টাঙ্গাইলের কামিলপুর মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ড. ফায়জুল আমীর সরকারকে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বেহেস্ত কামনা করায় পুলিশ আটক করেছে।
১৬ ডিসেম্বর শনিবার সকাল আটটায় উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কার্যালয় প্রাঙ্গণে এ ঘটনা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কার্যালয়ে শনিবার সকাল ৮টার দিকে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণের আগে একাত্তরের শহীদদের রুহের মাগফেরাত কামনা করে দোয়ার আয়োজন করা হয়। এ দোয়া অনুষ্ঠানে মোনাজাতে নেতৃত্ব দেন গোপালপুর কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ড. ফায়জুল আমীন সরকার।
দোয়ায় ফায়জুল আমীন সরকার বলেন, ’হে আল্লাহ তুমি পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধু হত্যাকারি, যাদের ফাঁসি হয়েছে তাদের বেহেস্তো নসীব করো। হে আল্লাহ তুমি বিচারের পর তাদেরকে বেহেস্ত নসীব করো।’
দোয়া অনুষ্ঠানে তার এ ধরনের বক্তব্যে উত্তেজনা দেখা দিলে উপস্থিত নেতারা সকলকে শান্ত করেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান ইউনুস ইসলাম তালুকদার, উপজেলা নির্বাহী অফিসার দিলরুবা শারমীন, ওসি হাসান আল মামুন, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মরিয়ম আক্তার মুক্তা, পৌর মেয়র রকিবুল হক ছানা, জেলা পরিষদ সদস্য মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কাদের তালুকদার, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির টাঙ্গাইল জেলা শাখার আহ্বয়ক অ্যাডভোকেট কেএম আব্দুস সালাম, সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আব্দুস সোবহান তুলা প্রমুখ।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার দিলরুবা শারমীন জানান, দোয়া অনুষ্ঠানে এ ধরনের দুর্ভাগ্যজনক বক্তব্য শুনে তিনি নিজের কানকে প্রথমে বিশ্বাস করতে চাননি।
গোপালপুুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসান আল মামুন প্রিয়.কমকে বলেন, ‘শনিবার সকালে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আয়োজিত অনুষ্ঠানে কামিলপুর মাদ্রাসা অধ্যক্ষ ড. ফায়জুল আমীর সরকার আমাদের উপস্থিতিতে মোনাজাতের সময় বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বেহেস্ত কামনা দোয়া দোয়া পড়তে থাকেন। মোনাজাতের পর পরই ড. ফায়জুলকে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। এ ঘটনায় ড. ফায়জুলের অন্য কোন উদ্দেশ্য রয়েছে কিনা তা জানতে আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করছি এবং ড. ফায়জুলের গ্রামের বাড়ি কুমিল্লাতে তার সম্পর্কে খোঁজ খবর নিচ্ছি।’
ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে মামলা করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে জানান ওসি হাসান আল মামুন।
উপজেলা চেয়ারম্যান ইউনুস ইসলাম তালুকদার বলেন, ‘গ্রেনেড হামলা মামলার প্রধান তিন আসামির বাড়ি গোপালপুরে। গোপালপুরের দুই জঙ্গি সম্প্রতি ক্রসফায়ারে মারা গেছে। অধ্যক্ষ ড. ফায়জুলের মতো মুক্তিযুদ্ধবিরোধী মানুষ, যারা জামায়াত-শিবিরের সঙ্গে যুক্ত ছিল তাদের মুখ থেকে এমন কথা বের হওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়। আমরা তার কঠিন শাস্তি চাই।’
তবে সাবেক উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার এবং গোপালপুর কামিল মাদ্রাসার পরিচালনা কমিটির সভাপতি আব্দুস সোবহান তুলা জানান, মুখ ফসকে হয়তো তিনি একথা বলেছেন। তবে তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হবে।
সংবাদটি শেয়ার করুন