোমবার এ রায় দেন।

ডেপুটি এটর্নি জেনারেল কাজী মাঈনুল জানান, আদালত একইসঙ্গে তথ্য গোপন করে, এই বাড়ির মালিকানা দাবি করে রিট পিটিশন দায়ের করায় সাংবাদিক আবেদ খানকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন।

ডেপুটি এটর্নি জেনারেল কাজী মাঈনুল হাসান বলেন, ধানমন্ডি ২নং রোডের আলোচিত ২৯নং বাড়ি ১৯৭২ সালে তৎকালীন মালিক পরিত্যাগ করে চলে যাওয়ায় সরকার পরিত্যক্ত সম্পত্তি হিসেবে দখল ও নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করে। পরে ওই সম্পত্তির উত্তরাধিকার হিসেবে মালিকানা দাবি করে- তোয়াব খান, আবেদ খানসহ ৯ জন ১৯৮৯ সালে কোর্ট অব সেটেলমেন্টে মামলা করেন।

সাক্ষ্য ও পক্ষদ্বয়ের কাগজপত্র ও সরকারি নিবন্ধক দপ্তরের নথি পর্যালোচনা করে কোর্ট অব সেটেলমেন্ট বর্ণিত সম্পত্তি সরকার আইনসঙ্গতভাবেই পরিত্যক্ত সম্পত্তি হিসেবে দখল ও নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করেছে বলে রায় দেন।

ডেপুটি এটর্নি জেনারেল কাজী মাঈনুল বলেন, বাড়িটিকে পরিত্যক্ত বাড়ির তালিকাভুক্তির বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট করেন আবেদ খান। ওই বছরের ৬ জুলাই প্রাথমিক শুনানি নিয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।

ডেপুটি এটর্নি জেনারেল বলেন, একই সম্পত্তির বিষয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত ও সমর্থনীয় কাগজপত্র ছাড়াই সাংবাদিক আবেদ খান তাদের বিরুদ্ধে সেটেলমেন্টের কোর্টের রায় গোপন করে, ২০১৫ সালে হাইকোর্টে রিটটি করেন। ডেপুটি এটর্নি জেনারেল জানান, এস. নেহাল আহমেদ নামে এক ব্যক্তি ১৯৮৭ সালের আবেদন দেখিয়ে কোর্ট অব সেটেলমেন্টে ১৯৯৬ সালে মামলা করেন। ১৯৯৭ সালের ১৬ জুলাই রায় হয়। রায়ে, বাড়িটি পরিত্যক্ত সম্পত্তির তালিকা থেকে অবমুক্ত করতে এবং নেহাল আহমেদ বাড়িটির দখল পেতে পারেন বলে উল্লেখ করা হয়।

এই মামলায় সরকারের পক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা হয়নি।
ডেপুটি এটর্নি জেনারেল বলেন, কোর্ট অব সেটেলমেন্টে কোনো সাক্ষী না দিলেও বা সমর্থনীয় এবং আবশ্যকীয় কাগজপত্র দাখিল করা না হলেও এস. নেহাল আহমেদ দাবিকারী ব্যক্তি পক্ষে রায় পান। এই রায় বাস্তবায়নে এস. নেহাল আহমেদ হাইকোর্টে দুটি রিট করেন। এই মামলাগুলোতে সরকারের পক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বিতা পূর্বক প্রকৃত তথ্য উপাত্ত দাখিল না করায় হাইকোর্ট পুনরায় এস. নেহাল আহমেদের পক্ষে রায় দেন। রায়ের বিরুদ্ধে দেরিতে আপিল করায়- আদালত আপিল তামাদি ঘোষণা করে খারিজ করে দেন।

পরে বিষয়টি সরকারের যথাযথ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিতে এলে ২০১৮ সালে প্রথম সেটেলমেন্ট কোর্টের ১৯৯৭ সালের রায় চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করা হয়। রিটের শুনানি নিয়ে আদালত সরকারের পক্ষে রুল দেন। রুলের শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে বলা হয়, কোর্ট অব সেটেলমেন্টে ১৯৯৭ সালের রায়টি প্রতারণামূলকভাবে ১৯৯৬ সালে তামাদির মেয়াদকে পাশ কাটানোর জন্য ১৯৮৭ সালে দায়ের দেখিয়ে সুবিধা লাভ করেছেন। এমন প্রতারণার কারণে ও মালিকানার স্বপক্ষে উপযুক্ত তথ্য-প্রমাণ না থাকায় ওই রায়টি বাতিলযোগ্য। আদালতকে আরও বলা হয়, এস. নেহাল আহমেদ দাবিকারী ব্যক্তি ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের নাগরিক ছিলেন বা বাংলাদেশে অবস্থান করেছেন এমন কোনো দালিলিক প্রমাণ দাখিল করতে পারেননি। আবার বর্তমানে দাখিল করা এস. নেহাল আহমেদ নামের জাতীয় পরিচয়পত্রে বর্ণিত নামের বানান, বাবার নামের বানান ও বয়স বর্ণিত সম্পত্তি পরিত্যাগকারী এস. নেহাল আহমেদের নামের সঙ্গে যথেষ্ট অসঙ্গতি রয়েছে। এ কারণে এস. নেহাল আহমেদের পক্ষের রায় বাতিলযোগ্য। নেহাল আহমেদের আইনজীবীরা আদালতকে বলেন, সরকারের পক্ষে ২২ বছর বিলম্বে রিট দায়ের করা হয়েছে। রাষ্ট্রপক্ষ থেকে বলা হয়, রিট পিটিশন দায়েরে কোনো সময়সীমা নেই। তবে যৌক্তিক সময়সীমার মধ্যে দায়ের করা সমীচীন।

 

ডেপুটি এটর্নি জেনারেল কাজী মাঈনুল বলেন, একই সম্পত্তির বিষয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত ও সমর্থনীয় কাগজপত্র ছাড়াই সাংবাদিক আবেদ খান তাদের বিরুদ্ধে সেটেলমেন্টের কোর্টের রায় গোপন করে ২০১৫ সালে হাইকোর্টে রিট করেন। ওই সম্পত্তির মালিকানা দাবি করে রিটটি করা হয়। তথ্য গোপন করে রিট করায় আদালত তাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন।

নেহাল আহমেদের পক্ষে আইনজীবী ড. কাজী আকতার হামিদের জুনিয়র এডভোকেট মোহাম্মদ আবুল হাসিম বাসস’কে বলেন, আদালত রায়ে বলেছেন, ওই সম্পত্তি সরকারের হেফাজতে থাকবে। এছাড়া রিটে তথ্য গোপন করায় আবেদ খানকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।বাসস

সংবাদটি শেয়ার করুন

September 2024
S M T W T F S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
2930