৮৫তম জন্মদিনে শিল্পাঙ্গনের মানুষের ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত হলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। অর্থমন্ত্রী দেশের শিল্প-সাহিত্য অঙ্গনে একজন লেখক, সুবক্তা, শিল্পরসিক, সঙ্গীতপ্রেমী হিসেবে সমধিক পরিচিত। ফলে শিল্প-সংস্কৃতি অঙ্গনে তার সুহৃদ ও শুভাকাঙ্ক্ষীর সংখ্যাও কম নয়। আর তাই বর্ণাঢ্য এই ‘আনন্দ সন্ধ্যায়’ সুহৃদ-শিল্পরসিক মানুষের ঢল নেমেছিল।
২৫ জানুয়ারি, বৃহস্পতিবার ছিল অর্থমন্ত্রীর ৮৫তম জন্মদিন। এই দিনে ভিন্ন ভিন্ন দুটি আয়োজনে অর্থমন্ত্রীকে ভালোবাসায় সিক্ত করলেন তার সুহৃদরা। ফুলেল শুভেচ্ছার পাশাপাশি কাটা হয় ৮৫তম জন্মদিনের কেক।
এর মধ্যে অর্থমন্ত্রীর লেখা ‘সংকট ও সুযোগ’ বইটির প্রকাশনা উৎসবের মধ্য দিয়ে একটি আয়োজন করে সময় প্রকাশন। অন্য আয়োজনটি করে জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতি।
দুটি অনুষ্ঠানই উদযাপিত হয় বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রে। বিকেলে বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের সেমিনার হলে উদযাপিত হয় জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির প্রথম আয়োজনটি।
এ আয়োজনে অর্থমন্ত্রী প্রবেশ করতেই তাকে ফুলের পাপড়ি ছিটিয়ে বরণ করে নেয়া হয়। এ সময় সমবেত কণ্ঠে পরিবেশিত হয় ‘ঐ মহামানব আসে’ গানটি। এরপর শিল্পীদের কণ্ঠে গীত হয় ‘নব আনন্দে জাগো’ শিরোনামের আরেকটি গান।
এ আয়োজনে অর্থমন্ত্রীকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানায় জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতি, জাতীয় জাদুঘর, জাতীয় কবিতা পরিষদ, বাংলাদেশ সায়েন্সফিকশন সোসাইটি, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন, আহমেদ পাবালিশিং, পাঞ্জেরী পাবলিকেশনস, বাংলা প্রকাশ, চন্দ্রদ্বীপ প্রকাশ, অনিন্দ্য প্রকাশনী সংস্থা, বর্ণ প্রকাশন, রকমারি ডটকম, চয়ন প্রকাশ, উৎস প্রকাশন, ইমপেরিয়াল কলেজ, প্রাইম ইনভেস্ট লিমিটিড।
এরপর কথন পর্বে কথাসাহিত্যক অধ্যাপক সৈয়দ মনজুুরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অর্থমন্ত্রীর বর্ণাঢ্য জীবন নিয়ে আলোচনা করেন ইমেরিটাস প্রফেসর ড. আনিসুজ্জামান, বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ, নাট্যাভিনেতা রামেন্দু মজুমদার, প্রাবন্ধিক মফিদুল হক। এতে স্বাগত বক্তৃতা করেন জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির সভাপতি মাজহারুল ইসলাম।
নিজের জন্মদিনের অনুভূতি প্রকাশে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের গ্রুপের (দলের) প্রত্যেকের জীবনে সংস্কৃতি এক বিরাট প্রভাব রেখেছে। সংস্কৃতি আমাদের প্রত্যেকের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যকে সমৃদ্ধ করেছে। জন্মদিনে এটাই আমার অনুভূতি।’
এ সময় হাস্যরসের মাধ্যমে নিজের বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের সংস্কৃতিচর্চার স্মৃতিচারণা করেন অর্থমন্ত্রী। পরে প্রশাসনিক দায়িত্ব পালনের সময় সংস্কৃতিজনদের সঙ্গে গড়ে ওঠা সম্পর্কের নানা দিক নিয়েও আলোকপাত করেন তিনি।
ড. আনিসুজ্জামান বলেন, ‘১৯৫৩ সাল থেকে তার সঙ্গে আমার যোগাযোগ। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে তিনি আমার দুই বছরের সিনিয়র ছিলেন। স্কুল জীবন থেকেই বরাবর ভালো ছাত্র মুহিত ভাইয়ের প্রতিভা নানা দিকে বিকশিত হয়েছে। নানা গুণের আকর এই মানুষটি তার সমস্ত গুণ সারা জীবন ধরে রেখেছেন। তার নানা বয়সে তিনি যে ডায়েরিগুলো লিখে গেছেন, সেগুলো ইতিহাসের উপকরণ।’
অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন, ‘ব্যতিক্রমী মানুষ মুহিত ভাই অসম্ভব প্রাণশক্তির অধিকারী। বলিষ্ঠ মানুষটি জীবন প্রাচুর্যে ভরপুর।’
এরপর জন্মদিন উদযাপনের দ্বিতীয় আয়োজনে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের ‘সংকট ও সুযোগ’ গ্রন্থটির প্রকাশনা অনুষ্ঠিত হয় বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের ইস্ফেন্দিয়ার জাহিদ হাসান মিলনায়তনে।
সময় প্রকাশনের আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রীর নতুন গ্রন্থটি নিয়ে আলোচনা করেন কথাসাহিত্যিক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন, প্রাবন্ধিক ও গবেষক নূহ-উল-আলম লেনিন। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন কথাসাহিত্যিক আনিসুল হক। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন সময় প্রকাশনের প্রকাশক ফরিদ আহমেদ।
এ আয়োজনে অর্থমন্ত্রীর জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে কথাসাহিত্যিক আনিসুল হক বলেন, একসময় দেখেছি প্রতি বছর বইমেলায় তিনি বৈকালিক পরিদর্শনে আসতেন। স্টলে স্টলে ঘুরে পছন্দের বই সংগ্রহ করতেন। তাকে দেখে বিস্ময় জাগে, এই বয়সেও নিজেকে তিনি এতটা প্রাণবন্ত রাখেন কীভাবে। তাকে দেখি বয়সকে উপেক্ষা করে উচ্চাঙ্গসংগীতের আসরে রাতের পর রাত জেগে সুরের মাঝে নিজেকে নিমজ্জিত করে রাখেন।
অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রীকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে আরো বক্তৃতা করেন বিজিএমইএ’র সাবেক সভাপতি আতিকুল ইসলাম। এতে ফুলেল শুভেচ্ছা জানায় বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির পক্ষে অর্থনীতিবিদ আবুল বারাকাত, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, বাংলাদেশ শিশু একাডেমি, জাতীয় জাদুঘর, অগ্রসর বিক্রমপুর ফাউন্ডেশন, রবীন্দ্র একাডেমি, আওয়ামী লীগের মুখপত্র উত্তরণ, স্বর্ণকিশোরী নেটওয়ার্ক ফাউন্ডেশন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি সম্পর্ক বিভাগ, গৃহ করদাতা ইউনিট, এফবিসিসিআই, কাকলী প্রকাশনী, অ্যাডর্ন পাবলিকেশন্স, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)।
এ আয়োজনের শুরুতেই ‘আনন্দলোকে মঙ্গলালোকে বিরাজ সত্যসুন্দর’ শীর্ষক রবীন্দ্রসংগীত পরিবেশন করেন লিলি ইসলাম।
RED TIMES LIMITED
116-117, Concord Emporium, Kataban, Dhaka-1205.
Mobile: 017111-66826
Email: [email protected]
Web Design by: SuperSoftIT.com