২৮শে মার্চ ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ই চৈত্র ১৪২৯ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১০:১০ পূর্বাহ্ণ, জানুয়ারি ৩০, ২০২৩
সুমন শামসুদ্দিন
বাংলাদেশের বাইরে, বিশেষ করে নিউইয়র্কে এখন অনেকেই বাংলা ভাষা চর্চা ও সাহিত্যকর্মের সাথে যুক্ত। নবীন, প্রবীণ ও খ্যাতনামা কবি-সাহিত্যিকগন বিচরণ করছেন এবং অবদান রাখছেন সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায়। তবে চর্চার পাশাপাশি নবীন লেখক-লেখিকাদের উৎসাহ এবং প্রচারে খুব কম সংখ্যক প্রখ্যাত কবি, সাহিত্যিক এবং সাহিত্য সংগঠনকে এগিয়ে আসতে দেখা যায়।
নিউইয়র্কের সাহিত্যচর্চার জগতে এমনই একজন কবি, লেখিকা হলেন এইচ বি রিতা, যিনি সাহিত্যচর্চায় একনিষ্ঠ নিবেদিত প্রাণ এবং পাশাপাশি প্রথম আলো উত্তর আমেরিকার ‘উত্তরের সাহিত্য’-এর ছায়াতলে থেকে তার অক্লান্ত পরিশ্রম এবং প্রচেষ্টায় নবীনদের উৎসাহ প্রদানে দেশ-বিদেশের লেখক, কবি, সাহিত্যিকদের সাথে সংযোগ স্থাপনে বিশেষ ভূমিকা রাখছেন। যার ফলশ্রুতিতে ইতিমধ্যেই তিনি তার সমবয়সী এবং অনুরাগী মহলে লক্ষ্যণীয় প্রশংসা অর্জনে সক্ষম হয়েছেন।
প্রথম আলো উত্তর আমেরিকার সাথে লেখক হিসাবে আমার যাত্রা শুরু মূলত এইচ বি রিতার মাধ্যমে। একজন সাহিত্য বিভাগীয় সম্পাদকের ব্যক্তিত্ব বা আচরণ সম্পর্কে মোটামোটি আমাদের মতো লেখকদের একটা ধারণা আছে।সেই হিসাবে এইচ বি রিতা কিছুটা ব্যতিক্রমী ব্যক্তিত্বসম্পন্ন মানুষ, আমি বলতে চাচ্ছি একটু বেশিই সহজ মানুষ যিনি প্রতিটা লেখকের সাথে অতি বিনয় ও ভদ্রতা বজায় চলেন। যোগাযোগ রাখেন সবার সাথে নিয়মিত। প্রথম আলো উত্তর আমেরিকার সাপ্তাহিক সাহিত্য বিভাগটিতে ভিন্ন এক রূপ সংযোজন করতে সক্ষম হয়েছেন এইচ বি রিতা, আদায় করতে সক্ষম হয়েছেন উত্তরের অগণিত পাঠকের হৃদয়। তার সম্পাদনায় উত্তরের সাহিত্যের এই যাত্রাশৈলী প্রবাসের বাংলা ভাষা ও সাহিত্যচর্চার ক্ষেত্রকে নিঃসন্দেহে আরও সমৃদ্ধ করবে এবং বের হয়ে আসবে অনেক ঋদ্ধ কবি সাহিত্যিক।
উত্তরের সাহিত্যের উত্তরণে এইচ বি রিতা বলেন “সাহিত্য- সাধনা ও চর্চার বিষয়। সাহিত্য-পর্যবেক্ষণ ও উপলদ্ধিতে আবেগ ও ভাবনার জগতে মগ্নতার বিষয়। সাহিত্যের অভ্যাস-সমষ্টিগত একাগ্রতা ও ঐক্যতার মতো কিছু একটাও, কেননা ভাবনার আদান-প্রদান আমাদেরকে নতুন ও ভিন্ন কিছু শিখতে ও জানতে সাহায্য করে। উত্তরের সাহিত্যের মাধ্যমে আমি নবীনদের সেই সাহিত্য চর্চা অব্যাহত রাখার পাশাপাশি জীবনের প্রতি ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে আমাদের মেধাবী লেখক, কবিদের স্বাগতম জানাই।”
তার এই সফল প্রচেষ্টার পুরস্কার স্বরূপ ২০২৩ সালের শুভলগ্নেই তিনি ভূষিত হলেন এক বিশেষ সম্মানে, সার্বজনীন স্বীকৃতির মাধ্যমে অর্জন করলেন সম্মাননা স্বারক। গত ১৪ জানুয়ারী শনিবার প্রথম আলো উত্তর আমেরিকার এক অনুষ্ঠানে এইচ বি রিতার হাতে এই সম্মাননা স্বারক তুলে দেন টাউনশিপ অফ ফ্রাঙ্কলিন, কাউন্টি অফ সমারসেট, নিউজার্সি স্টেটের কাউন্সিলওম্যান শেপা উদ্দিন। সাথে ছিলেন সম্পাদক ইব্রাহিম চৌধুরী। সেদিন আমিও অডিয়েন্সে বসে ছিলাম, একজন লেখক, পাঠক ও শুভাকাঙ্ক্ষী হিসাবে আনন্দে আপ্লুত হচ্ছিলাম। সম্ভবত সর্বপ্রথম “শুভ কামনা” বার্তাটি আমিই তাকে মেসেজবক্সে পাঠিয়েছিলাম।
এইচ বি রিতা-তার ব্যক্তি জীবনেও একজন সফল মানুষ। যুক্ত রয়েছেন তিনি নিউইয়র্কের স্পেশাল এডুকেশনের সঙ্গে। তিনি নিউইয়র্ক সিটির হাইস্কুল ‘A School Without Walls’-এ শিক্ষক হিসেবে এক মহান পেশার দায়িত্ব পালন করছেন। নিউইয়র্কের টরো কলেজ এন্ড ইউনিভার্সিটি থেকে এইচ বি রিতা এডুকেশন এবং চাইল্ড সাইকোলোজির উপর উচ্চশিক্ষা সম্পন্ন করেছেন।সেই সাথে সাংবাদিকতাও করছেন।
এইচ বি রিতা একজন ভার্সাটাইল লেখক। তিনি যেমন গল্প, উপন্যাস, কবিতা লিখতে পছন্দ করেন, তেমনি পাশাপাশি পেরেন্টিং, শিশু যত্ন, মানসিক স্বাস্থ্য ও মানব আচরণ নিয়েও গবেষণামূলক কলাম লিখে যাচ্ছেন অত্যন্ত দক্ষতার সাথে। ফেসবুকও দেশ বিদেশের বিভিন্ন পত্রিকায় আমি নিয়মিত তার লেখা পড়ি। দেখে অবাক হই, ক্ষণিকের মধ্যেই কেমন করে দুর্দান্ত সব কবিতা লিখে ফেলেন। বই পড়ুয়া এইচ বি রিতার ফেসবুক ছবির মাধ্যমে দেখতে পাই তার ঘরে সাজানো ছোট লাইব্রেরিটি।সেখানে রয়েছে বাংলা ইংলিশ সব ধরণের বই। সময় সুযোগ পেলেই ছুটে যান তিনি লাইব্রেরিতে, সংগ্রহ করেন মানসিক স্বাস্থ্যের উপর নানান বিষয়ভিত্তিক ইংরেজি বইগুলো। বাংলা এবং ইংরেজী দুই ভাষাতেই সাহিত্য জগতে তার সমপারদর্শীর সাথে বিচরণ রয়েছে।
সাহিত্য বিষয়ে তার মতাদর্শ এবং চিন্তাধারা অনেক উন্নত মনের পরিচয় বহন করে। এইচ বি রিতার ভাবাদর্শ হচ্ছে জ্ঞান এবং মেধার বিকাশ। ভেঙে পড়া অসংখ্য মানুষের জন্য অনুপ্রেরণার এক মাইলফলক বলা যায় তাকে। সব থেকে মুগ্ধ করে যা তা হলো-যে কোন পরিস্থিতিতে তার ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি ও দর্শনের বিস্তৃতি।
সাহিত্যাঙ্গনে সফল পদচারণা এবং অবদানের জন্য অপরিসীম কৃতজ্ঞতা এবং শ্রদ্ধা এইচ বি রিতার প্রতি।
RED TIMES LIMITED
116-117, Concord Emporium,
Kataban, Dhaka-1205.
Mobile: 017111-66826
Email: redtimesnews@gmail.com