বয়ানে রামাদান ০৩

প্রকাশিত: ১:৩৮ পূর্বাহ্ণ, মার্চ ২৬, ২০২৩

বয়ানে রামাদান ০৩

 

 

চৌধুরী হাফিজ আহমদ

রামাদানে যদি কষ্ট অনুভুত না হয় তা হলে বুঝতে হবে সিয়ামে কিয়ামে কমতি রয়েছে  ।  ফজর থেকে মাগরিব পর্যন্ত উপোস থাকার নাম রোজা নয় ।

সিয়াম মানে বুঝায় কষ্ট কে যদি তা আমরা অনুভব করতে না পারি তা হলে বুঝে নিতে হবে আমরা রামাদান মাসকে উপভোগ করতে পারছিনা বা পুরুপুরি রামাদান কে অনুধাবন করতে পারছি না ,খাবারের মহোৎসব চলে ইফতারে ! এমন এমন বিলাসিতা করছি ইফতার খাবারের সময়ে যা অন্যসব বিলাসিতা কে ও হার মানায় , এমনও দেখেছি আমি ২০/২২ পদের রান্না করা খাবার ইফতারে উপস্তিত , সিয়াম পালন করব আমরা ত্যাগের মন মানসিকতা নিয়ে কিন্তু বাস্তবে করছি একদম বিপরিত , আবার এত অপচয় করছি যা শাইতান কে ও হার মানায় , খাবারের অতিরিক্ততায় আমাদের সিয়ামের পবিত্রতা ক্ষুন্ন হচ্ছে , ইফতারি সংস্কৃতি আমাদের নিয়ে যাচ্ছে এই পবিত্র মাসে নিশ্চিত জাহান্নামের দিকে ,আমার নিজের অঙ্গনেই দেখি হরেক রকমের ইফতারি , যখন বুঝতাম না তখন আমি ও খাবার খেয়েছি হিসাব ছারা , এখন বুঝি তাই ইফতারে রাখছি একদম হালকা , এই খাবার আমি খাচ্ছি কিন্তু অনেকেই সেই খাবার পাচ্ছে না , আমরা তাহাদের খাবার পৌঁছে দিতে করছি কার্পণ্যতা ,কষ্ট ব্যাপারটা খুব বিশাল , মনের কষ্ট কে অনেকেই দমিয়ে রাখতে পারেনা , তা প্রকাশ করে রাগ করে , অভাবের মধ্যে যাহারা বসবাস করছে তাহারাই তা দেখতে পায় এমন এমন কিছু কাণ্ড করে বসে যা মোটে ও কাম্য নয় এই সব কাজে নির্ঘাত রামাদানের প্রাপ্তি থেকে নিজেকে বঞ্চিত করে রাখা হচ্ছে , রামাদানে যত কম খাব যত কম বিলাসিতা করব ততই মঙ্গল , তাকওয়া অর্জনে সহায়ক হবে , তিলাওয়াতে কালামে পাক , অন্যকে সাহায্য করা , নিজে ত্যাগ করে অন্যকে বিলায়ে দিতে পারার নাম ই হচ্ছে সংযম , নিজে কষ্ট করে তার থেকে শিক্ষা নিয়ে তা নিজের অঙ্গনে বাস্তবে প্রয়োগ করতে পারাটাই হচ্ছে সার্থকতা , এখন যদি সেই কষ্ট নিজে করতে পারলাম না তা হলে কি শিক্ষা নেব ? তাই আমাদের নিজেকে উৎসর্গ করে দিতে হবে উজার করে রামাদানের মর্ম অনুধাবন করার মাধ্যমে নিজে ও অন্যের জিবনে প্রয়োগ করতে পারাটাই হবে কামিয়াবি । রামাদানে যদি আরাম করি এবং আনন্দে কাঠাই তা হবে ব্যর্থতা , তাই রামাদান আসার আগেই রজব মাস থেকেই একটি রুটিন করে নেয়া উচিত , কি করে রামাদানের ৩০ দিন আমরা ব্যবহার করব নিজেকে সংশোধন ও পরিবর্তন করার জন্য , রাসুলুল্লাহ সঃ নিজেই প্রস্তুতি নিতেন রজব মাস থেকে – এবং তিনি দুআ করতেন আল্লাহর কাছে , এই দুআ টি খুব প্রসিদ্ধ যা বারংবার রাসুলুল্লাহ সঃ পাঠ করতেন – আল্লাহুম্মা বারিক লানা ফি রাজাবা ওয়া শা`বান ওয়া বাল্লিগ না রামাদান , এই দুআ তে এত বরকত যে লিখে শেষ করা যাবেনা , এই দুআ তে হায়াত পর্যন্ত বেড়ে যায় , দুআ এমনিতেই ভাগ্য পরিবর্তনের এক মহা অশ্র এবং এই দুআ এমন এক বরকত পূর্ণ শব্দতেই বুঝা যায় এর হাক্কিকাত , আল্লাহ যেন আমাদের বেশী বেশী দূ আ করার তাওফিক্ক দান করেন ,রামাদানে যত বেশী দূ আ করব এতে ফায়দার মধ্যে থাকব , কেননা রামাদান মাস আমাদের জন্য হচ্ছে এমন এক মাস যে মাসে আমরা বাকী ১১ মাসের রসদ পাই এবং আখিরাতে মুক্তির পথ হাসিল করতে পারি । তাই আসুন এই রামাদানের বাকি ২৩ দিনে আমরা কম খাই – কম কথা বলি – কম বিলাসিতা করি – এবং বেশী বেশী ইবাদত করি , ইবাদত এমন এক ব্যাপার যা আচার আচরন ব্যবহার এমন কি ইশারার মাধ্যমে ও করা যায় , আল্লাহ আমাদের দিয়েছেন তাহার গোলামী করতে , এবং গোলামির মাধ্যমেই আমরা পেতে পারি দুনিয়া ও আখিরাতে কল্যান , রামাদান মাস এলে আমি আনন্দিত হই , এত আনন্দ যে যা বলে শেষ করা যাবেনা , লিখনি দিয়ে বুঝানো যাবেনা , এই মাসের আলাদা মর্যাদা আমার কাছে , এই মাসের কর্মকাণ্ডে আমার কবর আলোকিত হবে , আমি যেন আমার কবরের লাগেজ এই মাসেই গোছাই , আল্লাহ যেন আমাদের সবাইকে রামাদানের হক্ক আদায় করার তাওফিক্ক দেন , আমরা যেন রামাদান থেকে ফায়দা হাসিল করতে পারি , রামাদান দিতেই আসে , এই অফুরন্ত ভাণ্ডার থেকে আমরা যেন আমাদের কাঙ্ক্ষিত সম্পদ আহরন করতে পারি । ওয়ামা তাওফিক্কি ইল্লাবিল্লাহ আলাইহি তাওাক্কালতু ওয়াইলাইহি উনিব – জাযাল্লাহু আন্না মুহাম্মাদান সঃ মাহুয়া আহলুহু – আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুউন তুহিব্বুল আফুয়া ফা`ফু আন্নি ইয়া কারিম – ফাতিরাস সামাওওয়াতি ওয়াল আরদ আনতা ওয়ালি ই ফিদ দুনিয়া ওয়াল আখিরাহ তাওাফফানি মুসলিমান ওয়াল হিক্কনি বিস সওয়ালিহিন , রাব্বির হামহুমা কামা রাব্বায়ানি সাগিরা – আল্লাহুম্মাগফিরলি মাউতা ওয়া মাউতাল মুসলিমিন – আল্লাহ যেন আমাদের এক ও নেক হয়ে চলার তাওফিক্ক দান করেন ।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

লাইভ রেডিও

Calendar

June 2023
S M T W T F S
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
252627282930