পুলিশ আগাম প্রস্তুতি নিচ্ছে রাজনৈতিক সহিংসতা ঠেকাতে

প্রকাশিত: ১:৪০ অপরাহ্ণ, আগস্ট ১৪, ২০২২

পুলিশ আগাম প্রস্তুতি নিচ্ছে রাজনৈতিক সহিংসতা ঠেকাতে

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে রাজনৈতিক সহিংসতা ঠেকাতে আগাম প্রস্তুতি নিচ্ছে পুলিশ। এর অংশ হিসেবে রাজধানীর প্রতিটি থানা ও মহল্লাভিত্তিক নেতাকর্মীদের তালিকা তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম।

 

 

 

রাজধানীর যেসব মসজিদ থেকে উস্কানিমূলক মিছিল বের হয় সেগুলোর তালিকা করারও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সর্বশেষ মাসিক অপরাধ পর্যালোচনা সভায় ডিএমপি কমিশনার এই নির্দেশনা দেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।

 

 

 

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আর বছর দেড়েক সময় বাকি। ডিএমপির একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এখন থেকেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দল অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটিয়ে সরকারকে বেকায়দায় ফেলার পরিকল্পনা করছে। সেইসঙ্গে নানা ইস্যুতে সরকারকে চাপে ফেলার ষড়যন্ত্রও করা হচ্ছে। এজন্যই পুলিশের পক্ষ থেকে নেওয়া হচ্ছে আগাম প্রস্তুতি।

 

 

 

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের প্রধান ও অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশিদ জানান, “কেউ যাতে সহিংসতা বা অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটাতে না পারে সেজন্য রুটিন কাজের অংশ হিসেবেই গোয়েন্দা নজরদারি করে থাকি আমরা। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে অনেকেই ‘ঘোলা পানিতে মাছ শিকারে’র চেষ্টা করতে পারে। আমরা সজাগ রয়েছি।”

 

 

 

সম্প্রতি ঢাকায় আয়োজিত বিএনপির সমাবেশগুলোতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ‘রাজপথ দখলের’ ঘোষণা দিয়েছেন। এদের মধ্যে দুজন আবার প্রেসক্লাব-নয়া পল্টনকেন্দ্রীক সমাবেশ-কর্মসূচি থেকে বেরিয়ে সারা রাজধানীতে কর্মসূচি দেওয়ারও ঘোষণা দিয়েছেন। বিষয়গুলোকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখছেন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা।

 

 

 

 

বিএনপির সূত্র বলছে, নেতাদের রাজপথ দখলের বিষয়টি অনেকটাই আপেক্ষিক। কারণ, এখনই আন্দোলনে নামার কোনও পরিকল্পনা বিএনপির নেই। নেতাকর্মীদের কাছ থেকে কর্মসূচির দাবি আসার বিষয়টিকে চাপা দিতেই বক্তব্যে ‘কঠোর শব্দ’ প্রয়োগ করছেন নেতারা।

 

 

 

অবশ্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা এসব কৌশলকে হালকাভাবে নিচ্ছেন না। তারা আগাম প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন।

 

 

 

অন্য কয়েকটি দলও প্রেসক্লাবকেন্দ্রীক কর্মসূচি পালন করছে। এরইমধ্যে একাধিক সংগঠন মিরপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় কর্মসূচি পালন করেছে।

 

 

 

এসব সংগঠনের একাধিক নেতা গনমাধ্যমকে জানিয়েছেন, গত এক সপ্তাহে কর্মসূচি পালনের পর স্থানীয় প্রশাসন তাদের বাসায় গিয়ে নিবৃত্ত থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন।

 

 

সম্প্রতি জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির ইস্যুতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীদেরও ঝটিকা মিছিল করতে দেখা গেছে।

 

 

 

বিশেষ করে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা বিভিন্ন মসজিদকে ব্যবহার করে একত্রিত হয়ে আশেপাশের সড়কে এ ধরনের মিছিল করছে। এজন্য এসব মসজিদগুলোতে মুসল্লি বেশে নাশকতাকারীদের ওপর নজরদারি করতে বলা হয়েছে।

 

 

পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, সাম্প্রতিক কিছু ইস্যুকে কেন্দ্র করে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো জনগণকে ভুল বুঝিয়ে নাশকতার দিকে ঠেলে দেওয়ার চেষ্টা করছে। এজন্য প্রত্যেক এলাকাতেই গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। কেউ সরকারি সম্পত্তির ক্ষতি করার চেষ্টা করলে তাকে আইনের আওতায় আনা হবে।

 

 

 

ডিএমপির এক কর্মকর্তা জানান, আগুন সন্ত্রাস ও রাজনীতির নামে সহিংসতা ও নৃশংসতা যারা চালায় তাদের তালিকা তৈরি হচ্ছে। যদিও এটা চলমান প্রক্রিয়া। তবে সামনের নির্বাচনকে ঘিরে এসব যাতে মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে এজন্য পুলিশি কার্যক্রম ও গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।

 

 

 

ডিএমপি কমিশনারের নির্দেশনায় বলা হয়েছে— মহল্লাভিত্তিক পলিটিক্যাল অ্যাকটিভিস্টদের চিহ্নিত করে তাদের ব্যাপারে আগাম তথ্য সংগ্রহ করতে হবে।

 

 

 

প্রত্যেক থানা-মহল্লা ভিত্তিক কমিটির তালিকা সংগ্রহ করতে হবে। কমিটির সদস্যদের পদ, পদবী, নাম, মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে রাখতে হবে। যাতে কোনও নাশকতামূলক ঘটনা ঘটলে তাৎক্ষণিক আইনি ব্যবস্থা নেওয়া যায়।

 

 

 

 

এছাড়া, যে সব মসজিদ থেকে রাজনৈতিক ও উস্কানিমূলক মিছিল মাঝে মাঝে বের হয়, সেগুলোর তালিকাও করতে হবে। মুসল্লির ছদ্মবেশে দুস্কৃতকারীদের তথ্য সংগ্রহ করে তাদের গতিবিধি নজরে রাখতে হবে।

 

 

 

 

 

ডিএমপির একাধিক কর্মকর্তা জানান, রাজনৈতিক দুস্কৃতকারীদের ওপর নিয়মিত নজরদারি চলে। ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের অনুভূতিকে কাজে লাগিয়ে যারা উগ্রবাদি মিছিল ও সহিংসতায় নেতৃত্ব দিচ্ছে তাদেরও চিহ্নিত করতে কাজ করছে পুলিশ।

 

সুত্র : বাংলাট্রিবিউন।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

লাইভ রেডিও

Calendar

November 2023
S M T W T F S
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
2627282930