২রা অক্টোবর ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ | ১৭ই আশ্বিন ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১:৩৫ অপরাহ্ণ, মার্চ ৩, ২০১৮
বসন্তের রং-রূপে প্রকৃতি সেজে উঠছে নতুন সাজে । আগাম বৃষ্টিতে চা-বাগানের রুক্ষ চেহারা সবুজে ঢেকে গেছে । গাছে গাছে এখন দুটি পাতা একটি কুঁড়ি। প্রতিবছর মার্চ মাস থেকেই দু-এক পশলা বৃষ্টি হয়। এবার ফেব্রুয়ারি মাসের শেষের দিকে একদিন বৃষ্টিপাতের দেখা মিলেছে। ফলে এবার মওসুমের আগেই চা পাতা চয়নে নেমেছেন চা কন্যারা। এর মধ্যেই চা বাগানের আনাচে-কানাচে শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছে ফাগুয়া উৎসব। বসস্তের রং লেগেছে মৌলভীবাজার জেলার বিভিন্ন চা বাগানে। মজুরি বৃদ্ধির কারণে এককালীন এক বছরের বোনাস পাওয়া শ্রমিকদের ফাগুয়া উৎসবে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। লক্ষ লক্ষ চা গাছ দাঁড়িয়ে আছে সারি সারি টিলার পর টিলা। সবুজের সাথে বিবর্ণ চা শিল্পাঞ্চলের মানুষগুলোর মাঝে রংধনুর সাতরং ভর করেছে। তারা মেতে উঠেছে রঙের উৎসব ফাগুয়ায়। বেগুনী, নীল, আকাশি, সবুজ ,হলুদ, কমলা লাল -কী নেই? যে দিকে তাকানো যায় সেদিকেই রঙের ছড়াছড়ি। নারী-পুরুষ, আবাল-বৃদ্ধ সব বয়সীরা মেতে ওঠে ফাগুয়া উৎসবে। একে অপরের দিকে রং ছুড়ে মারছেন, গান গাইছে, নাচছে।
মৌলভীবাজার শ্রীমঙ্গলের চা বাগানগুলোতে এভাবেই চলছে সপ্তাহ ব্যাপী দোল উৎসব। ছন্দ-তাল লয়হীন এসব চা শ্রমিকের কঠিনতম জীবনে ফাগুয়া উৎসব এসেছে মহানন্দের জোয়ার নিয়ে। সেই জোয়ার ছড়িয়ে পড়েছে প্রতিটি চা-বাগানের আনাচে-কানাচে। চা বাগান গুলোতে শুধুই রং আর রঙের ছড়াছড়ি। হিন্দুধর্মীয় চা-শ্রমিকেরা সাতদিন ব্যাপী রং মাখামাখি, রং ছোড়াছুড়ি করে থাকে। প্রতিটি চা বাগানে চলছে সপ্তাহ ব্যাপী এই দোল উৎসব। বছরে অনেকগুলো উৎসবের মধ্যে এই দোল উৎসবে চা-জনগোষ্ঠীর মানুষজন সুযোগ পায় একটু আনন্দ করার। এটি তাদের কাছে রঙের উৎসব ফাগুয়া নামে পরিচিত। এ সময় পুরো চা-বাগান এলাকা নানা রঙে রঙিন হয়ে যায়। চিরসবুজ চা-বাগানে লাল, নীল, হলুদ, কালো, সবুজ নানা রঙের ছড়াছড়ি হয় তখন। এই দোল উৎসব উপলক্ষে বাড়তি আনন্দ প্রদান করে তাদের ঐতিয্যবাহী কাঠি নৃত্য পরিবেশনের মাধ্যমে। প্রতিটি চা-বাগানে তরুনরা
তরুণ-তরণী সেজে নাচের দল নিয়ে বের হয় শ্রমিক লাইনে। মাদলের তালের সঙ্গে পাহাড়ি গানের সুর সৃষ্টি করেছে এক রকম আবহ, মাধুর্য। নিজের অজান্তেই যেন হারিয়ে যাওয়া যায় এক অন্য রকম শৈল্পিক নেশায়। প্রতিবছর ফাল্গুন মাসের শেষ দিকে আর চৈত্র মাসের প্রথম দিকে পূর্ণিমা তিথিতে চলে এ উৎসব। উৎসব উপলক্ষে চা বাগানে দুই দিনের ছুটি দেয়া হয়। এ সময় চা শ্রমিকদের বাড়িতে বাড়িতে চলে আনন্দ উৎসব। শশুরবাড়ি থেকে বাপর বাড়িতে তখন বেড়াতে আসে মেয়ে। উৎসব শেষে ছোপ ছোপ রঙের দাগ লেগেই থাকে চা -বাগানের অলিগলিতে, শ্রমিক লাইন, বাড়িঘরের আঙিনায়। সারা বছরে এইসময়ে তারা উৎমকে মাতিয়ে রাখে সারা বাগান। ঘরে ঘরে আয়োজন করা হয় পিঠা-পুলিসহ নানা মুখরোচক খাবারের। বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারন সম্পাদক রামভজন কৈরী বলেন সারা বাংলাদেশের চা বাগানগুলোর মতো শ্রীমঙ্গলের প্রত্যেকটি চা বাগানগুলোতেও
ফাগুয়ার উৎসব পালিত হচ্ছে। শুক্রবার থেকে শুরু করে তিনদিন এ উৎসব পালিত হবে। ফাগুয়া উৎসবকে কেন্দ্র করে প্রত্যেকটি চা বাগানে চা শ্রমিকরা নানা আয়োজন করে থাকে। সবাই রঙ নিয়ে ছড়াছড়ি করে দোল খেলে।
RED TIMES LIMITED
116-117, Concord Emporium,
Kataban, Dhaka-1205.
Mobile: 017111-66826
Email: redtimesnews@gmail.com