ভারতের হাই কমিশনার হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা বলেছেন, বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যা করছে, তা নিশ্চয়ই সঠিক পথে হচ্ছে।
রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে বাংলাদেশের পরিকল্পনায় সমর্থন প্রকাশ করে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতিও এ প্রক্রিয়া এগিয়ে নেওয়ার আহ্বান ভারতের ।
মিয়ানমার ও বাংলাদেশের মধ্যকার চুক্তি অনুযায়ী, আগামী মঙ্গলবার রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু হয়ে দুই বছরের মধ্যে তা শেষ করার কথা।
গত সপ্তাহে মিয়ানমারের নেইপিদোতে এই চুক্তি চূড়ান্ত হওয়ার পর এখন রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন।
কয়েক মাস আগে মিয়ানমারের রাখাইনে যে সহিংসতার শিকার হয়ে তারা পালিয়ে বাংলাদেশে আসেন, সেই ক্ষত ‘না শুকানোর’ আগেই তাদের আবার সেখানে পাঠানো ঠিক হবে না বলে মত দিয়েছেন অনেকে।
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলছেন, রোহিঙ্গাদের নিজেদের গ্রামে ফেরত পাঠানো হবে কি না সে বিষয়টি চুক্তিতে স্পষ্ট করা হয়নি। এর ফলে তারা কি নিজের জায়গায় ফিরতে পারবেন নাকি ক্যাম্পেই তাদের জীবন কাটবে সে সংশয় থেকে যাচ্ছে।
এই প্রেক্ষাপটে রোববার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও হাই কমিশনারদের রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন পরিকল্পনা সম্পর্কে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী।
ওই অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের এই পরিকল্পনায় সংহতি জানিয়ে ভারতের হাই কমিশনার বলেন, “আমি মনে করি, তারা (রোহিঙ্গা) যাতে ফিরতে পারে সে লক্ষ্যে কাজ করে এই প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে ভূমিকা রাখা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।”
রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ফিরে যাওয়ার পথ তৈরিতে চুক্তি সম্পূর্ণ করায় বাংলাদেশ সরকারকে অভিনন্দন জানিয়েছিলেন বলেও উল্লেখ করেন হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা।
তিনি বলেন, রাখাইনে পরিস্থিতির উন্নয়ন ঘটিয়ে ভারতও রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় সহায়তা করছে।
“আমরা সব সময় বিশ্বাস করি যে, বাস্তুচ্যুত মানুষগুলো যাতে ফিরে যায় সে পরিবেশ তৈরির জন্য রাখাইনে টেকসই উন্নয়ন হওয়া উচিত।”
রাখাইনের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের যে সুপারিশ কফি আনান কমিশন করেছে, তার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ভারত রাখাইন উন্নয়ন কর্মসূচিতে সই করেছে বলেও এ প্রসঙ্গে উল্লেখ করেন দেশটির হাই কমিশনার।
“প্রাথমিকভাবে আমরা শরণার্থীদের প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছি এবং ফিরে যাওয়াদের জন্য সহায়ক পরিবেশ ও রাখাইনে স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরে আনার জন্য করছি।
“এ লক্ষ্যে আমরা মাঠ পর্যায়ে কম খরচে ঘর নির্মাণ করছি যাতে সরকার প্রত্যাবাসিত রোহিঙ্গাদের থাকার জায়গা দিতে পারে। আমরা মনে করি, প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া যত দ্রুত সম্ভব শুরু হওয়া উচিত। কারণ ওই ব্যক্তিদের নিজেদের ঘরে ফেরাটা গুরুত্বপূর্ণ। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়েরও এই প্রক্রিয়ায় ভূমিকা রাখা গুরুত্বপূর্ণ।”
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্বেগের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে ভারতীয় হাই কমিশনার বলেন, “সবার উদ্বেগ নিয়ে আপনাকে প্রয়োজনীয় পরিস্থিতি তৈরির জন্য কাজ করতে হবে। একথা বলার কোনো সুযোগ নেই যে, পরিস্থিতি ভালো নয় এবং কারও যাওয়া উচিত হবে না।”
তিনি বলেন, রোহিঙ্গারা ফিরে যাওয়ার পর যাতে থাকার জন্য ঘর এবং ভবিষ্যতের জন্য কাজ পায় সে লক্ষ্যে মিয়ানমার সরকারের সঙ্গে তারা কাজ করছেন।
RED TIMES LIMITED
116-117, Concord Emporium, Kataban, Dhaka-1205.
Mobile: 017111-66826
Email: [email protected]
Web Design by: SuperSoftIT.com