পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে এটমস্ট্রয়এক্সপার্টের সঙ্গে চুক্তি করেছে সরকার

প্রকাশিত: ৬:১০ পূর্বাহ্ণ, ডিসেম্বর ২৬, ২০১৫

পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে  এটমস্ট্রয়এক্সপার্টের সঙ্গে চুক্তি করেছে সরকার

এসবিএন ডেস্ক:
বাংলাদেশে প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে রাশিয়ার ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এটমস্ট্রয়এক্সপার্টের সঙ্গে চুক্তি করেছে সরকার। ১২ দশমিক ৬৫ বিলিয়ন ডলার (১ লাখ এক হাজার কোটি টাকা ) ব্যয়ে পাবনার রূপপুরে নির্মিত হবে এ বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি। গত বুধবার এই চুক্তির প্রস্তাবে অনুমোদন দেয় সরকার। শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় রাজধানীর হোটেলে সোনারগাঁওয়ে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে বাংলাদেশ পারমাণবিক কমিশনের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. মনিরুল ইসলাম এবং ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এটমস্ট্রয়এক্সপার্টের পক্ষে প্রতিষ্ঠানটির সিনিয়র ভাইসপ্রেসিডেন্ট সুভাষ কিং চুক্তিপত্রে সই করেন।

চুক্তি বাস্তবায়নের সময়কাল সাত বছর ধরা হয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী রাশিয়া বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি নির্মাণ এবং পরিচালনার জন্য দক্ষ জনবল সৃষ্টি করবে। বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির প্রথম পর্যায়ের কাজ ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে শেষ হবে। এরপর মূল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নির্মাণ কাজ শুরু হবে। ইতোমধ্যে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নকশা প্রণয়নের কাজ শেষ করেছে এটমস্ট্রয়এক্সপোর্ট। রাশিয়া এবং বাংলাদেশের মধ্যে ১৩ দফা আলোচনার ভিত্তিতে ৪৭টি অনুচ্ছেদ এবং ৫৭৩টি উপ-অনুচ্ছেদে চুক্তিটি চূড়ান্ত করা হয়। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের মূল চুক্তি এটি; যেখানে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির নকশা, যন্ত্রাংশ সরবরাহ, কেন্দ্র নির্মাণ, উৎপাদন, নিশ্চয়তা বা গ্যারান্টি, পারমাণবিক জ্বালানি সরবরাহ, বিদ্যুৎ কেন্দ্র পর্যন্ত যন্ত্রাংশ পরিবহন এবং গ্যারান্টি পর্যায় পর্যন্ত বিভিন্ন সেবা প্রদানের কথা উল্লেখ রয়েছে। চুক্তি বাস্তবায়নের সময়কাল সাত বছর ধরা হয়েছে।

চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, পাকিস্তান আমলেই রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তা বাস্তবায়িত হয়নি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে একই স্থানে রাশিয়ার সহযোগিতায় বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হয়। প্রথম অবস্থায় ২ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের কথা থাকলেও রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে। অর্থমন্ত্রী বলেন, জ্বালানী-বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কঠিন এক ঝুঁকিপূর্ণ কাজ। ব্যবহৃত ইউরেনিয়াম বর্জ্য অত্যন্ত নিরাপত্তার সঙ্গে রক্ষণাবেক্ষণ করতে হয়। তবে বাংলাদেশের জন্য দুরুহ এই কাজটির দায়িত্ব নিয়েছে রাশিয়া। এটা আমাদের জন্য খুবই ভালো দিক যে রাশিয়াই বর্জ্য ব্যবস্থাপনা করবে। ২০২৪ সালে দ্বিতীয় পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্লান্ট স্থাপন করা হবে বলেও অর্থমন্ত্রী জানান।

জ্বালানী উপদেষ্টা তৌফিক-ই এলাহী বলেন, রাশিয়া বন্ধুপ্রতীম দেশ। রূপপুর পারমাণবিক কেন্দ্র নির্মাণের সহযোগিতা করার জন্য রাশিয়া সরকারকে ধন্যবাদ জানান তিনি। সভাপতির বক্তব্যে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান বলেন, বাংলাদেশ ভাগ্যবান। বন্ধবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রেখে যাওয়া অনেক অসমাপ্ত কাজ তারা মেয়ে শেখ হাসিনা অনেকটাই পূরণ করেছেন। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক মন্ত্রী ইয়াফেস ওসমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত চুক্তিস্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। জ্বালানী উপদেষ্টা তৌফিক-ই-এলাহী, কৃষি মন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, ঢাকায় নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদ্রুত, বিভিন্ন মন্ত্রনালয়ের সচিব, বিভিন্ন বিদ্যুৎ বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে কর্মকর্তারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

লাইভ রেডিও

Calendar

December 2023
S M T W T F S
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31