এসবিএন ডেস্ক: নারায়ণগঞ্জে আলোচিত সাত খুনের ঘটনায় দায়ের করা দুটি মামলায় অভিযোগ গঠন বিষয়ক শুনানির ২৭ জানুয়ারি তারিখ ধার্য করেছেন আদালত। আজ সোমবার শুনানি হওয়ার কথা থাকলেও মামলার অন্যতম আসামি র্যাবের সাবেক কর্মকর্তা তারেক সাঈদ মোহাম্মদকে অসুস্থতার কারণে হাজির করা হয়নি। তাই অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক মিয়াজী শহিদুল ইসলাম চৌধুরী শুনানির নতুন তারিখ ধার্য করেন।
সকালে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে নূর হোসেন ও র্যাবের দুই কর্মকর্তা মেজর (অব্যাহতিপ্রাপ্ত) আরিফ হোসেন ও লে. কমান্ডার (অব্যাহতিপ্রাপ্ত) এম এম রানাসহ ২২ আসামিকে বিচারক মিয়াজী শহিদুল ইসলাম চৌধুরীর আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় নূর হোসেন ও তাঁর চার সহযোগীর পক্ষে জামিনের আবেদন করা হলে আদালত তা নামঞ্জুর করেন ও সব আসামিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
আদালতে নূর হোসেনের পক্ষে আনুষ্ঠানিকভাবে আইনি লড়াইয়ের জন্য আইনজীবী খোকন সাহা ওকালতনামা দাখিল করেন। তিনি মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। পরে তিনি নূর হোসেনের জামিনের আবেদন করেন।
নূর হোসেনের চার সহযোগী হলেন মোর্তুজা জামান চার্চিল, মিজানুর রহমান, আলী মোহাম্মদ ও রহম আলী। আসামি পক্ষের আইনজীবী আশরাফুজ্জামান বলেন, ‘আমরা ৪ আসামির জামিনের জন্য উচ্চ আদালতে যাব।’
বাদীপক্ষের আইনজীবী সাখাওয়াত হোসেন বলেন, অসুস্থতার ভুয়া অজুহাত দেখিয়ে র্যাবের সাবেক কর্মকর্তা তারেক সাঈদ আদালতে হাজির হয়নি। তিনি অভিযোগ করেন, ‘বহিরাগত লোকজন আদালত অবরুদ্ধ করে রাখায় আমরা এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।’
৭ খুনের ঘটনায় একটি মামলার (প্যানের মেয়র নজরুল ইসলাম ও তাঁর ৪ সহযোগী হত্যার ঘটনায়) বাদী সেলিনা ইসলাম বিউটি অভিযোগ করেন, ‘নূর হোসেন এলাকায় যেসব লোকজন নিয়ে অপকর্ম করত তাঁদের বাস ভর্তি করে সিদ্ধিরগঞ্জ থেকে আদালতে আনা হয়েছে। আমরা এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আমরা ন্যায় বিচার পাওয়া নিয়ে সংশয়ে আছি।’
অন্যদিকে সকাল ১০টার দিকে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার চাঁদাবাজির একটি মামলায় নূর হোসেনকে জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম কে এম মহিউদ্দিনের আদালতে হাজির করে জামিনের আবেদন করা হয়। সেখানেও আদালত তা নামঞ্জুর করে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন এবং জামিনে থাকা মামলার অপর আসামি নূর হোসেনের ভাতিজা কাউন্সিলর (বরখাস্ত) শাহ্ জালাল বাদলের জামিনের মেয়াদ বাড়ান। ওই মামলার পলাতক আসামিদের মালামাল ক্রোকেরও নির্দেশ দেন আদালত।
নারায়ণগঞ্জ কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক মো. হাবিবুর রহমান জানান, সিদ্ধিরগঞ্জ থানার চাঁদাবাজির মামলায় হাজিরা শেষে নূর হোসেনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে
২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ শহরের কাছ থেকে কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী চন্দন সরকারসহ সাতজনকে অপহরণ করা হয়। এর তিন দিন পর সাতজনের মৃতদেহ শীতলক্ষ্যা নদীতে ভেসে ওঠে। নজরুল ইসলাম ও তাঁর চার সহযোগী হত্যার ঘটনায় নজরুলের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি বাদী হয়ে একটি এবং জ্যেষ্ঠ আইনজীবী চন্দন সরকার ও তাঁর গাড়ির চালক ইব্রাহিম হত্যার ঘটনায় জামাতা বিজয় কুমার পাল বাদী হয়ে ফতুল্লা মডেল থানায় মামলা করেন।
ঘটনার প্রায় এক বছর তদন্ত শেষে মামলার তদন্তকারী সংস্থা নূর হোসেন, র্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তাসহ ৩৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে।
তবে সেলিনা ইসলাম বিউটি তাঁর দায়ের করা মামলায় এজাহারভুক্ত পাঁচ আসামিকে বাদ দেওয়ায় তা প্রত্যাখ্যান করে নারাজি আবেদন দাখিল করেন। প্রথমে বিচারিক হাকিম আদালত ও পরে জেলা ও দায়রা জজ আদালত তা খারিজ করে দেন। পরে সেলিনা ইসলাম বিউটি অধিকতর তদন্ত চেয়ে উচ্চ আদালতে আবেদন করলে আদালত শুনানি শেষে আদেশে বলেন, পুলিশ চাইলে মামলাটি অধিকতর তদন্ত করতে পারে। তবে মামলাটিতে হত্যার ষড়যন্ত্র ও পরিকল্পনার ধারা যুক্ত করে বিচার করার জন্য জেলা ও দায়রা জজকে নির্দেশ দেন। ওই মামলায় নূর হোসেন ও র্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তাসহ মোট ২৩ জন কারাগারে আটক রয়েছে।
RED TIMES LIMITED
116-117, Concord Emporium, Kataban, Dhaka-1205.
Mobile: 017111-66826
Email: [email protected]
Web Design by: SuperSoftIT.com