সিলেট বাংলা নিউজ বিজ্ঞান ডেস্কঃ যদিও খবরটি খুব তরতাজা নয়। কিন্তু দারুণ উদ্দীপক এবং আমাদের জন্য খুবই প্রেরণাদায়ক খবর এটি।
অবশেষে বিজ্ঞানী ক্রেগ ভেন্টরের প্রায় ১৫ বছরের ক্লান্তিহীন গবেষণা সফলতার মুখ দেখেছে। তিনি তৈরি করেছেন প্রথম ‘কৃত্রিম প্রাণ’।
কম্পিউটারে কৃত্রিমভাবে তৈরি ক্রোমোজোমের মাধ্যমে একটি পোষক ব্যাকটেরিয়ার কোষে ‘প্রাণ’ সঞ্চারে সফল হয়েছেন তিনি। এর মধ্য দিয়ে নতুন সিন্থেটিক জীবন যুগের সূচনা হলো– যখন প্রাণ ‘সৃষ্টি’র ব্যাখ্যার জন্য কোনো অলৌকিক কিংবা অপার্থিব অনুকল্পের দরকার পড়ছে না, বিজ্ঞানীরা হাতে কলমেই তৈরি করে তা দেখিয়ে দিচ্ছেন।
দেশ-বিদেশের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে গুরুত্বের সঙ্গে খবরটি ছাপা হয়েছে। বিজ্ঞান সাময়িকী ‘সায়েন্স’ এই অগ্রগতিকে অভিহিত করেছে বিজ্ঞানের ইতিহাসের এক বিশাল মাইলফলক হিসেবে।
সায়েন্টিফিকে আমেরিকান, ডিস্কভারসহ বিজ্ঞানের সব পত্রিকাই প্রথম পৃষ্ঠায় ফিচার নিউজ হিসেবে খবরটি দিয়েছে। যারা স্বল্প সময়ে ভেন্টরের এই গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার সম্পর্কে অবহিত হতে চান তারা দেখে নিতে পারেন লেখার শেষে সংযুক্ত ভিডিও দু’টি।
বলা বাহুল্য, ক্রেগ ভেন্টর জেনেটিক্সের জগতে এক অতি পরিচিত নাম। তিনি জীববিজ্ঞান জগতে যোগ করেছেন এক নতুন মাত্রা। যখন বিজ্ঞানীরা প্রথমবারের মতো বিভিন্ন জীবের জিনের পঠনের শুরু করেছিলেন, তখন ভেন্টর নিজ উদ্যোগে তৈরি করেছিলেন ইন্সটিটিউট ফর জেনেটিক রিসার্চ (TIGR)।
এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তিনি ব্যাকটেরিয়ার জিনোম ডিকোড করতে সমর্থ হন ১৯৯২ সালে। বেসরকারি উদ্যোগে তিনিই প্রথম মানুষের জিনোম শৃঙ্খলা লিপিবদ্ধ করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন এবং সবাইকে চ্যালেঞ্জ করে ঘোষণা দিয়েছিলেন, তিনিই বিশ্বে প্রথম মানুষের জিনোম সংশ্লেষণ করতে সমর্থ হবেন। সেই চ্যালেঞ্জকে পূর্ণতা দিয়ে ২০০১ সালে তিনি ফল প্রকাশ করেন – যা ছিলো মুল সময়সূচির অন্তত এক বছর অগ্রগামী।
ল্যাবরেটরিতে কৃত্রিম উপায়ে জীবন তৈরির উদ্দেশ্যে ২০০৫ সালে ভেন্টর সিন্থেটিক জিনোমিক্স বলে একটি কোম্পানিও প্রতিষ্ঠা করেন ।
তিনি জে. ক্রেগ ভেন্টর ইন্সটিটিউট (JCVI)’র প্রতিষ্ঠাতা, যা জেনেটিক্সের গবেষণায় অগ্রণী এক সংস্থা আজ। এই সংস্থার মাধ্যমেই ভেন্টর তৈরি করলেন আজকের বহুল আলোচিত কৃত্রিম সিন্থেটিক প্রাণ।
কৃত্রিম জীবন তৈরির একেবারে দ্বারপ্রান্তে ছিলেন তিনি বেশ কয়েক বছর ধরেই। বলা হচ্ছিল, যে কোনো সমইয়েই তিনি তৈরি করে ফেলতে পারেন প্রথম কৃত্রিম জীবন।
বিগত কয়েক বছরে অনেক সাক্ষাৎকারেই তিনি বলেছেন সেটি। কেউ হয়তো ভ্রুকুটি করত। কেউ মুখে কিছু না বললেও ভেতরে ভেতরে পোষণ করতেন– ‘হ আপ্নের পোলা চাকরি পাইছে, কিন্তু দেইখেন বেতন পাইব না’ গোছের মনোভাব।
অথচ রসায়নাগারে কৃত্রিমভাবে ভাইরাস তৈরি করার প্রচেষ্টা তার হাত দিয়ে সফল হয়েছে অনেক দিন হলো, ২০০৩ সালে প্রথম সিন্থেটিক ভাইরাস তৈরি করা হয়েছিল ক্রেগ ভেন্টরের হাতেই এবং তা শতভাগ নিখুঁত।
পোলিও ভাইরাসসহ ১০ হাজার প্রজাতির ভাইরাস তৈরি করা গেছে ভাইরাসের জিনোম পর্যবেক্ষণ করে এবং জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের সাহায্যে।
এক ব্যাক্টেরিয়া থেকে অন্য ব্যাক্টেরিয়াতে রূপান্তরিত করার প্রক্রিয়াও সফল হয়েছে। আজ তিনি ব্যাকটেরিয়াসদৃশ সরল কোষ তৈরি করে দেখালেন। ভেন্টর এখন বলছেন, তার পরবর্তী প্রোজেক্ট হচ্ছে এর চেয়ে আরেকটু জটিল ইউক্যারিওট বানানো।
তিনি মনে করেন, অদূর ভবিষ্যতে খুব জটিল প্রাণীও তৈরি করা যাবে, যদি সিন্থেটিক জীবনের গবেষণা এগিয়ে যেতে থাকে এ রকম অবিশ্বাস্য গতিতে।
RED TIMES LIMITED
116-117, Concord Emporium, Kataban, Dhaka-1205.
Mobile: 017111-66826
Email: [email protected]
Web Design by: SuperSoftIT.com