২৬শে ফেব্রুয়ারি ২০২১ ইং | ১৩ই ফাল্গুন ১৪২৭ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১১:৫১ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১১, ২০১৯
প্রিন্স গোমেজ
বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় (বাউবি) অসংখ্য শিক্ষার্থী পড়েছে দুর্দশায়। পাস করলেও অনুপস্থিত ও ফেল দেখিয়ে শিক্ষার্থীদের শিক্ষাঙ্গন ছাড়তে বাধ্য করছেন কতৃপক্ষ। তাদেরকে বারবার নিক্ষিপ্ত করছেন দুর্ভোগে। প্রতিকারের কোনো বালাই নেই। তবে শত বাঁধার মাঝেও থমকে যায়নি এ শিক্ষার্থীরা। দাবি আদায়ে তারা দুর্বার আন্দোলনে নেমেছে। চোখে মুখে যেন তাদের ফুটে উঠেছে প্রতিবাদের ভাষা। ব্যানার-প্লে কার্ড হাতে অসংখ্য শিক্ষার্থীর স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত হয়েছে নগরীর সিআরবি সড়ক।
সরেজমিনে দেখাযায়, শিক্ষার্থীরা নগরীর সিআরবি সড়কে বিক্ষোভ সমাবেশ করে গিয়ে চট্টগ্রাম আঞ্চলিক কেন্দ্রের প্রধান ফটকের সামনে অনশন কর্মসূচি পালন করেন। শিক্ষার্থীরা জানান, তারা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার পর চট্টগ্রামের প্রায় ৩৬৬ জন শিক্ষার্থীর ফলাফল এসেছে অনুপস্থিত, ১১ বিষয়ের জায়গায় ১৪ বিষয় পরীক্ষা দেওয়া দেখানো, ২০১৫ সালের স্থলে ২০১৪ সালের রেজাল্ট দেখানোসহ নানা সমস্যা দেখানো হয়েছে ৬ মাস পূর্বে। সেই সকল শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৩ টি শীটের প্রায় ৩৬৬ জনের মধ্যে ১২২ জনের ১ টি শিটের শিক্ষার্থীরা অভিযোগ পাঠিয়েছেন। অভিযোগের উত্তর আসতে বিলম্ব হওয়ার কারণে চট্টগ্রাম থেকে খবরও নিতে গিয়েছেন গাজীপুরে প্রধান কার্যালয়ে। তখন যুগ্ম পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক এ. এস. এম নোমান আলম শিক্ষার্থীকে বলেন, ‘চট্টগ্রামে যাও রেজাল্ট পাঠাব।’ সেই অভিযোগের উত্তর রেজাল্টগুলো পাঠিয়েছেন গত মাসে অপরিবর্তিত। সেজন্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক কেন্দ্রের পরিচালকও তাদের বলে দিয়েছেন কিছুই করার নেই। পূর্বে এরকম সমস্যার কারণে একই পরীক্ষা প্রতিবছর দিতেই থাকতেন শিক্ষার্থীরা, এভাবে পরীক্ষা দেওয়ার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পর পাস না করেই শিক্ষাঙ্গন ছাড়তে বাধ্য হন অসংখ্যা শিক্ষার্থী। বাউবির যুগ্ম পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক এ. এস. এম নোমান আলম ও সহকারী পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক নাজনীন নেগার এই দুইজনই শিক্ষার্থীদের এইসব সমস্যা সমাধানের দায়িত্বে আছেন বলে তারা জানান। এ দু’জনই শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগে নিক্ষিপ্ত করছেন, করছেন ক্ষতিগ্রস্ত। সেজন্য, তাদের বহিস্কারের দাবিতে ও শিক্ষার্থীদের সমস্ত সমস্যার স্থায়ী সমাধানের দাবিতে তারা অনশন কর্মসূচি পালন করেন। শিক্ষার্থীরা বলেন, তাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত অনশন কর্মসূচী পালিত হবে। এখই পরীক্ষা বারবার দিতে থাকলে পরীক্ষার ফি পেয়ে লাভবান হয় ও সমস্যা সৃষ্টি হলেই শিক্ষার্থীরা গাজীপুরে যায় তখন অর্থ আদায়ের মাধ্যমে দুর্নীতি করার সুযোগ হয় বাউবির কিছু কর্মকর্তার। সেজন্যই, ফলাফল এসেছে অনুপস্থিতসহ নানা সমস্যা। বাউবিতে পাসের সনদপত্র ৪ বছর পর প্রকাশ হওয়ার মতো ঘটনাও ঘটেছে। সনদপত্র নাম সংশোধনের মতো সাধারণ একটি কাজও ছয় মাসে হয়নি, এমন নজিরও রয়েছে।
উল্লেখ্য, শিক্ষার্থীরা ২৮ এপ্রিল নগরী ডিসিহিল, চেরাগী পাহাড় মোড়সহ কয়েকটি সড়কে বিক্ষোভ সমাবেশ করে গিয়ে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচীতে ১৫ দিনের মধ্যে তাদের সমস্যা সমাধানের আল্টিমেটামও দিয়েছেন। এ কয়েক দিনের মধ্যে তাদের সনদপত্র না পেলে তারা এবছর আর এইচএসসিতে ভর্তি হতে পারবে না। কারণ আর ১৫ দিনের মধ্যে এইচএসসিতে ভর্তি হওয়ার তারিখ শেষ হয়ে যাবে।
দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত অনশন পালনের কথা থাকলেও সকাল ১০ টা থেকে বিকাল ৪ টা পর্যন্ত অনশন পালন করার পর অনাহারে ও তীব্র তাপদাহে এক শিক্ষার্থী অচেতন হয়ে পড়লে কবি তসলিম খাঁ শিক্ষার্থীদের পানি পান করিয়ে অনশন ভঙ্গ করেন। প্যানেল মেয়র চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনী শিক্ষার্থীদের দুরাবস্থায় পাশে থাকবেন বলে আশ্বাস দেন। এদিকে আগামী পনেরোই ফেব্রুয়ারি সুরু হতে যাচ্ছে বাউবি এস এস সি পরিক্ষা। কিন্তু এত কিছুর পরে শেষ হয়নি শিক্ষার্থীদের দুর্দশার আর ভোগান্তি। চট্টগ্রাম বলুয়ার দিঘি সিটি কপোররেশন বাউবি শাখার এক শিক্ষার্থী জানান যে তার এস এস সি পরিক্ষার কোড নাম্নার ভুল রেজিস্ট্রেশন করেছেন অত্র ইস্কুলের বাউবি বিভাগের প্রধান শিক্ষক জনাব মাকসুদুল ইসলাম। বার বার তাকে অনুরোধ করা হলে তিনি কোন গুরুত্ব দেননি বিষয়টি। জানা যায় গত বছর ভুল কোড নাম্বার দেয়ার পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষার্থী পরিক্ষা দিলে ও তাকে অনুপস্থিত হিসেবে ধরা হয়। এ নিয়ে প্রধান শিক্ষক এর নিকট গেলে তিনি কথা দেন যে ফাইনাল পরিক্ষার আগে তিনি বিষয়টি ঠিক করে দিবেন। বিগত একটি বছর যাবৎ বিভিন্ন অজুহাত এ শিক্ষার্থীকে আজ করবো কাল কোরবো বলে হয়রানি শিকার করেছেন। অনেক শিক্ষার্থী আছেন তাদের এ এধরনের সমস্যা থেকে সমাধান পাবেন কিনা তা আজ ও জানেন না ।
Corporate Office:
6/A Eskatan Garden
Dhaka, Bangladesh.
Mobile: 017111-66826
Email: mansoumit@yahoo.com
Helpline - +88 01719305766