মোঃ মশিউর রহমান বিপুল, কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধিঃ
করোনা মহামারির আতঙ্ক ও স্বজন হারানো বেদনার স্মৃতি পিছনে ফেলে মানুষ যখন স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে শুরু করেছে তখন ধরণিতেও ‘বসন্ত এসে গেছে’। বিবর্ণ প্রকৃতিতে জেগে উঠেছে নতুন জীবনের ঢেউ। একই সাথে ফাগুন রঙে ভালোবাসার ফুল ফোটানোর দিন। বাংলা বর্ষপঞ্জিতে সংশোধনের কারণে ফাল্গুন মাসের প্রথম দিন ও ভ্যালেন্টাইন’স ডে ভালোবাসা দিবস একই দিনে পড়েছে। তাই ফুল ফুটুক আর না ফুটুক আজ যেমন বসন্ত তেমনি বিশ্ব ভালোবাসা দিবস। ১৪ ফেব্রুয়ারি ভালোবাসা দিবসের সাথে পহেলা ফাল্গুন যোগ হওয়ায় দ্বিগুণ আনন্দ ছুঁয়ে যাবে প্রাণে। বসন্তের এই দিনে হৃদয় উদার, উন্মুক্ত হবে। তাই কবিগুরু বলেছেন, ‘আজি বসন্ত জাগ্রত দ্বারে/তব অবগুণ্ঠিত কুণ্ঠিত জীবনে/ কোরো না বিড়ম্বিত তারে/ আজি খুলিয়ো হৃদয়দল খুলিয়ো/ আজি ভুলিয়ো আপনপর ভুলিয়ো।’ প্রকৃতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাসন্তি রঙের শাড়ি পরবে নারীরা। রঙে রঙিন হবে নারী পুরুষ সবাই। বসন্তের রঙ্গীন পরশে অনেকেই গুনগুনিয়ে গেয়ে উঠবে ভালোবেসে, সখী, নিভৃতে যতনে আমার নামটি লিখো-তোমার মনের মন্দিরে।
ভালোবাসার বর্ণ,গন্ধ ও কোনো রঙ নেই… নেই কোনো আকার।ফাল্গুনের প্রথম দিন আর ‘ভ্যালেনটাইনস ডে’র একই দিনে আপন করে নেবে তরুণ প্রজন্ম। ফাল্গুন আর ভালোবাসার উচ্ছ্বাসে আজ মুখর হবে নানা বয়সের মানুষ।যেন হৃদয় রাঙানোর মহাদিনে একে অপরকে বলবে সখি ভালোবাসি তোমায়। এই দিনে মন খোলা যায়।কেমন সে দিন,কেমন দিনে তাকে বলা যায়।
রবীন্দ্রনাথ তার গানেই বলেছেন, তাহাতে এ জগতে ক্ষতি করে/নামাতে পারি যদি মনোভাবে দু’কথা বলি যদি কাছে তার/ তাহাতে আসে যাবে কি বা কার’। মনোভাবে নামানো নিয়েই যখন কথা তখন হোক না সে দিন শীত,গ্রীস্ম কিংবা বসন্তের। ভোর হতেই মানুষ আপন আপন ভাষায় গেয়ে উঠবে। জলে স্থলে বাজায় বাঁশি-ভালোবাসি ভালোবাসি। আর বসন্তের রঙে মন হবে রঙিন। এই রং ছড়িয়ে বসন্ত বিরাজ করে সবার মনে। এই দিনে প্রকৃতিকে রাঙাতে ব্যস্ত থাকে পলাশ, শিমুল আর কৃষ্ণ। কচি সবুজ পাতা, লাল-হলদে ফুল বসন্তের রঙে রাঙিয়ে দেবে প্রকৃতি। আর প্রকৃতির সেই রঙ দেখেই কোকিল গাইতে শুরু করবে কুহু কুহু……।
বিনোদন কেন্দ্রগুলো সরব হবে তরুণ-তরুণীসহ সব মানুষের পদচারণায়। প্রেমশার বাগিয়ে হৃদয়ে বন্দরে ঘুরে বেড়াবে।ভালোবাসা দিবসে ভালোবাসার শুভেচ্ছা শুধু প্রমিক প্রেমিকা সকলের ক্ষেত্রেই।রাত ১২টার পর থেকেই গোলাপের ইশারা বিনিময়, আর মনের গহীনের কথকতার কলি ফোটাবে তারা। ভালোবাসা নিয়ে কবিতা আর গান সুরে-বেসুরে শোনানো হবে প্রিয়জনকে।ভালোবাসার এই দিনে চকোলেট, পারফিউম, বই ইত্যাদি শৌখিন উপঢৌকন প্রিয়জনরা এক অপরকে উপহার দেবে। কেউ কেউ খোঁপায় গুজে দেবে গোলাপ।রাত ১২ টা পার হলেই পহেলা ফাল্গুন ও ভালোবাসা দিবস ঘিরে নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে বিভিন্ন সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান। আনন্দ আর উচ্ছাসমুখরতায় ভরে উঠবে মন-প্রাণ।
কুড়িগ্রাম চেম্বার অফ কমার্স আয়োজিত, কুড়িগ্রাম ধরলা ব্রীজে পাশে শেখ রাসেল পার্কে ১ মাস ব্যাপি মেলার আয়োজনে আছে বিশেষ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান
,পাশাপাশি বসন্ত উৎসবে থাকছে গান, নৃত্য ও আবৃত্তিসহ নানা আয়োজন।
সংবাদটি শেয়ার করুন