ঢাকা ১৫ই সেপ্টেম্বর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৩১শে ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ই রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরি


বাংলাদেশ ব্যাংকের টাকা ফিলিপাইনের জুয়ার বাজারে!

abdul
প্রকাশিত মার্চ ১০, ২০১৬, ০৮:২৭ পূর্বাহ্ণ
বাংলাদেশ ব্যাংকের টাকা ফিলিপাইনের জুয়ার বাজারে!

এসবিএন ডেস্কঃ নিউইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভ সিস্টেমে বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট থেকে দশ কোটি ডলার লোপাট হওয়ার বিষয়টি নিয়ে ফিলিপাইনের কয়েকটি পত্রিকায় প্রতিদিনই খবর বের হচ্ছে। কিভাবে নিউইয়র্ক ফেডারেল রিজার্ভ থেকে এই অর্থ ফিলিপাইনের ব্যাংকিং সিস্টেমে ঢুকলো, সেখান থেকে কিভাবে নানা হাত বদল হয়ে সেটা বিভিন্ন জায়গায় চলে গেলো, তার বিস্তারিত বিবরণ রয়েছে এসব রিপোর্টে।

এ নিয়ে সবচেয়ে বিস্তারিত অনুসন্ধানী রিপোর্টটি বেরিয়েছে ফিলিপাইন ডেইলি ইনকোয়ারার পত্রিকায়। তাদের রিপোর্টে বলা হচ্ছে, ফিলিপাইনের ব্যাংকিং ইতিহাসে এত বড় মানি লন্ডারিং এর ঘটনা এটাই প্রথম। দেশটির স্থানীয় একটি ব্যাংক রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং সিস্টেম এই অর্থ লেনদেনের ঘটনায় জড়িত বলে অভিযোগ করা হচ্ছে। রিপোর্টে বলা হচ্ছে, গত মাসের ৫ তারিখে প্রথম ৮১ মিলিয়ন ডলার ট্রান্সফার করা হয়।

নিউইয়র্ক ফেডারেল রিজার্ভ থেকে প্রথম অর্থ যায় যুক্তরাষ্ট্রের তিনটি ব্যাংকে। এই ব্যাংকগুলো হচ্ছে – ব্যাংক অব নিউইয়র্ক, সিটি ব্যাংক এবং ওয়েলস ফার্গো ব্যাংকে।
তারা এই অর্থ পাঠায় ফিলিপাইনের রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকে।

ফিলিপাইনের মাকাটি শহরের যে শাখায় এই বিপুল পরিমাণ অর্থ আসে, সেই শাখার প্রধান কর্মকর্তা বিষয়টি ব্যাংকের উর্ধ্বতন ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের নজরে আনেন।
এই লেনদেনের প্রত্যেকটি ধাপ সম্পর্কে এই ব্যাংকের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ আগাগোড়াই জানতেন বলে অভিযোগ উঠেছে।কিন্তু এই ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা লোরেনযো ট্যান, এই অভিযোগ অস্বীকার করছেন।

ব্যাংকের তরফ থেকে দেয়া এক বিবৃতি প্রকাশিত হয়েছে ফিলিপাইনের পত্র পত্রিকায়। তাতে ব্যাংকটি এই অর্থ পাচারের ঘটনার তদন্তে পূর্ণ সহযোগিতার আশ্বাস দিচ্ছে।
পুরো ঘটনাটি এখন তদন্ত করে দেখছে ফিলিপাইনের সেনেট, ন্যাশনাল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন এবং ফিলিপাইনের ‘এমিউজমেন্ট এন্ড গেমিং কর্পোরেশন’ যারা সেখানকার জুয়ার ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করে।

ফিলিপাইনের বিভিন্ন ব্যাংক থেকে এই অর্থ কোথায় গেছে?
এই চুরি যাওয়া অর্থ কিভাবে হাত বদল হয়েছে, তার একটা মোটামুটি চিত্র দিয়েছে ফিলিপাইনের ডেইলি ইনকোয়ারার পত্রিকা। তাদের রিপোর্টে বলা হচ্ছে, রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংক থেকে এই অর্থ তাদের ক্লায়েন্টদের মাধ্যমে চলে যায় স্থানীয় এক ফরেন এক্সচেঞ্জ ব্যবসায়ীর কাছে।৮১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার স্থানীয় মূদ্রায় বিনিময়ের পর এই পরিমাণ দাঁড়ায় ৩৭০ কোটি পেসোতে।এরপর এই অর্থ চলে যায় তিনটি বড় ক্যাসিনোতে। এগুলো হচ্ছে সোলারি রিসোর্ট এন্ড ক্যাসিনো, সিটি অব ড্রিমস এবং মাইডাস।পুরো অর্থ খরচ করে সেখানে জুয়া খেলার জন্য চিপস কেনা হয়েছে। এরপর জুয়া খেলে এই চিপস আবার ফিলিপিনো মূদ্রায় কনভার্ট করা হয়েছে।

এরপর সেই অর্থ পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে হংকং এর বিভিন্ন একাউন্টে। এই ঘটনা এত দেরিতে জানা গেল কেন সেটি এক বিরাট রহস্য।এত বিরাট একটা কেলেংকারি, এত বিশাল অংকের অর্থ চুরি হলো বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে, অথচ তা জানা গেছে মাত্র গত ক’দিন আগে এবং তাও ফিলিপাইনের বিভিন্ন পত্রিকায় এ নিয়ে খবর প্রকাশের পর।

ফিলিপাইনের পত্র পত্রিকা বলছে, অর্থ চুরি হবার পরপরই বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বিষয়টি সম্পর্কে অবহিত হয়েছেন।ফিলিপাইনের পত্রিকার তথ্যে জানা যাচ্ছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের দুই কর্মকর্তা ইতোমধ্যে ফিলিপাইনে গিয়ে সেখানকার সেন্ট্রাল ব্যাংকের সঙ্গে কথা বলেছেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা পাচার হওয়া অর্থ ফেরত দেয়ার দাবি জানিয়েছেন। এসবই কিন্তু ঘটেছে পুরো বিষয়টি বাংলাদেশের গণমাধ্যমের নজরে আসার আগে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

September 2024
S M T W T F S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
2930