২২শে সেপ্টেম্বর ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ | ৭ই আশ্বিন ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১০:৫১ পূর্বাহ্ণ, মার্চ ১৩, ২০১৮
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিঙ্গাপুর সফর দু’দেশের মধ্যে অংশিদারিত্বের সম্পর্ক জোরদার করার একটি চমৎকার সুযোগ ,বলেছেন সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী লি সেইন লুং । গতকাল তার সঙ্গে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর প্রথম আনুষ্ঠানিক স্বাক্ষাতে লি সেইন লুং একথা বলেন ।
সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী তার ইস্তানায় অবস্থিত সরকারি বাসভবনে প্রধানমন্ত্রীর সম্মানে দেয়া এক মধ্যাহ্নভোজে বলেন, বাংলাদেশের বিকাশমান বাজারে জ্বালানী এবং বন্দর খাতে উল্লেখযোগ্য সম্ভাবনা থাকায় সিঙ্গাপুর ভিত্তিক প্রতিষ্ঠানগুলোর এই ব্যাপারে আগ্রহ রয়েছে ।
এ সময় তিনি জানান, সিঙ্গাপুরের অন্যতম বৃহত্তম বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান সেম্বকর্প, যার সিঙ্গাপুরের পাওয়ার প্লান্ট খাতে প্রায় ১ শ’ ১০ কোটি ডলার বিনিয়োগ রয়েছে এবং সিঙ্গাপুর পোর্ট অথরিটিস (পিএসএ) বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বন্দরে তাদের ব্যবসা সম্প্রসারণে আগ্রহী।
সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার কেন্দ্রবিন্দুতে অবস্থিত এবং আশিয়ান ও অন্যান্য প্রতিবেশীর সঙ্গে যোগাযোগের জন্য সুঅবস্থানে রয়েছে। তিনি বলেন, বঙ্গোপসাগর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, ভারত এবং শ্রীলঙ্কার সঙ্গে যুক্ত।
তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, দু’দশের মধ্যে বিমান চলাচল চুক্তি নবায়ন সিঙ্গাপুর ও বাংলাদেশের মানুষকে আরো কাছে আনবে, ব্যবসা বাণিজ্যের পথ সুগম করবে এবং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে।
তিনি বলেন, ‘সরকার আমাদের কোম্পানি ও বিনিয়োগকারীদের মধ্যে সহযোগিতার সুযোগ দিলে আমরা সম্মিলিতভাবে আরো বেশি কিছু করতে পারি।’ বাংলাদেশ ও সিঙ্গাপুরের মধ্যে নিবিড় বন্ধুত্ব ও বিকাশমান অংশীদারিত্ব সামনের দিনগুলোতে আরো জোরদার হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের পর আসিয়ানভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে সিঙ্গাপুরের প্রথম আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদানের কথা স্মরণ করে লী সিয়েন বলেন, তখন থেকেই দুই দেশের নেতা, জনগণ ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে ক্রমশঃ সম্পর্ক বৃদ্ধি পেতে থাকে। তিনি ২০০৫ সালে জাকার্তায় অনুষ্ঠিত এশিয়ান-আফ্রিকান সামিটে পার্শ্ববৈঠকে শেখ হাসিনার সঙ্গে তার বৈঠকের কথাও স্মরণ করেন।
সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী বলেন, শক্তিশালী সাংস্কৃতিক বন্ধনের কারণে আমাদের দীর্ঘকালের বন্ধুত্ব আরো বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিনি বলেন, ‘রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৯২০ সালে সিঙ্গাপুর সফর করেন এবং ১৯২৯ সালে প্রকাশিত ‘যাত্রী’ গ্রন্থে তার প্রতিফলন ও ভ্রমণকাহিনী ফুটে উঠে।’
এ প্রসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেন, তার সংসদীয় এলাকা ইয়ো চু কং রোডে প্রখ্যাত বাঙালি কবির সম্মানে ‘টেগোর এভিনিউ’ নামকরণ করা হয়েছে। সিঙ্গাপুর ও বাংলাদেশের নতুন প্রজন্ম রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কর্ম, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে ধারণ করা অব্যাহত রেখেছে।
‘আমরা আজ দুই দেশের জনগণের মধ্যে সাহিত্য বিনিময় করতে দেখি’ উল্লেখ করে লী সিয়েন বলেন, ২০১৫ সালে সিঙ্গাপুরের ‘ইনস্টিটিউট অব সাউথ এশিয়ান স্টাডিজ বাংলার কন্ঠ-এর সঙ্গে যৌথভাবে ছয়টি কবিতা সমন্বয়ে ‘এন ইভেনিং অব মাইগ্রেন্ট পয়েট্রি অ্যান্ড মিউজিক-পয়েমস অব মাইগ্রেশন : জয়স অ্যান্ড সরোস’ শীর্ষক গ্রন্থ প্রকাশ করে।
লী সিয়েন বলেন, এর মধ্যে জাকির হোসেন খোকন নামে এক বাংলাদেশীর ‘পোয়েটিক বায়োগ্রাফি’ রয়েছে, যিনি ২০০৩ সাল থেকে নির্মাণ তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে সিঙ্গাপুরে কাজ করছেন। খোকন বাংলার কণ্ঠ’র একজন ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক এবং তিনি সিঙ্গাপুরে তার অভিজ্ঞতা নিয়ে লিখে চলেছেন।
লী সিয়েন মনে করেন, ‘জনগণের সঙ্গে জনগণের সংযোগ স্থাপন আমাদের বহুমুখী সম্পর্ককে জোরদার করতে পারে।’
RED TIMES LIMITED
116-117, Concord Emporium,
Kataban, Dhaka-1205.
Mobile: 017111-66826
Email: redtimesnews@gmail.com