রেডটাইমস ডেস্ক মৌলভীবাজার:
প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ মহসিন আলীর ৯ম মৃত্যুবার্ষিকী আজ।
বিগত ২০১৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু বরন করেন।
উল্লেখ” বীর মুক্তিযোদ্ধাসৈয়দ মহসিন আলী ১৯৪৮ সালের ১২ ডিসেম্বর মৌলভীবাজারে এক সম্ভান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। সৈয়দ মহসীন আলীর পিতার নাম সৈয়দ আশরাফ আলী। তিনি ব্যবসায়ী ছিলেন। সৈয়দ মহসীন আলীর মাতার নাম আছকিরুনন্নেছা খানম। মৌলভীবাজার থেকে ব্যবসায়ীক প্রয়োজনে তিনি কলকাতা চলে যান। কলকাতার আলীপুরে ছিলো তাদের বিশাল বাড়ি। আলীপুরের সেই বাড়িতে ১৯৪৮ সালের ১২ই ডিসেম্বর তিনি জন্মগ্রহণ করেন। ৫ ভাইদের মধ্যে তিনি সবার বড় ছিলেন। সৈয়দ মহসিন আলীর শিক্ষা জীবন শুরু হয় কলকাতায়। তিনি কলকাতার সেন্টজেবিয়ার্স স্কুলে জুনিয়র কেমব্রিজ ও সিনিয়র কেমব্রিজ পাস করেন। পরবর্তীকালে আবার বাংলাদেশে এসে বাংলা মাধ্যমে কিছুদিন পড়াশুনা করেন। তবে আবারও তিনি কলকাতা থেকে ম্যানেজমেন্টে ডিপ্লোমা করেন।
ছাত্র জীবনেই সৈয়দ মহসিন আলী আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন। ১৯৭১ সালে ২৩ বছর বয়সে বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য সক্রিয়ভাবে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। সম্মুখসমরে গুলিবিদ্ধও হয়েছিলেন তিনি। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর তিনি মৌলভীবাজারের বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক কার্যক্রমে আরও সক্রিয় হয়ে পড়েন। রাজনীতির বাইরে সৈয়দ মহসিন আলী একজন সামাজিক সংগঠক ও সাংবাদিক ছিলেন।
১৯৭৬ থেকে ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত সৈয়দ মহসিন আলী মৌলভীবাজার মহকুমা রেডক্রিসেন্ট সোসাইটিতে সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ১৯৯৮ সাল থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত মৌলভীবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৮৪ সাল থেকে মৌলভীবাজার পৌরসভায় পরপর তিন বার বিপুল ভোটে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।
১৯৯২ সালে স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় থেকে তাঁকে শ্রেষ্ঠ পৌরসভার চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত করা হয়।
এরপর সাধারণ মানুষের ভালোবাসায় ২০০৮ সালে মৌলভীবাজার- রাজনগর ৩ আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
২০১৪ সালের ১২ই জানুয়ারি তিনি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সমাজকল্যাণ মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব লাভ করেন। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব গ্রহণের পর তিনি মন্ত্রণালয়ের প্রকল্পগুলোকে ঢেলে সাজিয়েছেন। সেখানে এখন বহুমুখী বাস্তবসম্মত প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে।
সমাজসেবায় অবদান রাখার জন্য তিনি ভারতের নেহের” সাম্য সম্মাননা ও আচার্য দীনেশ চন্দ্র সেন সম্মাননা স্বর্ণপদক লাভ করেন।
দেশের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদানের জন্য দেশের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় মরণোত্তর স্বাধীনতা পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। ২০১৭ সালে বাংলাদেশ সরকার তাঁকে স্বাধীনতা পুরস্কার দেয়।
মানুষের জন্য কাজ করাই ছিল তাঁহার জীবনের মূল লক্ষ্য উদ্দেশ্য। বিনিময়ে তিনি পেয়েছেন মানুষের শ্রদ্ধা ও ভালবাসা। এই দানবীর ব্যক্তি তাই মরেও অমর হয়ে আছেন সকলের হৃদয়ে মাঝে । ’
সংবাদটি শেয়ার করুন