রূপক দত্ত চৌধুরী, শ্রীমঙ্গল, মৌলভীবাজারঃ
“জনগণের লড়াই-সংগ্রামে ইতিহাস রচিত হয়েছে কিন্তু স্বপ্ন বাস্তবায়িত হয়নি যুব সমাজের, সৃষ্টি হয়নি সমৃদ্ধ ও নিরুদ্বিগ্ন জীবনের।
আর্থ-সামাজিক পরিমন্ডলে প্রতিফলন ঘটেনি মুক্তিযুদ্ধের চেতনার আলোকে লালিত লড়াকু যুব সমাজের স্বপ্ন ও আকাঙ্ক্ষা।মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় আর্থ-সামাজিক ব্যবস্থা গড়ে তোলা জরুরি।
আর তাই বলছি, প্রথমেই কর্মসংস্থান নইলে বেকার ভাতা দাও।”বাংলাদেশ যুবমৈত্রীর কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি তৌহিদুর রহমান মৌলভীবাজারে সংগঠনের ৩য় জেলা সম্মেলন উদ্বোধনকালে এসব কথা বলেন।
শোষণ-বঞ্চনা বেকারত্বের বৃত্ত ভাঙো।বেকারত্ব-বৈষম্য-দুর্নীতি রুখে দাঁড়াও। সাম্প্রদায়িকতা ও সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসন রুখো। কর্মসংস্থান ও বেকার ভাতার লড়াইয়ে যুব শক্তি ঐক্যবদ্ধ হও। – এইসব শ্লোগান আর সংগ্রামের অঙ্গীকার নিয়ে ১২ই ডিসেম্বর সোমবার বিকাল ৪টায় মৌলভীবাজার শহরের জাতীয় মহিলা সংস্থার শহীদ আইভি রহমান অডিটোরিয়ামে শোষণ-বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই-সংগ্রামের ঐতিহ্যবাহী সংগঠন বাংলাদেশ যুবমৈত্রীর ৩য় জেলা সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
এ সম্মেলন উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ যুবমৈত্রীর কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি তৌহিদুর রহমান।
প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কমরেড সিকান্দর আলী।
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির মৌলভীবাজার জেলা সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য কমরেড সৈয়দ আমিরুজ্জামান ও পার্টির মৌলভীবাজার জেলা সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য কমরেড অাফরোজ আলী।
প্রধান বক্তা বাংলাদেশ যুবমৈত্রীর কেন্দ্রীয় সহসভাপতি আব্দুল আহাদ মিনার।
বাংলাদেশ যুবমৈত্রীর মৌলভীবাজার জেলা সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহবায়ক তাপস কুমার ঘোষের সঞ্চালনায় ও সংগঠনের মৌলভীবাজার জেলা শাখার আহবায়ক সিরাজুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন শেখ জুয়েল রানা, শেখ মো: আবু সাঈদ, মিজানুর রহমান মিস্টার, জেসমিন জুঁই ও সংগঠনের জেলা সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির যুগ্ম আহবায়ক মো: নজরুল ইসলাম প্রমূখ।
সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় ‘৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধে ত্রিশ লাখ শহীদ, সম্ভ্রম হারানো ২ লক্ষ মা-বোন, নির্যাতিত পনের লাখেরও বেশি মানুষ, সর্বস্ব হারানো ১ কোটি মানুষসহ গোটা জনগণের লড়াই-সংগ্রাম-ত্যাগ তিতিক্ষা আর অবদানের কথা স্বীকার করে তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির মৌলভীবাজার জেলা সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য কমরেড সৈয়দ আমিরুজ্জামান বলেন, “মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন করতে হলে বিদ্যমান শোষণমূলক আর্থ-সামাজিক ব্যবস্থার মৌলিক পরিবর্তন দরকার। দরকার জনগণের মৌলিক মানবিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় সুশাসন নিশ্চিত করা। আর সেটি করতে হলে আমাদের বৈষম্যহীন ব্যবস্থা চালু করতে হবে। গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, ধর্ম নিরপেক্ষতা এবং জাতীয়তাবাদ এই চার নীতিতে দেশকে এগিয়ে নিতে হবে। তাহলেই জনআকাঙ্খা পূরণ করা সম্ভব হবে।”
সম্মেলনের ২য় পর্ব কাউন্সিল অধিবেশনে আফরোজ আলীকে সভাপতি, সিরাজুল ইসলাম বুলবুল, মিজানুর রহমান মিস্টার, নূর চৌধুরী, জেসমিন জুঁই ও নীরনেপুর তুলসী প্রসাদকে সহ-সভাপতি; তাপস কুমার ঘোষকে সাধারণ সম্পাদক, শেখ জুয়েল রানাকে সহ-সাধারণ সম্পাদক, নজরুল ইসলামকে সাংগঠনিক সম্পাদক, পিন্টু দেবনাথকে অর্থ সম্পাদক, মিতালী রানী দাশকে নারী বিষয়ক সম্পাদক ও রিনা সরকারকে স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক করে সর্বসম্মতিক্রমে ৩৯ সদস্য বাংলাদেশ যুবমৈত্রীর মৌলভীবাজার জেলা কমিটি গঠন করা হয়।
নবগঠিত জেলা কমিটিকে সংগঠনের শপথ বাক্য পাঠ করান বাংলাদেশ যুবমৈত্রীর কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি তৌহিদুর রহমান।
সংবাদটি শেয়ার করুন